প্রকাশ : ১৬ নভেম্বর ২০২১, ০০:০০
ছোট মসজিদের বড় কাজ
করোনাকালে লকডাউনহেতু সরকারি নিয়ম কানুনের প্রশ্নে অনেক মসজিদে মুসুল্লি সঙ্কট সৃষ্টি হয়। যার ফলে তহবিল সঙ্কট হওয়াটা স্বাভাবিক। কেননা মসজিদ কমিটির সদস্যদের দান-অনুদানের চেয়ে মুসুল্লিদের দান-অনুদানে চলে এই মসজিদগুলোর অধিকাংশই। দোকানপাটসহ অন্যান্য আয় বর্ধক কার্যক্রম হাতে গোণা স্বল্প সংখ্যক মসজিদেরই আছে। বিশেষ করে ওয়াক্ফ এস্টেটের আওতাধীন মসজিদগুলো মোটা অঙ্কের তহবিলে থাকে সমৃদ্ধ। এমন মসজিদের খতিব, ইমাম, মুয়াজ্জিনদের কারো বেতন-ভাতা করোনা কেনো, অন্য কোনো দুর্যোগ-দুর্বিপাকেও বকেয়া থাকে না। মসজিদের মধ্যে যেগুলো নিতান্তই দান-অনুদানের ওপর নির্ভরশীল, সেগুলো নিত্য তহবিল সঙ্কটে ভোগে। আর যেগুলো দান-অনুদানের পাশাপাশি ছোট-বড় আয় বর্ধক কার্যক্রমের ওপর নির্ভরশীল, সেগুলো কম-বেশি ভালো চলে। তাই বলে গরিব-অসহায় কিংবা করোনায় কর্মহীন ও দুর্দশাগ্রস্ত মানুষকে অর্থ ও খাদ্য সহায়তা প্রদান কিংবা সমাজের প্রয়োজনে উল্লেখযোগ্য কোনো কাজ করে না। মসজিদ সম্প্রসারণ তথা অবকাঠামোগত উন্নয়নই যেনো সংশ্লিষ্ট কমিটির কাছে মুখ্য মনে হয়, অন্য আর কিছু নয়।
|আরো খবর
এমন বাস্তবতায় চাঁদপুর শহরের মিশন রোডের উত্তর পাশে ছৈয়াল বাড়ি লেনে গড়ে ওঠা একটি মসজিদ ব্যতিক্রম কার্যক্রম উপস্থাপন করে চলছে। মসজিদটির নাম আলী রাজা জামে মসজিদ। এ মসজিদটি করোনাকালে মুসুল্লি সঙ্কটে ভুগলেও তহবিল সঙ্কটে ভোগে নি। এ মসজিদটি কেবল দান-অনুদানের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে আয় বর্ধক কার্যক্রমের মাধ্যমে নিজেদের তহবিলকে করেছে সন্তোষজনক। এছাড়া ইসলাম সম্মত অন্য কিছু গ্রহণযোগ্য উপায়েও মসজিদ কমিটি নিজেদের তহবিল সমৃদ্ধ করে মসজিদের ব্যানারে করে চলছে সময়োপযোগী কাজ। এর মধ্যে করোনাকালে গরিব-অসহায় মানুষের মাঝে খাদ্য সহায়তা প্রদান ছিলো উল্লেখযোগ্য।
অতি সম্প্রতি আলী রাজা মসজিদের পক্ষ থেকে বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহে ওয়া সাল্লামের জন্ম ও ওফাতের স্মৃতিধন্য মাস রবিউল আউয়াল উপলক্ষে ‘ক’ ও ‘খ’ গ্রুপে হামদ ও নাত প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এ প্রতিযোগিতার পুরস্কার ছিলো চোখে পড়ার মতো। প্রতি গ্রুপের প্রথম স্থান অর্জনকারীকে নগদ ২ হাজার টাকা, দ্বিতীয় স্থান অর্জনকারীকে দেড় হাজার টাকা, তৃতীয় স্থান অর্জনকারীকে এক হাজার টাকা ও সান্ত্বনা পুরস্কারপ্রাপ্তকে পাঁচশ টাকা ছাড়াও আকর্ষণীয় ক্রেস্ট ও বই প্রদান করা হয়।
আলী রাজা মসজিদকে বড় একটি মসজিদ বলার সুযোগ নেই। তবে কাজে বড় একটি ছোট মসজিদ বললে অত্যুক্তি হয় না। মসজিদের মুসুল্লিদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি কিংবা রক্ষার পাশাপাশি পরিচালনাগত দক্ষতায় সমাজের স্বার্থে এ মসজিদ কমিটি একের পর এক যে দৃষ্টান্তযোগ্য কাজগুলো করে চলছে, সেগুলো সন্তোষজনক এবং প্রশংসা পাওয়ার দাবিদার। আমরা অন্যান্য মসজিদ কমিটিকে এ মসজিদ কমিটি থেকে অভিজ্ঞতা নিয়ে ব্যতিক্রম কাজ করার অনুরোধ জানালে দোষের কিছু হবে বলে মনে করি না।