মঙ্গলবার, ০৬ মে, ২০২৫  |   ৩৪ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে নেতাকর্মীদের ঢল

প্রকাশ : ১৬ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

ভিক্ষুককে পুলিশি সহায়তা!

অনলাইন ডেস্ক
ভিক্ষুককে পুলিশি সহায়তা!

ইউএনডিপির সংস্কার প্রয়াস, জাতিসংঘ শান্তি মিশনে গিয়ে অর্জিত জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা, উচ্চ শিক্ষিত/ সুশিক্ষিত যুবকদের পুলিশে যোগদান সহ ইতিবাচক কিছু কর্মসূচির কারণে থানা-পুলিশ, ফাঁড়ি-পুলিশের মধ্যে আচরণগত কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সেজন্যে থানায় ও ফাঁড়িতে গিয়ে এখন ম্লেচ্ছ, দরিদ্র, হতদরিদ্র, দুঃস্থ-অসহায়, ভিক্ষুকসহ সর্বশ্রেণির লোকজন সহযোগিতা পাচ্ছে, পুলিশি অ্যাকশন দেখছে। আগের মতো উল্লেখযোগ্য অবজ্ঞার শিকার হচ্ছে না, অন্তত 'কাউন্ট' করা হচ্ছে। পদে পদে জবাবদিহিতার চাপে/তাগিদে/ মনিটরিংয়ে পুলিশ অফিসাররা থাকেন তটস্থ। আগের মতো জিডি করতে থানায় গিয়ে মানুষকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হচ্ছে না। তবে প্রভাবশালীদের ফোনে/ চাপে কোনো কোনো মামলা গ্রহণে কোনো কোনো ওসির গড়িমসি, ঘুরানোর মানসিকতা কালেভদ্রে যে কোথাও ঘটে না, সেটা সাধারণ্যে হলফ করে বলার মতো পরিবেশ এখনও হয়নি। আমাদের উপরে বিবৃত অভিব্যক্তিটা চাঁদপুর কণ্ঠে গতকাল প্রকাশিত একটি সংবাদ দেখে।

‘শাহরাস্তিতে ভিক্ষুককে দলবদ্ধ ধর্ষণ ॥ গ্রেফতার ২’ শিরোনামের সংবাদটিতে লিখা হয়েছে, শাহরাস্তিতে ভিক্ষুককে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় ২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রোববার ১৪ জানুয়ারি দুপুরে তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলো : রায়শ্রী উত্তর ইউনিয়নের যাদবপুর গ্রামের গ্রামের মৃত আঃ রবের পুত্র বিল্লাল হোসেন (২৮) ও আবুল হোসেনের পুত্র ইমাম হোসেন মিয়াজী (২১)। শাহরাস্তি মডেল থানা সূত্রে জানা যায়, কচুয়া উপজেলার গোহট ইউনিয়নের চান্দিয়াপাড়া গ্রামের এক ভিক্ষুক (৪০) গত শনিবার শাহরাস্তি উপজেলার বেরনাইয়া বাজার এলাকায় ভিক্ষা শেষে অটোরিকশাযোগে বাড়িতে যাওয়ার পথে রঘুরামপুর ব্রীজের উপর পৌঁছলে সন্ধ্যা ০৬টা ২০ মিনিটের সময় ৪ যুবক তাকে অটোরিকশা থেকে টেনে হিঁচড়ে নামিয়ে রঘুরামপুর গ্রামের আরিফ উল্লাহ পাটওয়ারী বাড়ির শাহ আলমের নির্মাণাধীন একতলা বিল্ডিংয়ের ভিতর নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এ সময় ভুক্তভোগী ডাকচিৎকার দিলে অভিযুক্তরা তার শরীরে আঘাত করে ভিক্ষা করা ৫ হাজার ৭শ’ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। সংবাদ পেয়ে শাহরাস্তি থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নিজে বাদী হয়ে শাহরাস্তি থানায় ৩ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও ১ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণে সহায়তার অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন। মামলার অপর আসামীরা হলো : যাদবপুর গ্রামের হাসান আহমেদের পুত্র বেলায়েত হোসেন (৩০) ও মৃত আবুল কাশেমের পুত্র আব্দুল কাদির (২০)। ঘটনার প্রেক্ষিতে রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে ২ জনকে গ্রেফতার করে। শাহরাস্তি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন জানান, ভুক্তভোগীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্যে চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মামলার অন্য আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

একজন বিপন্ন ভিক্ষুকের পাশে সক্রিয়তা ও আন্তরিকতার সাথে দাঁড়ানোর জন্যে শাহরাস্তি মডেল থানা পুলিশকে সাধুবাদ না জানিয়ে পারছি না। এটা নিকট ও সুদূর অতীতে ছিলো কল্পনার বিষয়। কারণ, দালালের দাপটে ভিক্ষুক, অসহায়, দরিদ্র সহ সর্বশ্রেণির নিরীহ মানুষের পক্ষে থানার ভেতরে ঢোকা তো দূরের কথা, ধারে-কাছে ভিড়াও ছিলো কষ্টকর। আজ থানাগুলো পুরোপুরি দালালশূন্য না হলেও দালালের দাপট পূর্বের চেয়ে অনেক কমেছে বলে অকপটে স্বীকার করতে দ্বিধা নেই। বস্তুত সে কারণে থানায় গিয়ে যে কারো জিডি করা, মামলা করা তথা প্রতিকার বা বিচারপ্রার্থী হওয়াটা পূর্বের চেয়ে অনেক সহজ হয়েছে। এছাড়া পুলিশ কর্মকর্তাসহ অন্য সকলের বদলে যাওয়ার মানসিকতাও থানা-ফাঁড়ির সামগ্রিক কার্যক্রমে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এর বাইরে পিবিআই (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন), নৌপুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশ, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ, রেল পুলিশ সহ পুলিশের অন্যান্য ইউনিটের অভূতপূর্ব সাফল্য সামগ্রিকভাবে পুলিশের ভাবমূর্তিকে ক্রমশ বাড়িয়ে তুলছে। আমরা পুলিশকে নিয়ে সত্যিই আশাবাদী, পূর্বের ন্যায় হতাশ নই।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়