বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬  |   ৩১ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে 'আল্লাহু চত্বর'
  •   চাঁদপুর কণ্ঠৈর কলামিস্ট এএসএম শফিকুর রহমানের ইন্তেকাল
  •   নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পেল সেনাবাহিনী
  •   জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনে’ প্রধান উপদেষ্টার ১০০ কোটি টাকার অনুদান
  •   মেঘনায় নিখোঁজ দুই ভাইয়ের মরদেহ উদ্ধার

প্রকাশ : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০

কিশোর গ্যাং ও নাগরিক জীবনের আতঙ্ক

অনলাইন ডেস্ক
কিশোর গ্যাং ও নাগরিক জীবনের আতঙ্ক

‘চাঁদপুর শহরে দুঘণ্টাব্যাপী কিশোর গ্যাংয়ের দুগ্রুপের সংঘর্ষ ॥ আতঙ্কিত শহরবাসী’--এটি গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠে সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার গোলাম মোস্তফা পরিবেশিত একটি সংবাদ শিরোনাম। সংবাদটি তিনি গতানুগতিক ভাষায় না লিখে একটু আবেগী ঢংয়ে লিখেছেন। তিনি লিখেছেন, শান্তির শহর চাঁদপুর এখন আর নেই। আতঙ্কের মধ্যে শহরবাসী এখন প্রতিটি মুহূর্ত পার করছে। এ শহরটি যেনো এখন কিশোর গ্যাং বৃদ্ধির প্রশিক্ষণের শহর হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে। কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছে না কিশোর গ্যাং। প্রতিদিনই শহরের কোথাও না কোথাও কিশোর গ্যাংয়ের হামলা বা কিশোর গ্যাং গ্রুপের শক্তির প্রদর্শনী হচ্ছে। এতে করে আতঙ্কিত অবস্থায় দিনাতিপাত করছে শহরবাসী। গত ১৩ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বিকেলে চাঁদপুর শহরের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সড়ক, সিএনজি স্ট্যান্ড, মহিলা কলেজ রোড, আদালত পাড়া ও কুমিল্লা রোডের একাংশে কিশোর গ্যাং দুগ্রুপের সংঘর্ষ এবং অস্ত্রের মহড়ায় এক তাণ্ডবলীলা দেখেছে শহরবাসী। প্রায় দুঘণ্টা যাবৎ এ তাণ্ডবলীলা শুধু দুচোখ দিয়ে দেখা ছাড়া আর কিছু বলার ছিলো না শহরের মানুষের। এ অবস্থায় পুলিশ প্রশাসনের কোনো ধরনের তৎপরতা চোখে না দেখে আতঙ্কিত হয়ে যান উল্লেখিত এলাকার জনগণ। পুলিশের সামনে এমন তাণ্ডব চললেও পুলিশ ছিলো নীরব। কিশোর গ্যাং দুগ্রুপের প্রায় ২ ঘণ্টা যাবৎকালের তাণ্ডবলীলা শেষে মডেল থানা পুলিশের টিম আসলেও এ ঘটনায় কাউকে আটক বা গ্রেফতার করতে পারেনি। এ অবস্থায় ভয়াবহ এক আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে চাঁদপুর শহরবাসী। গত ক'দিন পূর্বে চাঁদপুর শহরের ষোলঘর এলাকায় কিশোর গ্যাং গ্রুপের হামলার শিকার হয়ে এক কিশোর নিহত হয়। ওই ঘটনায় থানায় মামলা হলে মডেল থানা পুলিশ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত এক কিশোরকে আটক করে। আর কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি নেই। কিশোর গ্যাং দমনে ক'দিন পূর্বে চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক নিজে নেতৃত্ব দিয়ে বেশ ক'জন কিশোরকে আটক করে মডেল থানায় সোপর্দ করেন। তারপরও কোনো অগ্রগতি হয়নি আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির। এ অবস্থায় চাঁদপুর শহরে কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত এখন যেনো নিত্য মহামারির আকারই ধারণ করেছে। এ বিষয়ে সাধারণ জনগণ বলছে, জরুরি ভিত্তিতে কিশোর গ্যাং দমনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে চাঁদপুর শহর বসবাসের অনুপযোগী হয়ে যাবে। এ বিষয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের নবাগত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাহার মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এমন খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক আমি ৩টি টিম ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি। কিন্তু ওই সময় ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে কাউকে পায়নি। তবে তিনি শহরবাসীকে আশ্বস্ত করে বলেন, আমি মডেল থানার দায়িত্বে যে ক'দিন থাকবো, কথা দিচ্ছি কিশোর গ্যাং দমনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। আপনারা আমাকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করুন।

চাঁদপুর মডেল থানার নূতন ওসি বাহার মিয়া কিশোর গ্যাং দমনে তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে নিজের কথার বাহারটুকু প্রমাণ করেন কিনা সেটাই দেখার বিষয়। কিশোরদের প্রতি আইনের কঠোরতা তাদেরকে দমন করার জন্যে যথেষ্ট নয় বলে পুলিশ এদেরকে ধরপাকড় ও শায়েস্তায় খুব বেশি পরিশ্রমী ও মনোযোগী সাধারণত থাকে না। তারপরও কোনো কোনো ওসি বা অন্য পুলিশ কর্মকর্তা তাদের কৌশলী আচরণ ও পদক্ষেপে কিশোর গ্যাং দমনে সফলতা দেখান। এদের একজন ছিলেন চাঁদপুর মডেল থানার সাবেক ওসি নাসিম উদ্দিন। এ রকম আরো অনেকে রয়েছেন হয়তো, যেটি আমাদের জানা নেই। আমাদের মতে, এ ব্যাপারে পাড়ায়/মহল্লায় কমিউনিটি পুলিশিং/বিট পুলিশিংয়ের সহায়তায় আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভা করা যেতে পারে। এছাড়া গোয়েন্দা তৎপরতায় কিশোর গ্যাং সদস্যদের এলাকাওয়ারী তালিকা করে তাদের বাবা-মা কিংবা অন্য অভিভাবককে থানায় বা অন্য কোনো সুবিধাজনক স্থানে ডেকে তাদের সাথে মতবিনিময় সভা করা যেতে পারে। যে সভায় তাদেরকে তাদের সন্তান/পোষ্যদের বিপথগামিতা রোধে তারা যে দায়িত্ব এড়াতে পারেন না, সেটা বোঝানো যেতে পারে এবং সতর্কতা অবলম্বন সহ করণীয় সম্পাদনের পরামর্শ দেয়া যেতে পারে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়