মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৫ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার
  •   দৈনিক ইনকিলাবের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শহীদুল্লাহ্ মিজির দাফন সম্পন্ন
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা

প্রকাশ : ১২ অক্টোবর ২০২১, ০০:০০

কাচারি ঘর সরাতে এ কী কাণ্ড!

কাচারি ঘর সরাতে এ কী কাণ্ড!
অনলাইন ডেস্ক

কাচারি বা কাছারি শব্দের আভিধানিক অর্থ অফিস, কার্যালয়, বাইরের ঘর, বৈঠকখানা। এককালে কাচারি ঘর ছিলো একটি খান্দানি তথা বংশগৌরববিশিষ্ট, উচ্চবংশীয় কিংবা বংশমর্যাদাযুক্ত অভিজাত বাড়ির চিহ্ন। আগন্তুকদের কাচারি ঘর ডিঙ্গিয়ে এমন বাড়ির অন্দরমহলে প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিলো। জায়গিরে থাকা শিক্ষকের বসবাস ও পড়ানোর টেবিল, মেহমান বা আগন্তুকদের অবস্থান বা প্রতীক্ষার স্থান, নামাজ পড়ার জায়গা, আরবি বা ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহণের স্থানসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হতো এই কাচারি ঘর। আজকাল এই কাচারি ঘর বিলুপ্ত হতে বসেছে। কারণ, মানুষ এখন যন্ত্রের মতো হয়ে গেছে। তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে কিংবা সরাসরি যোগাযোগের প্রয়োজনে কোনো আগন্তুক বা মেহমান কোনো বাড়িতে ঢুকে সরাসরি ঘরের দরজার কড়া নাড়ে কিংবা কলিং বেল টিপে।

এমন বাস্তবতাতেও কোনো কোনো বাড়িতে এখনও জীর্ণদশা নিয়ে আভিজাত্যের স্মারক হিসেবে টিকে আছে কাচারি ঘর। কোনো বাড়ির পঞ্চাশ/ষাটোর্ধ্ব কিংবা তদূর্ধ্ব মানুষের কাছে এই কাচারি ঘর মানে অনেক স্মৃতির আধার, যেটি তাদেরকে করে নস্টালজিক। তাই তারা কাচারি ঘরকে টিকিয়ে রাখার সফল বা ব্যর্থ প্রয়াস দুটোই চালায়। গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠের শেষ পৃষ্ঠায় কাচারি ঘর রক্ষার একটি ব্যর্থ প্রয়াসের সংবাদ ছাপা হয়, যার শিরোনাম হয়েছে ‘৮০ বছরের কাচারি ঘর রাতের আঁধারে গায়েব!

এ সংবাদে উক্ত কাচারি ঘরটির অবস্থান উল্লেখ করা হয়েছে হাজীগঞ্জ উপজেলার ৫নং সদর ইউনিয়নের ভূঁইয়া বাড়ি। গত শনিবার (৯ অক্টোবর) দিবাগত রাতে এ কাচারি ঘরটি ওই বাড়ি থেকে গায়েব হওয়ার ঘটনাটি ঘটে। এ ঘরের কিছু অংশ পুকুরের পানিতে ডুবিয়ে দেয়া হয়েছে। বাকি অংশ ‘৯৯৯’ নাম্বারে ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসা হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ একটি পিকআপে ভর্তি অবস্থায় জব্দ করেছে। সম্পত্তিগত বিরোধ হেতু ভূঁইয়া বাড়ির একটি পক্ষ ভাড়া করা একদল সন্ত্রাসী দিয়ে গভীর রাতে কাচারি ঘর গায়েবের কা- ঘটায় বলে বাড়ির অধিকাংশ লোকজন জানিয়েছেন।

কাচারি ঘরের পক্ষে থাকা সাতবাড়িয়া ভূঁইয়া বাড়ির ষাটোর্ধ্ব দু প্রবীণ চাঁদপুর কণ্ঠকে বলেছেন, বাড়িতে পথসহ নানা সমস্যা রয়েছে, সমাধানও রয়েছে। তাই বলে গভীর রাতে সন্ত্রাসী বাহিনী এনে পুরো কাচারি ঘর গায়েব করে ফেলবে-এটাতো হতে পারে না। এ বিষয়ে আমরা আইনের মাধ্যমে সুষ্ঠু বিচার চাইবো।

হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হারুনুর রশিদ বলেছেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো অভিযোগ দিলে আমরা ব্যবস্থা নেবো। প্রশ্ন হলো, কাচারি ঘর গায়েবের জন্যে দায়ীদের বিরুদ্ধে বিচার চেয়ে কেউ অভিযোগ দেয় কিনা। অভিযোগ যদি না-ই দেয়, তাহলে কি পুলিশ বাদী হয়ে এমন সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কিছুই করতে পারবে না? আমাদের জানা মতে, রাতের আঁধারে কাচারি ঘর গায়েব সংক্রান্ত এমন ঘটনা স্মরণকালে চাঁদপুর জেলায় এটাই প্রথম। এ ঘটনার হোতাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিলে নিকট বা দূর ভবিষ্যতে কাচারি ঘর গায়েব, ভেঙ্গে ফেলা বা ধ্বংসের প্রবণতা বাড়বে, বৈ কমবে না।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়