রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫  |   ২৪ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ গাজী গ্রেফতার

প্রকাশ : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

পাঠকের থমকে যাওয়ার মতো সংবাদ!

অনলাইন ডেস্ক
পাঠকের থমকে যাওয়ার মতো সংবাদ!

একটি পত্রিকার সকল সংবাদে পাঠক থমকে যায় না, তবে কোনো কোনো সংবাদে থমকে যায়। গতকাল তেমনই একটি সংবাদ ছাপা হয়েছে চাঁদপুর কণ্ঠে, যার শিরোনাম হয়েছে ‘গাড়ি উঠলেই কেঁপে উঠে ফরিদগঞ্জের কাটাখালি সেতু’। সংবাদটিতে ফরিদগঞ্জে কর্মরত চাঁদপুর কণ্ঠের ব্যুরো ইনচার্জ প্রবীর চক্রবর্তী লিখেছেন, এ যেন নড়বড়ে সাঁকোর গল্প। সাঁকো দিয়ে পার হওয়ার সময় যেমন সাঁকোটি কেঁপে উঠে, ফরিদগঞ্জ উপজেলার ডাকাতিয়া নদীর উপর অবস্থিত কাটাখালি সেতুটির অবস্থাও অনুরূপ। দীর্ঘদিনেও এটি সংস্কার না হওয়ায় বড় ধরনের দুর্ঘটনার ঝুঁকির মধ্যেই চলাচল করছে গাড়ি ও জনসাধারণ। যদিও নকশা করে সেতুটি নূতন করে নির্মাণের আশ্বাস দিয়েছেন উপজেলা প্রকৌশলী।

জানা গেছে, ফরিদগঞ্জ-রামপুর সড়কের কাটাখালি এলাকায় ডাকাতিয়া নদীর উপর কয়েক দশক পূর্বে সেতুটি নির্মিত হয়। ফরিদগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নকে সংযুক্ত করা সেতুটি ওই সময়ে শুধুমাত্র হালকা পরিবহন-উপযোগী করে নির্মাণ করা হলেও সময়ের ব্যবধানে উপজেলা সদরের সাথে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সাথে দ্রুত যোগাযোগের অন্যতম সড়ক হিসেবে সেতুটি এখন বহুল ব্যবহৃত হয়ে উঠেছে। সরেজমিনে গেলে স্থানীয়রা জানান, সেতুটি দিয়ে এখন চলাচল করা ঝুঁকিপূর্ণ। হালকা কোনো যানবাহন চলার সময়ও সেতুটিতে কম্পনের সৃষ্টি হয়। ইতিমধ্যেই সেতুর বিভিন্ন স্থানে গর্ত ও ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা আল-আমিন, আলমগীর, মমিন, গাড়ি চালক হোসেনসহ অন্য লোকজন জানান, কাটাখালি সেতুটি ক’টি ইউনিয়নের প্রায় অর্ধ লাখ লোক ব্যবহার করেন দৈনন্দিন কাজে। প্রতিদিন অন্তত ৮ থেকে ১০ হাজার মানুষের যাতায়াতের একমাত্র পথে এই সেতু দীর্ঘদিন সংস্কার করা হচ্ছে না। ফলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়েই পারাপার হচ্ছেন তারা। ভুক্তভোগীরা জানান, ইতিমধ্যে সেতুর মাঝখানে বড় গর্ত, বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। রেলিংয়ের আস্তর খুলে রড বেরিয়ে এসেছে। এছাড়াও সেতুর কলামের রডগুলোতে মরিচা ধরে খসে পড়েছে। ছোট ছোট যানবাহন পারাপার হলেও সেতুটি বিপজ্জনকভাবে কেঁপে উঠে। দুর্ঘটনা এড়াতে অনেক আগ থেকেই সেতু দিয়ে পণ্যবাহী ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়েছে। ফলে এসব যানবাহনকে বিশ কিলোমিটার ঘুরে যেতে হচ্ছে। তারা জানান, গত এক দশক ধরে সেতুটি পর্যায়ক্রমে দুর্বল হতে হতে বর্তমান অবস্থায় পতিত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি যথাসময়ে এটি মেরামত করতো তাহলে সেতুটির এই দুর্দশা হতো না। কালক্রমে মানুষ দ্রুত এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে চায়। এজন্যে তারা অপেক্ষাকৃত শটকার্ট রাস্তাই বেছে নেয়। সেজন্যে উপজেলা সদরের সাথে দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের যোগাযোগের জন্যে ক্রমশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে কাটাখালী সেতু হয়ে যাওয়া সড়কটি। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী আবরার আহাম্মদ জানান, এটি অনেক পুরাতন সেতু ও ঝুঁকিপূর্ণ। আমরা উল্লেখিত স্থানে নতুন নকশায় নতুন সেতু নির্মাণ করবো। আশা করছি দ্রুত টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবো।

ফরিদগঞ্জের কাটাখালি সেতুটির ছবি দেখলেই শিউরে উঠতে হয়, বাস্তব অভিজ্ঞতা যে আরো ভয়ঙ্কর সেটা সংবাদ পড়ে কোনো পাঠকের ধারণা করতে অসুবিধা হয় না। এই সেতুটির স্থলে নূতন সেতু নির্মাণে উপজেলা প্রকৌশলীর আশ্বাস দ্রুত বাস্তবায়নযোগ্য করতে হলে তদবির যে অনিবার্য সেটা অপ্রিয় হলেও বলতে হয়। আশা করি, স্থানীয় এমপি মহোদয় কাটাখালিতে ডাকাতিয়া নদীর ওপর নূতন সেতু নির্মাণে সংশ্লিষ্ট সকল মহলে জোরালো তদবির চালাবেন। কেননা এই সেতুটি নির্মাণে বিলম্বহেতু দুর্ঘটনা যে নিশ্চিত ঘটবে সেটা সহজেই ধারণা করা যায়। তখন সরকারি লোকজন নিজেদের গা বাঁচাতে পারলেও জনপ্রতিনিধিরা বদনাম এড়াতে পারবেন বলে মনে হয় না।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়