প্রকাশ : ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
প্রধান শিক্ষকের জনপ্রিয়তা ও রাজকীয় বিদায়

শাহরাস্তিতে একজন জনপ্রিয় ও সর্বজনশ্রদ্ধেয় প্রধান শিক্ষককে যেভাবে বিদায় জানানো হয়েছে, সে বিদায়কে গণমাধ্যমকর্মীরা ‘রাজকীয় বিদায়’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। এ ব্যাপারে শাহরাস্তি প্রেসক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের ব্যুরো ইনচার্জ মোঃ মঈনুল ইসলাম কাজল তার পরিবেশিত সংবাদে লিখেছেন, শাহরাস্তি উপজেলার চিতোষী পশ্চিম ইউনিয়নের উঘারিয়া এলাকায় অবস্থিত অষ্টগ্রাম স্পোর্টিং ক্লাবের দুই যুগপূর্তি উপলক্ষে উঘারিয়া ইউসি উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রহমত উল্লাহকে রাজকীয়ভাবে বিদায় জানানো হয়েছে। ১৩ এপ্রিল শনিবার বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে বিপুল সংখ্যক এলাকাবাসী ও বিভিন্ন পর্যায়ের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে এ বিদায় জানানোর রাজকীয় ব্যবস্থা করা হয়।
বিদায়ী প্রধান শিক্ষক রহমত উল্লাহ তাঁর বক্তব্যে বলেন, আমাকে যে সম্মান জানানো হয়েছে, তাতে আমি খুবই আনন্দিত। যারা এ আয়োজন করেছে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। ৩৯ বছরের শিক্ষকতা শেষে বিদায়ী শিক্ষককে ঘোড়ার গাড়িতে করে বাড়িতে পৌঁছে দেয়া হয়েছে।
অষ্টগ্রাম স্পোর্টিং ক্লাবের এ ব্যতিক্রমী আয়োজনকে সবাই সাধুবাদ জানায়। আমরাও জানাই। আমরা দেখেছি, কোনো এলাকার কোনো শিক্ষক জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতায় আত্যন্তিক পর্যায়ে চলে গেলে তিনি এলাকার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রশাসনের সর্বোচ্চ কর্তাব্যক্তির চেয়েও প্রভাবশালী ও ভীষণ শ্রদ্ধেয় হয়ে যান। নিশ্চয়ই শাহরাস্তির প্রধান শিক্ষক রহমত উল্লাহও তেমনই ছিলেন, যাঁর বিদায়ে সেটা প্রমাণিত হয়েছে। চাঁদপুরে সাবেক এমপি, পৌর চেয়ারম্যান/ মেয়র/ ইউপি চেয়ারম্যানের স্বাভাবিক বিদায়ে ও চিরবিদায়ে সবার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সম্মান দেখানো না হলেও চাঁদপুর সরকারি কলেজের ইংরেজির শিক্ষক এবিএম ওয়ালি উল্লাহর চাকুরি থেকে বিদায়ে এবং চির বিদায়ে (মৃত্যুতে) যে সম্মান প্রদর্শন করা হয়েছে, এটা এখনও বিরল বলেই বিবেচিত হয়ে আছে। তাঁর মৃত্যুর পর পৌর মেয়রের উদ্যোগে যে নাগরিক শোকসভার আয়োজন করা হয়েছে, সেটা কোনো কোনো সাবেক এমপি, চেয়ারম্যান, প্রধান শিক্ষক, অধ্যক্ষের মৃত্যুতেও কাউকে করতে দেখা যায়নি। এমন বাস্তবতায় শাহরাস্তির উঘারিয়া ইউসি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রহমত উল্লাহর চাকুরি থেকে বিদায়জনিত সংবর্ধনা প্রাপ্তি অনেক বড়ো ও বিরল বিষয়ই বটে। তাঁর প্রতি প্রদর্শিত এমন সম্মাননায় অনেকেই শিক্ষকতার মতো মহান পেশায় কর্মদক্ষতা, নৈতিকতা সহ চারিত্রিক সকল গুণে নিজেকে শ্রদ্ধেয় হিসেবে তুলে ধরতে আগ্রহী হবেন। আর অশ্রদ্ধা ও অসম্মানের কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখবেন। আমরা অষ্টগ্রাম স্পোর্টিং ক্লাবকে একটি ক্রীড়া সংগঠন হয়েও শিক্ষককে সর্বোচ্চ সম্মান প্রদর্শনের উদ্যোগ গ্রহণ করায় স্যালুট জানাই।