মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার
  •   দৈনিক ইনকিলাবের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শহীদুল্লাহ্ মিজির দাফন সম্পন্ন
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা

প্রকাশ : ০৫ নভেম্বর ২০২১, ০০:০০

অভিযোগকারীকে অসাধারণ প্রণোদনা!

অভিযোগকারীকে অসাধারণ প্রণোদনা!
অনলাইন ডেস্ক

দেশের একজন বিজ্ঞ, প্রবীণ ও অভিজ্ঞ আইনজীবী কষ্টকর উপমা তুলে ধরে মোয়াক্কেলকে আড়ালে আবডালে বলেন, মামলা প্রমাণে অভিযোগকারী/বাদীর যে বিড়ম্বনা, সীমাহীন যাতনা, তাতে ভালো সালিস পেলে আপস করে ফেলাই উত্তম। তিনি তাঁর গ্রামে সরকারি জমি নিয়ে বিরোধ সংক্রান্ত এক মামলার বাদীর নির্মম যে মৃত্যু দেখেছেন এবং অহরহ অন্যান্য মামলার বাদীর মানসিক যন্ত্রণাসহ যে কষ্ট প্রত্যক্ষ করছেন, বাদীকে প্রভাবশালী প্রতিপক্ষের আইনজীবী দ্বারা আদালতে জেরার মুখে তুলোধুনো করার যে প্রয়াস লক্ষ্য করেন প্রতিদিন, তাতে তিনি কোনো কোনো বাদীকে অকপটে মাঝে মাঝে বলে ফেলেন, সব ধকল সামলাতে না পারলে বাদী না হওয়াই ভালো।

চাঁদপুর কণ্ঠ সহ এমন কোনো গণমাধ্যম খুঁজে পাওয়া যাবে না, যেখানে প্রায়শই বিভিন্ন মামলার বাদীর ওপর হামলা, প্রাণনাশের হুমকি, প্রতিপক্ষের ভয়ে নিজ বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে থাকা, প্রতিপক্ষ কর্তৃক মেরে ফেলার চেষ্টা, বাদীর সন্তান/স্ত্রী বা অন্য কোনো নিকটজনকে অপহরণসহ নিরাপত্তাহীনতা সংক্রান্ত সংবাদ ছাপা না হয়। কোনো কোনো মামলার বাদী প্রায়শই তার মামলার তদন্তে শ্লথগতি, তদন্তকারী কর্মকর্তা ও কর্তৃপক্ষের প্রতি অনাস্থা সহ তার নিরাপত্তাজনিত নানা শঙ্কা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন বা প্রেস ব্রিফিং করে থাকেন। কোনো কোনো বাদী তার মামলার তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর নারাজি দিয়ে আদালতে পুনঃতদন্তের আরজি পেশ করেন।

বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতায় যে বাদীর কতো বিড়ম্বনা, কষ্ট, নিরাপত্তাহীনতাসহ অন্যান্য সমস্যা হচ্ছে, সেটা অস্বীকার করার জো নেই। বিলম্বিত বিচারে ন্যায়বিচার যে হয় না, সেটা নিয়ে তো প্রবাদই আছে-‘জাস্টিস ডিলেইড জাস্টিস ডিনাইড’।

বাদী/অভিযোগকারীর কষ্টের বিষয়টি বিবেচনা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত, দ্রুত বিচার আইন ইত্যাদি করা হয়েছে কি হয়নি, সেটা নিয়ে আমাদের কোনো অভিমত নেই। তবে একটি সংবাদের ওপর আমরাসহ আরো অনেকের সন্তুষ্টি প্রকাশের উপলক্ষ আছে।

চাঁদপুর কণ্ঠের প্রথম পৃষ্ঠায় প্রকাশিত এ সংবাদটির শিরোনাম হয়েছে ‘নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে দাম বেশি রাখার অভিযোগকারী পেলো জরিমানার ২৫ শতাংশ’। এ সংবাদের সার সংক্ষেপ হচ্ছে : একটি হোটেলে ‘স্প্রাইট’ নামক কোমল পানীয়ের এক বোতলের নির্ধারিত মূল্য ১৫ টাকার পরিবর্তে ২০ টাকা আদায় করা হয় এক ভোক্তার নিকট থেকে। সচেতন এই ভোক্তা সংক্ষুব্ধ হয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট প্রমাণসাপেক্ষ অভিযোগ দায়ের করেন। আর যায় কোথায়? ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ মোতাবেক হোটেল মালিককে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। আদায়কৃত জরিমানার পঁচিশ শতাংশ হিসেবে ১২৫০ টাকা অভিযোগকারীকে তাৎক্ষণিক প্রদান করা হয়। আর এ টাকাটা অভিযোগকারীর হাতে তুলে দেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ।

আদায়কৃত জরিমানার নির্দিষ্ট অংশ তাৎক্ষণিক কোনো অভিযোগকারীকে প্রদান করা যে অসাধারণ প্রণোদনা-এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। এজন্যে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ প্রণয়নের জন্যে সরকারকে, এটির সুষ্ঠু প্রয়োগে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে, চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশকে এবং চাঁদপুরে কর্মরত উক্ত অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক নূর হোসেনকে সর্বস্তরের ভোক্তাদের পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাতে চাই। অভিযোগকারীর প্রতি এমন প্রণোদনা প্রদর্শনের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকুক-আমরা সে প্রত্যাশা ব্যক্ত করছি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়