বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬  |   ৩১ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে 'আল্লাহু চত্বর'
  •   চাঁদপুর কণ্ঠৈর কলামিস্ট এএসএম শফিকুর রহমানের ইন্তেকাল
  •   নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পেল সেনাবাহিনী
  •   জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনে’ প্রধান উপদেষ্টার ১০০ কোটি টাকার অনুদান
  •   মেঘনায় নিখোঁজ দুই ভাইয়ের মরদেহ উদ্ধার

প্রকাশ : ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০

চক চক করলেই ভালো হোটেল হয় না

অনলাইন ডেস্ক
চক চক করলেই ভালো হোটেল হয় না

বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ চট্টগ্রাম অফিস কর্তৃক হাজীগঞ্জ বাজারে বিভিন্ন হোটেলসহ একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভ্রাম্যমাণ ল্যাবটেস্ট পরিচালনা করা হয়েছে । তিনটি হোটেলে যা পাওয়া গেছে তা দেখে তাজ্জব বনে গেছেন খোদ টেস্ট পরিচালনাকারী দলটিসহ প্রত্যক্ষদর্শীরা। ভ্রাম্যমাণ ল্যাবটেস্টের পর জানানো হয়, হাজীগঞ্জ বাজারের আল মদিনা হোটেলে প্রায় এক মণ দুধ থেকে স্যাম্পল নিয়ে তাৎক্ষণিক ল্যাব টেস্ট করা হয়। টেস্টে দেখা যায় পুরো দুধটাই ভেজাল। পুরোটাই ইউরিয়া ও ডিটারজেন্টে তৈরি তরল দুধ। হাজীগঞ্জ বাজারের শেরাটন হোটেলের বয়দের শরীরে মিলেছে ভয়ানক সব জীবাণুু। খাওয়া-দাওয়া নামের আরেকটি বড় হোটেলে পাওয়া গেছে অতিরিক্ত পোড়া তেলের ব্যবহার। অন্যদিকে হাজীগঞ্জ বাজারের গাউছিয়া হাইওয়ে হোটেল অ্যান্ড চাইনিজ ও প্রিন্স হোটেলে কোনো অনিয়ম পাওয়া যায়নি। একই বাজারের হলুদ পট্টির বেশ কিছু দোকান থেকে মসলার স্যাম্পল নিয়ে তাৎক্ষণিক পরীক্ষা করা হলে তাতে ভেজাল পাওয়া যায়নি। টেস্ট পরিচালনা করেন নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চট্টগ্রাম অফিসের ভ্রাম্যমাণ ল্যাব টেকনিশিয়ান সাইদুল হোসেন ও হাজীগঞ্জ উপজেলা ভারপ্রাপ্ত খাদ্য কর্মকর্তা সামছুল ইসলাম রমিজ। জনাব রমিজ জানান, আল মদিনা হোটেলের দুধে আসল দুধের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। তাতে ডিটারজেন্ট আর ইউরিয়া পাওয়া গেছে। শেরাটন হোটেলের বয়দের হাতে একশ’ মাত্রার ব্যাকটেরিয়া ছাড়িয়ে ৫শ’-এর উপরে পাওয়া গেছে। যেখানে পোড়া তেল বিষাক্ত হলে দূষণের মাত্রা ১শ’ হয়, সেখানে খাওয়া-দাওয়া হোটেলের পোড়া তেলে ৫শ’ মাত্রা পাওয়া গেছে। ল্যাব টেকনিশিয়ান সাইদুল হোসেন জানান, আমরা যে তিনটি হোটেলে বড় ধরনের অনিয়ম পেয়েছি, তার রিপোর্ট চট্টগ্রাম অফিস থেকে জেলা অফিসে পাঠাবো। সেই আলোকে জেলা অফিস ব্যবস্থা নেবে।

হোটেল ব্যবসার জন্যে হাজীগঞ্জ বাজার একটি রমরমা স্থান। এখানকার এই ব্যবসার সুনামও রয়েছে। প্রতিদিন এই বাজারে কমপক্ষে এক লাখ লোকের যাতায়াত বা আনাগোনা হয়--এটা সাধারণ অনুমান। সপ্তাহের দুটি হাটবার শুক্র ও সোমবারে এই লোকসংখ্যা কয়েক লাখ হয় বললে অত্যুক্তি হবে না। সেজন্যে একে একে গড়ে উঠেছে চাকচিক্যপূর্ণ অনেক হোটেল। এসব হোটেলে দৃষ্টিনন্দন সাজসজ্জা ও মুখরোচক খাবারের পসরা থাকে, যাতে আকৃষ্ট হয় ভ্রাম্যমাণ লোকজন। নামের বাহারেও বিশ্বাস জন্মে অনেকের। যেমন-আল মদিনা নাম দেখলেই ধর্মপ্রাণ যে কোনো মুসলিম ভাবেন, নিশ্চয়ই মালিক আল্লাহভক্ত মানুষ। তিনি আল্লাহর সেরা বান্দা শ্রেষ্ঠ নবীর রওজার জন্যে ধন্য মদিনার নামে হোটেলের নামকরণ করেছেন। নিশ্চয়ই এখানে আল্লাহর ভয় ও নবী (সা.)-এর আদর্শে সবকিছুতে বিশুদ্ধতা ও সঠিকতা রক্ষা করা হয়। অথচ এই নামের হোটেলে ল্যাবটেস্টে প্রমাণ মিললো যে, ভেজাল দুধ ছাড়া আসল দুধ নেই। আর বাংলাদেশের বহুল পরিচিত ফাইভ স্টার হোটেল শেরাটনের নামে চালুকৃত খাওয়ার হোটেলে নেই স্বাস্থ্যগত পরিবেশ। বয়দের শরীরে বসবাস করছে অতিমাত্রার ব্যাকটেরিয়া, যাদের হাতে পরিবেশিত খাবারে গ্রাহকরা প্রতিনিয়ত ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে রোগের ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। নিঃসন্দেহে হাজীগঞ্জের হোটেল ব্যবসার সুনামের বিপরীতে কিছু হোটেলের এমন প্রমাণিত অনিয়ম দুঃখজনক ও উদ্বেগজনক। সেজন্যে অগত্যা বলতেই হয়, চক চক করলে যেমন সোনা হয় না, তেমনি চক চক করলেই ভালো হেটেল হয় না। ভালো হোটেল সেটাই, যেটাতে থাকে নিরাপদ তথা বিশুদ্ধ খাদ্য। কথা হলো, গ্রাহক সে হোটেল চিনবে কীভাবে?

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়