শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬  |   ৩০ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   দিনমজুরকে জবাই করে হত্যা, ৪৪ দিন পর লাশ উত্তোলন
  •   অবশেষে চাঁসক সহকারী অধ্যাপক কামরুল হাছানকে বদলি
  •   নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে সড়কের ওপর ভবন নির্মাণের অভিযোগ
  •   বাবা মায়ের উপর ছেলেদের নৃশংসতা ।। বৃদ্ধ বাবার থানায় অভিযোগ
  •   ফিরে এলেন আগের খতিব, নামাজের আগে নাটকীয়তা বায়তুল মোকাররমে

প্রকাশ : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০

আরেকবার কালিমামুক্ত হতে যাচ্ছে চাঁসক

অনলাইন ডেস্ক
আরেকবার কালিমামুক্ত হতে যাচ্ছে চাঁসক

গত ক’দিন ধরে গণমাধ্যমের চেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম চাঁদপুর সরকারি কলেজ (চাঁসক)-এর একজন শিক্ষককে নিয়ে খুব সরব ছিলো। এই শিক্ষককে নিয়ে গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠে প্রকাশিত সংবাদের শিরোনাম হয়েছে 'অবশেষে চাঁসক সহকারী অধ্যাপক কামরুল হাছানকে বদলি'। সংবাদের গভীরে গিয়ে দেখা যায়, নিতান্তই বদলির জন্যে তাকে নিয়ে এ সংবাদটি পরিবেশন করা হয় নি। শালীনতা রক্ষা করতে গিয়ে প্রতিবেদক এমন শিরোনাম হয়তো দিয়েছেন।সংবাদটিতে সোহাঈদ খান জিয়া লিখেছেন, চাঁদপুর সরকারি কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল হাছানকে অবশেষে বদলি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক প্রেরিত প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানা যায়।

অভিযোগে প্রকাশ, অধ্যাপক কামরুল হাছান ছাত্রীদের সাথে খারাপ আচরণ করাসহ বিভিন্ন খারাপ কথা বলতেন। যৌন হয়রানি করাসহ ছাত্রীদের ছবি ভাইরাল করার হুমকি দিতেন। তিনি একজন নারীলোভী বলে কথিত আছে। তিনি ছাত্রীদের মোবাইল ফোনে খারাপ ধরনের ভিডিও পাঠাতেন। এ বিষয়গুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলে আসে। এ নিয়ে উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে গত ১৩ আগস্ট সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল হাছানকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বিভাগের সকল কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দিয়ে পত্র প্রেরণ করেন উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মোঃ ইকবাল হোসেন। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) ও মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) প্রফেসর এবিএম রেজাউল করীম স্বাক্ষরিত এক পত্রে তাকে চাঁদপুর সরকারি কলেজ থেকে ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ সরকারি কলেজে বদলি করা হয়। এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর ২৪ খ্রিঃ তারিখে সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল হাছান বর্তমান কর্মস্থল হতে অবমুক্ত হবেন। অন্যথায় ঐদিন অপরাহ্ন হতে তাৎক্ষণিকভাবে অবমুক্ত হিসেবে তিনি গণ্য হবেন। উল্লেখ্য, সহকারী অধ্যাপক কামরুল হাছানকে নিয়ে তাবাসসুম বিনতে সাইদ নামে এক ছাত্রী তার অপকর্মের বিভিন্ন কথা লিখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দেন। এটিতে আলোড়ন সৃষ্টি হলে অভিযুক্ত শিক্ষক চরমভাবে ধিকৃত হন। বিষয়টির ব্যাপক জানাজানিতে বিব্রত হয় কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষও। অবশেষে চাঁদপুরের ছেলে কামরুল হাছান কে বদলি করে উত্তরবঙ্গের দূরবর্তী জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে পাঠানোর ব্যবস্থা করে বিব্রতকর পরিস্থিতি সামাল দেয়া হয়েছে।

চাঁদপুর সরকারি কলেজে বেশ ক'বছর আগে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের এক জুনিয়র শিক্ষককে উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কামরুল হাছানের চেয়েও গুরুতর অভিযোগে উত্তরবঙ্গে বদলি করা হয়েছিল। যেটি গণমাধ্যমের বিশেষ উপজীব্য হয়ে যায়। ফলে ওই শিক্ষক ওইখানে যোগদান করতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন। সেজন্যে এমন বদলিকে শাস্তিমূলক বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে কতোটা শাস্তিমূলক সেটা বিবেচনাযোগ্য। আমাদের মতে, একজন শিক্ষকের মধ্যে চারিত্রিক ত্রুটি থাকলে তিনি শিক্ষকতা করার নৈতিক অধিকার ও সাহস হারান। তদন্ত সাপেক্ষে তাকে শিক্ষকতা থেকে সরিয়ে দাপ্তরিক কাজে নিয়োজিত করাই উত্তম। কিন্তু সেটি করা হয় না। কেবল দূরবর্তী স্থানে বদলিতেই সাধারণত সমাধান খোঁজা হয়। সহকারী অধ্যাপক কামরুল হাছানের বদলিতে চাঁদপুর সরকারি কলেজ আপাতত আরেকবার কালিমামুক্ত হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। আমাদের কথা হচ্ছে, অধ্যক্ষের প্রতি অতিভক্তি প্রদর্শনকারী ও বিশ্বস্ততা অর্জনকারী কিংবা শিক্ষক সংগঠনে নেতৃত্ব পেয়ে বা অন্য কোনো কারণে প্রভাবশালী হয়ে কোনো কোনো শিক্ষক (যেমন-কামরুল হাসান) নারী ও অর্থ বিষয়ক কেলেঙ্কারিতে জড়িত হয়ে থাকেন বলে লক্ষ্য করা যায়। কামরুল হাছানের মতো আর কেউ এমন আছেন কিনা বা ভবিষ্যতে জড়িত হন কিনা সেদিকে কলেজ কর্তৃপক্ষকে তীক্ষ নজরদারি ও পর্যবেক্ষণ রাখার জন্যে আমরা জোর অনুরোধ জানাচ্ছি ।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়