প্রকাশ : ১৪ নভেম্বর ২০২১, ০০:০০
চাঁদপুর পৌর কর্তৃপক্ষ চাঁদপুর শহরের প্রধান প্রধান রাস্তা প্রশস্তকরণে নিরাপোষ ভূমিকা নিয়ে সফল হয়েছে। এতে রাস্তা চওড়া হওয়ায় যানবাহনগুলো স্বচ্ছন্দ গতিতে চলার পরিবেশ তৈরি হয়েছে। আর ফুটপাত তৈরি করে দেয়ায় পথচারীরা হাঁটার সুযোগ পেয়েছে। বিশেষ করে সাবেক কুমিল্লা রোড (বর্তমান মিজান চৌধুরী সড়ক), শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সড়ক, স্টেডিয়াম রোডে এবং কবি নজরুল সড়ক ও আঃ করিম পাটোয়ারী সড়কের কিয়দংশে পথচারীরা এই ফুটপাতের ব্যবহার করতে পারছে। কিন্তু কিছু লোভী ব্যবসায়ী তার দোকানের সামনের ফুটপাতে এবং রাস্তায় ভ্রাম্যমাণ দোকান বা হকার বসিয়ে বাড়তি রোজগার করছে দৈনিক/মাসিক ভাড়া আদায় করে। ভাবখানা এমন, দোকানের সামনের ফুটপাতে এবং রাস্তায় পথচারী ও যান চলাচলের অধিকারের চেয়ে দোকানির অধিকারটাই যেনো অনেক বেশি। সেজন্যে পৌর কর্তৃপক্ষ, পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেট রাস্তায়-ফুটপাতে ভ্রাম্যমাণ দোকান/হকার উচ্ছেদে যতোই অভিযাণ চালায়, তাতে সাময়িক ফল আসে, টেকসই কিছু হয় না। অভিযান চালানোর কিছু সময় পর পূর্বের অবস্থা যা ছিলো, তা-ই হয়ে যায়। দোকানির আশ্রয়ে-প্রশ্রয়ে আবার বসে হকার, চলে ভ্রাম্যমাণ দোকান। এমতাবস্থায় প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক, রাস্তায় আসলে কার অধিকার বেশি। এ প্রশ্নের উত্তর খোঁজা যেনো সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে।
মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) চাঁদপুর কণ্ঠের প্রথম পৃষ্ঠায় সচিত্র একটি সংবাদ গুরুত্ব সহকারে ছাপা হয়েছে। এর শিরোনাম হয়েছে ‘বাবুরহাট বাজারের রাস্তায় মালিক কয়জন? ১শ’ ফুট রাস্তা ভাড়া দিয়ে ৩ জনে আদায় করে ৩৭ হাজার টাকা’। এ সংবাদ পড়ে পাঠকমাত্রই উপলব্ধি করতে কষ্ট হয় না যে, চাঁদপুর শহরের ১৪নং ওয়ার্ডস্থ’ প্রসিদ্ধ বাবুরহাট বাজারের অভ্যন্তরীণ রাস্তায় দোকানিদের অধিকার শুধু নেই, মালিকানা(!)ও আছে। এ সংবাদে বাবুরহাট বাজারের রাস্তাগুলোর দুপাশে দোকান বসিয়ে রাস্তা সরু করে পথচারী ও যান চলাচলের অসুবিধা ঘটানোর চিত্রই শুধু তুলে ধরা হয় নি, মাত্র একশ’ ফুট রাস্তা ভাড়া দিয়ে কীভাবে তিন ব্যবসায়ী মাসিক ৩৭ হাজার টাকা আয় করে, তার তথ্যও তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়া পৌর কাউন্সিলরের নির্দেশনা অমান্য করা তথা কর্ণপাত না করার বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে।
বাবুরহাট বাজারের নির্বাচিত কমিটি নিষ্ক্রিয় হওয়ায় যে রাস্তা ভাড়া দিয়ে ব্যবসায়ীরা বাড়তি আয় করছে তাতে সন্দেহের অবকাশ নেই। এমতাবস্থায় পৌর কর্তৃপক্ষ এ বাজারের রাস্তায় উচ্ছেদ অভিযান চালানো জরুরি হয়ে পড়েছে। অন্যথায় এ রাস্তায় পার্শ্ববর্তী দোকানির অধিকার সুপ্রতিষ্ঠিত হয়ে বাজে দৃষ্টান্ত সৃষ্টি হবে। আমরা মনে করি, বাবুরহাট বাজারের অভ্যন্তরীণ রাস্তাসহ অন্যান্য রাস্তায় উচ্ছেদ অভিযানের পাশাপাশি অবৈধ স্থাপনায় আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতা দোকানিদেরকেও জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। এমনটি করলে উচ্ছেদ টেকসই হতে পারে বলে অভিজ্ঞজনদের অভিমত।