প্রকাশ : ২১ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০

আমাদের দেশে জাতীয় মহাসড়ক ছাড়া আঞ্চলিক মহাসড়ক, জেলা সড়ক ও উপজেলা সংযোগ সড়কগুলোতে সঠিকভাবে সমউন্নয়ন দেখা যায় না। উপর্যুপরি প্রভাবশালী মন্ত্রী/এমপি/আমলারা পৌর এলাকা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের সড়কগুলোর সংস্কার/মেরামত/উন্নয়নে সমউন্নয়ন বাদ দিয়ে কে কার তদবিরে নিজ এলাকায় বেশি অর্থাৎ অসম ও অস্বাভাবিক উন্নয়ন করতে পারেন, সেটার প্রতিযোগিতা প্রদর্শন করেন। এতে সংস্কার/ মেরামতের ক্ষেত্রে ক্রায়িং নীড বা জরুরি প্রয়োজন সম্বলিত অনেক সড়ক অবহেলিত ও উদ্দেশ্যমূলকভাবে দৃষ্টির আড়ালে পড়ে থাকে। এতে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছে। যেমনটি পৌঁছেছে ফরিদগঞ্জে। চাঁদপুর কণ্ঠে ‘বিষকাটালিতে এক কিলোমিটার রাস্তার বেহাল অবস্থা ॥ সংস্কার জরুরি’ শিরোনামের সংবাদে সেই জনদুর্ভোগের প্রকট চিত্র ফুটে উঠেছে।
সংবাদটিতে এমরান হোসেন লিটন লিখেছেন, ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১২নং চরদুঃখিয়া ইউনিয়নের একমাত্র প্রধান সড়ক দক্ষিণ রামপুর বাজার হতে পিরোজপুর বাজার অভিমুখী রাস্তার বিষকাটালি সরদার বাড়ি পোলেরগোড়া হতে মতি বেপারী বাড়ি পর্যন্ত এক কিলোমিটার রাস্তার বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে। যার কারণে সড়কের এই অংশটি কয়েকটি বাজার, গ্রাম এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রী ও পথচারীদের নিত্যদিনের যন্ত্রণা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই এটি সংস্কার করা জরুরি হয়ে পড়েছে। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এই রাস্তাটি অতি জনগুরুত্বপূর্ণ হলেও উল্লেখিত স্থানে মাত্র এক কিলোমিটার রাস্তা নতুন করে নয় একটু সংস্কার করলেই মানুষের দুর্ভোগ দূর হয়ে যায়।
জানা যায়, মরহুম আলমগীর হায়দার খান এমপি থাকাকালীন ২০০২ সালে রাস্তাটি পাকা করা হয়েছিলো। তারপর অদ্যাবধি আর সংস্কার না করায় রাস্তাটির উল্লেখিত স্থানে খানাখন্দে মানুষসহ যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। রাস্তাটি খুব বেশি জনগুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এই রাস্তা দিয়ে ইউনিয়নের সকল মানুষ চৌমুহনি বাজারস্থ ইউপি কার্যালয়ে যেতে হয়। চৌমুহনি বাজার, খালপাড়ের বাজার, পিরোজপুর বাজার, পিরোজপুর বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১০১নং বিষকাটালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দুটি হাফিজিয়া মাদ্রাসা, দুটি কেজি স্কুল, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, রামপুর বাজার হাই স্কুল, রামপুর ফাজিল মাদ্রাসা, গন্ডামারা উচ্চ বিদ্যালয়, মোয়াজ্জেম হোসেন কলেজ, গার্লস হাই স্কুলে যাতায়াতসহ অত্র অঞ্চলের বিষকাটালি গ্রাম, সন্তোষপুর, চরদুঃখিয়া, চর চরনা, লড়াইর চর, গন্ডামারা, চরপোড়ামুখীসহ আরো ক’টি গ্রামের মানুষের চলাচলের মাধ্যম এই রাস্তা। এছাড়া এ অঞ্চলের মানুষের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কাজের জন্যে চাঁদপুর, ঢাকা বা দেশের বিভিন্ন স্থানে যেতে হলে এবং বিভিন্ন হাসপাতালে যেতে এই রাস্তাটিই ব্যবহার করতে হয়। তাই রাস্তাটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার কারণে সংস্কার জরুরি হয়ে পড়েছে।
এলাকার অনেকে জানান, রাস্তাটি এই এলাকার মানুষের জন্যে যতটা গুরুত্ব বহন করে সরকারিভাবে ততটা নজর রাখা হয় না। দীর্ঘদিন যাবৎ সরকারিভাবে কোনো সংস্কার না করার কারণে ছোট ছোট কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা ঠিকমতো বিদ্যালয় যেতে পারে না। মানুষ রোগী নিয়ে হাসপাতালে যেতে ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়। এছাড়া বিশাল এ এলাকার মানুষ বাজার বা শহর থেকে কোনো পণ্য বা সরঞ্জামাদি নিয়ে আসলে এই এক কিলোমিটার রাস্তার জন্যে ঠিকমতো বাড়িতে নিতে পারে না। রাস্তাটিতে অতিরিক্ত খানাখন্দের কারণে বিভিন্ন গাড়ি উল্টে যায়। গাড়ি উল্টে গিয়ে বিভিন্ন জনের মালামাল নষ্ট হয়ে যায় বলে তারা জানান। সুধীজন বলছেন, বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভিশন স্মার্ট বাংলাদেশ। আর স্মার্ট বাংলাদেশে এই ধরনের রাস্তা থাকা সত্যিই শোভনীয় নয়। আমরাও চাই উল্লেখিত স্থানের এই রাস্তাটুকু জরুরিভাবে সংস্কার করা হোক।
এই সংবাদটি পড়লে সমউন্নয়নের ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের উদাসীনতা ও বাস্তবতা উপলব্ধির ঘাটতি দুর্ভাগ্যজনকভাবে বোঝা যায়। উন্নয়নের ক্ষেত্রে এমনটি অন্যায্য বলতে আমাদের কোনো দ্বিধা নেই। আমরা ফরিদগঞ্জের ১২নং চরদুঃখিয়া ইউনিয়নের প্রধান সড়কে বিদ্যমান সবচে’ দুর্দশাগ্রস্ত এক কিলোমিটার অংশের জরুরি মেরামত/সংস্কার দাবি করছি। এ ব্যাপারে স্থানীয় এমপি, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সুদৃষ্টি কামনা করছি, বিশেষ করে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা প্রকৌশলীর সর্বাত্মক সক্রিয়তা প্রত্যাশা করছি।