প্রকাশ : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
এসএমসি নিয়ে কিছু প্রধান শিক্ষকের কাণ্ড

আমাদের দেশে স্কুল ম্যানেজিং কমিটি (এসএমসি) নিয়ে কিছু প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম আশ্রিত কাণ্ডের বিষয়টি প্রায়শই গণমাধ্যমে উঠে আসে ছোট-বড় সংবাদ বা প্রতিবেদন আকারে। এমন কাণ্ডের জন্যে এমন প্রধান শিক্ষকগণ উল্লেখযোগ্য জবাবদিহিতা বা বড়ো ধরনের শাস্তির মুখোমুখি হন না বিধায় গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত সংবাদের পরিমাণ কমছে না, বরং দিন দিন বাড়ছে। গতকালও চাঁদপুর কণ্ঠে প্রকাশিত হয়েছে এমন একটি সংবাদ। যে সংবাদটি পড়ে পাঠকমাত্রেরই মনে হয়েছে, প্রধান শিক্ষক উদ্দেশ্যমূলকভাবে এসএমসি গঠনে গোপনীয়তার আশ্রয় নিয়েছেন। পছন্দের কাউকে সভাপতি বানানোর জন্যে তিনি এই অপচেষ্টা হয়তো করেছেন। তবে সঠিক কারণ জানার জন্যে করতে হবে অপেক্ষা। কেননা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নির্দিষ্ট অভিযোগের আলোকে তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন। যে তদন্তে নিশ্চয়ই বেরিয়ে আসবে এসএমসি গঠনে প্রধান শিক্ষক কেনো গোপনীয়তার আশ্রয় নিলেন।
এই প্রধান শিক্ষকের নাম হচ্ছে যাদব সাহা, যিনি ফরিদগঞ্জ উপজেলাধীন সুবিদপুর পূর্ব ইউনিয়নের বাসারা উচ্চ বিদ্যালয়ে কর্মরত। তিনি বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটি (এসএমসি) গঠন গোপনে সম্পন্ন করেছেন বলে বিক্ষুব্ধ অভিভাবকগণ অভিযোগ করেছেন ইউএনও বরাবর। এই অভিযোগে প্রকাশ, প্রধান শিক্ষক ১৯ ফেব্রুয়ারি কাগজে-কলমে এসএমসির নির্বাচন সম্পন্ন করেছেন। এজন্যে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা ও প্রদর্শন, ভোটার তালিকা প্রকাশ ও প্রদর্শন এবং শ্রেণিকক্ষে ছাত্র-ছাত্রীদের অবগত করার সুষ্ঠু প্রক্রিয়া সম্পাদন করেন নি অর্থাৎ গোপনীয়তার আশ্রয় নিয়েছেন। তারপর তিনি গঠিত কমিটি কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডে প্রেরণ করেছেন। এই নির্বাচন ও কমিটি গঠন সম্পর্কে বিদ্যালয়ের পাশে বসবাসকারী সাবেক শিক্ষক, এলাকাবাসী পর্যন্ত টের পাননি। অফিস সহকারী অকপটে বলেছেন, আমি ভোটার তালিকা তৈরি করেছি। কমিটির বিষয়ে যাবতীয় কাজ প্রধান শিক্ষক করেছেন। তারপরও প্রধান শিক্ষক দাবি করেছেন, “যথাযথ নিয়ম মেনেই বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচন সম্পন্ন করা হয়েছে।” তার এমন দাবির পরও অভিযোগ গ্রহণকারী ফরিদগঞ্জের ইউএনও মৌলি মন্ডল বলেছেন, এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ফরিদগঞ্জের বাসারা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক যাবদ সাহা এমএমসি গঠনে যে জাদু দেখিয়েছেন, তেমনটি অনেক মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও মাদ্রাসার অধ্যক্ষ/সুপারিন্টেন্ডেন্টও করে থাকেন। ব্যবস্থাপনাগত দক্ষতার জন্যে সেই জাদুর মায়াজালে মোহিত হয়ে অনেক স্থানেই প্রতিবাদ হয় না, আবার কোথাও কোথাও হয়। ফরিদগঞ্জের বাসারা তেমনই একটি স্থান। আমরা বিশ্বাস করি, সচেতন অভিভাবকদের প্রতিবাদে বাসারা উচ্চ বিদ্যালয়ের গোপন প্রক্রিয়ায় গঠিত এসএমসি সময়ান্তরে ইউএনও’র তদন্তের আলোকে বাতিল হবে এবং প্রধান শিক্ষক ছোট-বড় শাস্তির মুখোমুখি হবেন।