মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার
  •   দৈনিক ইনকিলাবের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শহীদুল্লাহ্ মিজির দাফন সম্পন্ন
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা

প্রকাশ : ২৩ অক্টোবর ২০২১, ০০:০০

মাদকসেবীদের দৌরাত্ম্য
অনলাইন ডেস্ক

যেটি সুস্থ মস্তিষ্কে উন্মাদনা সৃষ্টি করে, সেটিই মাদক। এ মাদক যারা সেবন করে তারা উন্মাদের ন্যায় আচরণ করে। হিতাহিত জ্ঞান তাদের থাকে না অর্থাৎ ভালো বা মন্দ তারা বোঝে না। ঝোঁকের মাথায় যা ইচ্ছে তা-ই করে। মাদকের টাকা জোগাড়ে মাদকসেবীরা তাদের পিতা/মাতার সাথে হেন কোনো আচরণ নেই যেটা করে না। মারধর তো করেই, এমনকি খুনও করে। স্ত্রীও এমন আচরণের শিকার হয় মাদকসেবী স্বামী দ্বারা। মাদকসেবীরা ছোট-বড় চুরি, ছিনতাইও করে। কিন্তু কোথাও আগুন লাগিয়ে দেয়ার ঘটনা সাধারণত করে না। এমন অসাধারণ ঘটনাই তারা ঘটালো গত ২১ অক্টেবর বৃহস্পতিবার চাঁদপুর শহরের নিশি বিল্ডিং এলাকায়।

গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, নিশি বিল্ডিং এলাকার কসাইখানা সংলগ্ন খান বাড়িতে স্থানীয় মাদকসেবী চক্রের প্রধান রনি মিয়া (২০)-এর নেতৃত্বে বেশ ক’জন মাদক বিক্রেতা ও সেবনকারী বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সহিদ খানের পরিত্যক্ত বসতঘরে মাদক সেবন করতে চাইলে তাতে বাধা দেয়া হয়। এ বাধা তরা মানেনি। জোরপূর্বক মাদক সেবন শেষ করে আসার সময় রান্না ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। মুহূর্তেই আগুনের লেলিহান শিখায় রান্নাঘর ও বসতঘর ভস্মীভূত হয়ে যায়। এক পর্যায়ে এলাকাবাসী চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। ঘটনার পরপরই এলাকাবাসী ঘটনার মূল নায়ক রনি মিয়াকে আটক করলে সে অগ্নিসংযোগের দায় স্বীকার করে। তারপরও মুচলেকায় রনিকে ছাড়িয়ে নেয়ার জন্যে তার পরিবার মুচলেকা দেয়।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, দীর্ঘদিন যাবৎ উক্ত এলাকার কিশোর বয়সের একটি গ্রুপ মাদক বিক্রি ও সেবন করাই শুধু নয়, এলাকায় বিভিন্ন অপকর্ম করে আসছে। সচেতন এলাকাবাসী এ বিষয়ে প্রতিবাদ করলে এই গ্রুপের রোষানলে পড়ে হয়রানির শিকার হতে হয়।

নিশি বিল্ডিং এলাকায় মাদকসেবনকারীদের দ্বারা বসতঘর ও রান্না ঘরে আগুন লাগানোর মতো দৌরাত্ম্য প্রদর্শিত হলেও আগুন নেভাতে এলাকার কেউ ফায়ার ব্রিগেডকে খবর দেয়নি এবং ঘটনার মূল নায়ক রনিকে পুলিশের হাতে তুলে না দিয়ে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা তথাকথিত সমঝোতা ও মুচলেকার পথে গিয়েছে। সেখানে এলাকার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে পৌর কাউন্সিলরকেও দেখা যায় নি। কথা হলো, এলাকাবাসী মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবীকে রক্ষায় এতোটা দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে গেলো কেনো?

নিশি বিল্ডিং এলাকা চাঁদপুর শহরের অন্যতম অপরাধপ্রবণ এলাকা। এখানকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রম শুরু করা হয়েছিলো। এলাকাবাসীর মধ্যে মাদকসেবী ও বিক্রেতাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতা এবং বিভিন্ন অপকর্মের হোতাদের দৌরাত্ম্যে ভীত সন্ত্রস্তদের অসহযোগিতার কারণে এই কার্যক্রম বহাল রাখা যায়নি। পুলিশের কাছ থেকেও এ ব্যাপারে ধারাবাহিক সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। অগত্যা কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মহল্লা কমিটির সাথে সংশ্লিষ্টরা রণে ভঙ্গ দেয়।

নিশি বিল্ডিং চাঁদপুর শহরের উত্তর কোড়ালিয়া, লঞ্চঘাট ও জামতলা সংলগ্ন একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। এটি পৌরসভার ৭ ও ৮নং ওয়ার্ডের সীমানা এলাকায় অবস্থিত। এটিকে চাঁদপুর শহরের প্রত্যন্ত এলাকা বলার বিন্দুমাত্র সুযোগ নেই। কারণ, কোড়ালিয়া রোড ও লঞ্চঘাট অভিমুখী সড়ক দিয়ে এখানে খুব সহজে পৌঁছা যায়। অথচ এই এলাকার মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারীরা পুলিশ এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ধরাছোঁয়ার বাইরে। এমতাবস্থায় এরা ঘরে আগুন লাগানোর দৌরাত্ম্য প্রদর্শন কেনো, এর চেয়েও বড় অপরাধ করতে দ্বিধান্বি^ত হবে বলে মনে করি না।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়