রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪  |   ১৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০

ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপন হোক বিশ্বনবীর আদর্শ অনুকরণের অঙ্গীকারের প্রতীক

অনলাইন ডেস্ক
ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপন হোক বিশ্বনবীর আদর্শ অনুকরণের অঙ্গীকারের প্রতীক

আজ পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। ঈদে মিলাদুন্নবী বললেই মুসলিম উম্মাহ তো বটেই সমগ্র মানবজাতি বুঝে নেয় এই দিবসটা কী এবং এর তাৎপর্য কতটুকু! আর এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না- মহান স্রষ্টা তাঁর সর্বোত্তম সৃষ্টি মানবজাতিকে তাঁর দেখানো পথে পরিচালিত করতে যুগে যুগে মহামানব পাঠিয়েছেন। তাঁদেরকে ইসলামের পরিভাষায় নবী এবং রাসুল বলা হয়। আর এই মহামানবগণ মহান স্রষ্টারই স্বীকৃত। কোনো সম্প্রদায়ের আবিস্কৃত মহামানব নন। তাঁরা আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত মহাপুরুষ। সে রকমই একজন মহান সত্তা হচ্ছেন আল্লাহ প্রেরিত মহামানবগণের মহামানব সর্বশেষ নবী ও রাসুল হযরত মোহাম্মদ মোস্তফা আহমাদ মোজ্তবা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। যিনি ৫৭০ খ্রিস্টাব্দের ১২ রবিউল আউয়াল সোমবার সুবহি সাদিকের সময় মা আমিনা রাদ্বিয়াল্লাহু তাআ'লা আনহার কোল আলোকিত করে এ ধরার বুকে তাশরীফ এনেছেন। তাঁর এই মহা পবিত্রতম শুভাগমন হচ্ছে মিলাদুন্নবী তথা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামার জন্ম। আর ঈদ হলো প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামার শুভাগমনে আনন্দ। এই ঈদ বা খুশি, আনন্দ কোরআন, সুন্নাহ, ইজমা, কিয়াস স্বীকৃত। এটা নিয়ে বিতর্কের অবকাশ নেই। আইম্মায়ে কেরাম ঈদুল ফিতর আর ঈদুল আজহাকে ইবাদতের ঈদ বলেছেন, আর ঈদে মিলাদুন্নবীকে ঈমানের ঈদ বলে উল্লেখ করেছেন।

আল্লাহ পাক তাঁর প্রিয়তম হাবিব হযরত মোহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সৃষ্টি জগতের জন্য রহমত হিসেবে প্রেরণ করেছেন। কোরআনের ভাষায় বলা হয়েছে- রাহমাতুল্লিল আলামীন। মহান স্রষ্টা আল্লাহ হচ্ছেন রাব্বুল আলামিন। আর তাঁর প্রিয় হাবিবকে করেছেন রাহমাতুল্লিল আলামিন। এই রহমত কোনো যুগ বা কালের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বরং তাঁর রহমতের ফল্গুধারা দুনিয়া-আখিরাত, সকল যুগ ও কালের মধ্যে বিস্তৃত। রাহমাতুল্লিল আলামিন এমন এক যুগে এই ধরাধামে শুভাগমন করেছেন, তখন মানবজাতি চরম সংকটে নিপতিত। অন্যায়, অবিচার, জুলুম, নির্যাতন, অপসংস্কৃতি, কুশিক্ষা, বৈষম্য, দুর্নীতি বিরাজিত ছিলো সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে। মানুষ ভুলে গিয়েছিল মূল্যবোধ। পদদলিত ছিল মানবতা। এক কথায় আইয়ামে জাহেলিয়াতের অমানিশা গ্রাস করেছিল। এমন সংকটময় সময়ে বিশ্বকে পুণ্যের আলোতে উদ্ভাসিত করে এবং সমাজে রহমতের বারিধারা সিক্ত করে প্রিয়নবীর শুভ আবির্ভাব হয়েছিল। তাঁর শুভাগমনে বিশ্বমানব পেয়েছে কল্যাণকর পথের দিকনির্দেশিকা, সত্য-মিথ্যার পার্থক্য নিরূপণের ক্ষমতা, মানবতার উৎকর্ষতা ও মর্যাদাবোধের গভীর চেতনা। এ পরিবর্তনের ধারা শুরু হয় আরব দেশ থেকে। অসীম ধৈর্য, বহু কষ্ট-নির্যাতন ও ত্যাগের বিনিময়ে তিনি অসভ্য আরব জাতিকে পরিণত করেন সুসভ্য উন্নত জাতিতে। এমন এক কল্যাণকর রাষ্ট্র তিনি প্রতিষ্ঠা করেন যা বিশ্ববাসীকে করেছিল বিস্মিত।

মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিশ্বকে উপহার দিয়েছেন সভ্যতা। রাষ্ট্রনীতি, অর্থনীতি, সমাজনীতি, পররাষ্ট্রনীতিসহ ব্যক্তিক জীবন পরিচালনার যে নীতিমালা তিনি দিয়েছেন, তা সব কাল-যুগের মানুষের জন্য সবচে' উত্তম কার্যকর ও অনুকরণীয়। এমনকি আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের সাথে তাঁর উপস্থাপিত বিধিবিধানের যত সামঞ্জস্য পাওয়া যায়, অন্য কোনো ধর্ম বা মতাদর্শে সেভাবে নেই। জ্ঞান-বিজ্ঞান, শিক্ষা সংস্কৃতিতে অগ্রসর হয়ে মুসলমানরা প্রায় ৮ শ' বছর বিশ্বের নেতৃত্ব দিয়েছিল। কিন্তু পরবর্তী পর্যায়ে বিভিন্ন দেশে মুসলিম শাসকদের ভোগ-বিলাসিতা, অযোগ্যতা, অদূরদর্শিতা ও সমসাময়িক পরিস্থিতি নিয়ে অবহেলার কারণে পিছিয়ে পরে মুসলিমরা, এগিয়ে যায় খ্রিস্টান তথা বিধর্মীরা। তারা মুসলিমদের তথ্য উপাত্ত ও সূত্র গবেষণা করে বিশ্বে চালকের আসনে চলে আসে। কিন্তু তারা বিশ্ব মানবতাকে সার্বিক কল্যাণ দিতে পারেনি। কারণ তারা ছিল মানব রচিত দর্শন দ্বারা বিশ্ব চালকের আসনে। আর তা দ্বারা কখনোই মানবজাতির সার্বিক কল্যাণ এবং মুক্তি সম্ভব নয়। পৃথিবী হয়ে পড়ে শোষিত এবং শাসিত এই দুই শ্রেণিতে বিভক্ত। জাতি, ধর্মে, বর্ণে, গোষ্ঠীতে বিভেদ শুরু হয়ে পৃথিবীব্যাপী শুরু হয়ে যায় সংঘাত। এতে মানুষে মানুষে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হতে থাকে। এমন এক কঠিন পরিস্থিতিতে বিশ্বব্যাপী আবার আলোচনায় আসে ইসলামের মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কীভাবে একটি জাহেলি যুগকে আলোকিত করলেন! কীভাবে তিনি বিশ্বে আলোচিত অসভ্য আরব জাতিকে সভ্যতার সর্বোচ্চ শিখরে নিয়ে আনলেন! বিশ্বমানব শান্তি এবং কল্যাণের লক্ষ্যে আবার ফিরে এসেছে মহানবীর আদর্শের দিকে। সেই মানবতার মুক্তির দূত মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পবিত্র শুভাগমন দিবস আজকে আমাদের সামনে। আজ আমরা দিবসটি শরীয়ত সম্মতভাবে আনন্দ প্রকাশে ঈদ উদযাপন করবো। আর এবারের ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপন হোক বিশ্ব নবীর আদর্শ অনুকরণের অঙ্গীকারের প্রতীক।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়