প্রকাশ : ২৫ মে ২০২৪, ০০:০০
এবার সফল হোক রেলওয়ের উচ্ছেদ অভিযান
আগামী ২৭ ও ২৮ মে চাঁদপুরে রেল লাইনের দুপাশে থাকা রেলওয়ের মালিকানাধীন ভূমিতে অবৈধ ও বাণিজ্যিকভাবে গড়ে ওঠা শত শত স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। বাংলাদেশ রেলওয়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি বিভাগ উচ্ছেদের এই উদ্যোগ নিয়েছে। ২৩ মে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পূর্ব সতর্কতা হিসেবে চাঁদপুর শহরে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ উচ্ছেদ এলাকায় মাইকিং করেছে। যাতে করে অবৈধ দখলে থাকা লোকজন তাদের স্থাপনা নিজ উদ্যোগে সরিয়ে নেয়। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ রেলওয়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহকারী ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা (এইও) শহীদুজ্জামান। তিনি বলেন, নিয়মিত উচ্ছেদ অভিযানের অংশ হিসেবে এই উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। চট্টগ্রাম বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তার নেতৃত্বে একটি দল ২৬ মে চাঁদপুরে আসবেন। এরপর পর্যায়ক্রমে উচ্ছেদ অভিযান চলবে। ইতোমধ্যে গত ১৪ মে চট্টগ্রাম বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা (অতিরিক্ত সচিব) দীপঙ্কর তঞ্চঙ্গ্যা উচ্ছেদ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। এই কর্মসূচির কপি রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটি থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট সকলের নিকট প্রেরণ করেছেন। দুদিনের ওই কর্মসূচিতে বলা হয়েছে, ২৭ মে চাঁদপুর বড় স্টেশন ও তৎসংলগ্ন এলাকায় রেলওয়ের মালিকানাধীন ভূমিতে বিদ্যমান অবৈধ স্থাপনা দোকানঘর উচ্ছেদ এবং পরদিন ২৮ মে কোর্ট স্টেশন (কালীবাড়ি) ও তৎসলগ্ন এলাকায় একইভাবে উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
আমরা রেলওয়ের এই উচ্ছেদ অভিযানের আগাম সাফল্য কামনা করছি। আমরা অতীতে রেলওয়ের যতো উচ্ছেদ অভিযান চাঁদপুরে দেখেছি, সব ক'টিতে টেকসই ফলাফল দেখিনি। কারণ, একদিকে উচ্ছেদ হয়, অন্যদিকে দখল হয়। কোনো কোনো উচ্ছেদ অভিযান চাপের মুখে কিংবা অদৃশ্য কারণে মাঝপথে থেমেছে, অসমাপ্ত থেকেছে, আবার শুরুর আগেই অনির্দিষ্ট কালের জন্যে বন্ধ হয়ে গেছে। এতোসব কারণে রেলওয়ের উচ্ছেদ অভিযান নিয়ে চাঁদপুরে নানা কথা প্রচলিত আছে এবং নানা প্রশ্নও আছে। এবারের অভিযানে এ সকল কিছুর অবসান হোক--এটা প্রত্যাশা করি।
ব্রিটিশ আমলে চাঁদপুরকে বলা হতো আসাম বেঙ্গল রেলওয়ের প্রবেশ দ্বার। সে কারণে চাঁদপুরে শত শত একর জায়গা অধিগ্রহণ করা হয়। ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের পর উপমহাদেশে রেলওয়ের ক্ষেত্রে চাঁদপুরের গুরুত্ব ক্রমশ কমে যায় এবং অব্যবহৃত ও পরিত্যক্ত জমির পরিমাণ বেড়ে যায়। মেঘনা-ডাকাতিয়া সেসব জমির বিরাট অংশ গ্রাস করার পাশাপাশি তারচে’ বেশি অংশ গ্রাস করে অবৈধ দখলদাররা। আর দখলকৃত জমিতেই চালানো হয় উচ্ছেদ অভিযান, কিন্তু দখলমুক্ত জমি উল্লেখযোগ্য কাজে লাগাতে পারছে না। ফলে পূর্বের ন্যায় দখলের শিকার হয়। এ কারণেই উচ্ছেদ টেকসই ফলাফলে পর্যবসিত হচ্ছে না। আমরা রেলওয়ের অব্যবহৃত ও পরিত্যক্ত জমির সদ্ব্যবহারের বিষয়টি গুরুত্বের সাথে ভেবে দেখার জন্যে রেল মন্ত্রণালয়সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট সকল মহলের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি।