রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২০ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ০৪ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০

ভরা বর্ষায় সড়কটির কাজ করার হেতু কী?

অনলাইন ডেস্ক
ভরা বর্ষায় সড়কটির কাজ করার হেতু কী?

চাঁদপুরের কোনো এক জনপ্রতিনিধি তাঁর এলাকায় পুরো বর্ষাকালে কোনো সড়কের উন্নয়ন কাজ করতে দিতেন না, আবার রাতেও কাজ করতে দিতেন না। কারণ এতে ঠিকাদার ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়, অজুহাত সৃষ্টির সুযোগ খোঁজে এবং ফাঁকি দেয়াতে সফল হয়। তাঁর এই বারণে সড়কগুলোর উন্নয়ন কাজে কম-বেশি মান রক্ষা হয়েছে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন। তাঁর মতো এমন বারণ মানানোর নজির অন্য কোনো জনপ্রতিনিধি কিংবা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কার্যাদেশপ্রাপ্ত ঠিকাদারের মাধ্যমে সৃষ্টি করার বিষয়টি সচরাচর দেখা যায় না। ঠিকাদারের স্বেচ্ছাচারিতা ও দোর্দণ্ড প্রতাপের কারণে এবং বিল নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নানান মুখরোচক গড়িমসি হেতু বিভিন্ন সড়কের কাজে শুভঙ্করের ফাঁক ও পুকুর চুরি যেনো মামুলি বিষয়ে পরিণত হয়েছে। আর এ সংক্রান্ত সংবাদ গণমাধ্যমের সাধারণ উপজীব্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। চাঁদপুর কণ্ঠে প্রায়শই এমন সংবাদ প্রকাশিত হয়। অতি সম্প্রতি প্রকাশিত একটি সংবাদের শিরোনাম হয়েছে ‘মৈশাদীতে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে রাস্তা নির্মাণের অভিযোগ’।

চাঁদপুর সদর উপজেলাধীন মৈশাদী ইউনিয়নের তালতলা বাজার থেকে পালকান্দি পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে কার্যাদেশ দেয়া হয় ২০২৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারি, যাতে কাজ সম্পন্ন করার সময়সীমা উল্লেখ ছিলো ২০২৪ সালের ৩০ জুন। ঠিকাদার ১৭ মাসে কাজ শেষ তো করতে পারেনি, বরং সিংহভাগ কাজ অসম্পন্ন রেখেছে। বালু ভরাটের পর বাকি কাজ থমকে আছে, বালুর সাথে ইটের কণা দেয়ার কথা থাকলেও সকল স্থানে দেয়া হয়নি; যেসব স্থানে দেয়া হয়েছে তা ইটভাটার নিম্নমানের ও পরিত্যক্ত ইটের অংশ। সড়ক সমান করতে গিয়ে ওইসব কণা রোলার মেশিনে গুঁড়ো হয়ে অনেকটা নিশ্চিহ্ন অবস্থায়। মৈশাদী গ্রামের বাসিন্দারা জানান, সড়কটি নির্মাণের শুরু থেকেই চলছে অনিয়ম। গাইডওয়ালে প্রয়োজনীয় রড দেয়া হয়নি এবং সিমেন্টের ব্যবহার করা হয়েছে কম। গাঁথুনির কাজ সঠিকভাবে করা হয়নি। বড়ো অনিয়ম হচ্ছে, সড়ক উঁচু করার চেয়ে নিচু করে নির্মাণ করা হচ্ছে। মৈশাদী গ্রামবাসী অতীতে কোনো সড়কে এতো নিম্নমানের কাজ কখনো হতে দেখেনি। এজন্যে তারা প্রতিবাদ করলেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা রহস্যজনক কারণে নিশ্চুপ থাকায় এমন প্রতিবাদ সুফল দেয়নি।

আশার কথা হলো, যে এলজিইডির প্রকল্পের আওতায় তালতলা বাজার-পালকান্দি সড়কটি নির্মাণাধীন, তদারকির দায়িত্বে থাকা সেই এলডিইডির সহকারী উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ আইয়ুব খান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হাইমচরের স্পিহা কনস্ট্রাকশনের অনিয়ম সম্পর্কে অবহিত। তিনি গণমাধ্যমকে জানান, কাজের শুরুতে স্থানীয়ভাবে সীমানা নির্ধারণ করতে গিয়ে সমস্যা সৃষ্টি হলেও পরে তা সমাধান হয়ে যায়। পরবর্তীতে কাজের অনিয়মের বিষয়টি আমাদের নজরে আসে। এমতাবস্থায় ঠিকাদারকে এলডিইডি, চাঁদপুর-এর নির্বাহী প্রকৌশলীর পক্ষ থেকে চিঠি দেয়া হয়। সঠিকভাবে কাজ না করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আমাদের কথা হলো, গেলো শুষ্ক বা শীত মৌসুমে তালতলা বাজার-পালকান্দি সড়কটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও সেটি কাজে না লাগিয়ে চলমান ভরা বর্ষায় ঠিকাদারের কাজ করার উদ্দেশ্য কী? উদ্দেশ্য যা-ই হোক, এতে নিম্নমানের কাজ তো ঢাকা যাবেই না, বরং ঠিকাদার ক্ষতিগ্রস্ত হবার সম্ভাবনই বেশি। আমরা সড়কটির কাজ নিয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের নিষ্ক্রিয় ভূমিকায় বিস্ময় প্রকাশ করছি। এটা তাদের নিজ এলাকার প্রতি দরদহীনতা এবং উদাসীনতা-উন্নাসিকতা কিংবা গোপন কোনো কারণের ইঙ্গিতবহ বলে আমরা মনে করছি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়