রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫  |   ২৪ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ গাজী গ্রেফতার

প্রকাশ : ১০ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০

পরকীয়া প্রেমিকের উন্মত্ততা ও দুঃসাহস!
অনলাইন ডেস্ক

খুন, ডাকাতি, চুরি ইত্যাদি অপরাধ গোপনীয়তা রক্ষা করে করা হয়, যাতে সংশ্লিষ্টরা নিজেদের রক্ষা করতে পারে। কিন্তু কাউকে উন্মত্ততা পেয়ে বসলে সে দুঃসাহস দেখায় এবং নির্মমতার চূড়ান্ত রূপ প্রদর্শন করে। যেমনটি গত রোববার হাজীগঞ্জে প্রকাশ করেছে এক পরকীয়া প্রেমিক। এ ব্যাপারে গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠে প্রকাশিত সংবাদে কামরুজ্জামান টুটুল লিখেছেন, হাজীগঞ্জে কথিত পরকীয়া প্রেমের জেরে সৌদী প্রবাসী একজনকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে স্ত্রীকে আটক করেছে থানা পুলিশ। প্রবাসীর নিজ ভাড়া বাসায় কুপিয়ে মারাত্মক জখমের পর পর কথিত পরকীয়া প্রেমিক পালিয়ে যায়। ৮ অক্টোবর রোববার রাতে হাজীগঞ্জ বাজারস্থ ট্রাকরোড়ের একটি ভাড়া বাসায় এ ঘটনা ঘটে। হত্যাকাণ্ডের শিকার সৌদিআরব প্রবাসী মোঃ এমরান হোসেন (৪০) ফরিদগঞ্জ উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের দালাল বাড়ির মোঃ আবুল বাশারের ছেলে। তার স্ত্রী ফারজানা বেগম (৩০) হাজীগঞ্জ উপজেলার জাখনি গ্রামের মৃত জসিম উদ্দিনের মেয়ে। এই দম্পতির এক সন্তান রয়েছে।

নিহতের স্ত্রী ফারজানা বেগম জানান, রোববার এশার নামাজের সময় আশেক তাদের বাসায় আসে। এ সময় তার স্বামীর সাথে আশেকের কথা হয়। এরপর তিনি (ফারজানা) টয়লেটে যান, টয়লেট থেকে ফিরে এসে দেখেন আশেক তার স্বামীকে কোপাচ্ছে। এ সময় তাকে বাঁচাতে গেলে আশেক ফারজানাকে আঘাত করে পালিয়ে যায়। ফারজানা জানান, পরে আমি আমার স্বামীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই। আশেক তাকে বিরক্ত করতো বলে তিনি জানান। নিহত এমরান হোসেনের বোন রিনা বেগম জানান, আমার ভাবীর (ফারজানা বেগম) সাথে তার বড় বোনের চাচাতো দেবর শাহরাস্তি উপজেলার আজাগরা গ্রামের সৈয়দ বাড়ির সৈয়দ আশেক এলাহী বাবুর পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। এ ঘটনায় অনেক ঝামেলা ও দেন-দরবার হয়েছে। তারাই আমার ভাইকে মেরে ফেলেছে। এ সময় তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে আরো বলেন, তারা (ফারজানা বেগম ও সৈয়দ আশেক এলাহী বাবু) আমার ভাইকে পরিকল্পনা করে জবাই করে হত্যা করেছে। এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই, আমি মামলা করবো। এদিকে খবর পেয়ে হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ হাজীগঞ্জ বাজারস্থ ট্রাক রোডস্থ আমেনার বাসার ৩য় তলায় হত্যাকাণ্ডের শিকার এমরান হোসেনের ভাড়া বাসা থেকে আলামত সংগ্রহ এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন সম্পন্ন করে থানা হেফাজতে নিয়ে যায়। এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ গোলাম মাওলা নঈম জানান, এমরান হোসেনকে আমরা হাসপাতালে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। হাসপাতালে আনার পূর্বেই তিনি মারা গেছেন। কর্মরত চিকিৎসকের দেয়া তথ্য মতে, ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ফারজানা নামের একজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ আব্দুর রশিদ জানান, এমরান হোসেনের মরদেহ উদ্ধারপূর্বক সুরতহাল প্রতিবেদন সম্পন্ন এবং প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এমরান হোসেনের স্ত্রীকে আটক করা হয়েছে।

সৌদিআরব প্রবাসী এমরান হোসেনকে খুন করার অব্যবহিত পরেই হাজীগঞ্জ থানা পুলিশের ত্বরিত ব্যবস্থাগ্রহণে বিক্ষুব্ধ প্রতিটি মানুষই সাময়িক স্বস্তি পেয়েছে বলে মনে করছি। এমরানের আটক স্ত্রীকে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে নিশ্চয়ই তার স্বামীর খুনের সাথে তার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কিনা সেটি জানা যাবে কিংবা তার কথিত পরকীয়া প্রেমিক অন্য কারো প্ররোচনায় এমরানকে খুন করেছে কিনা সেটি জানা যাবে। আমাদের বিশ্বাস, এমরানের মূল খুনি সৈয়দ আশেক এলাহী বাবু খুব দ্রুতই ধরা পড়বে এবং তার বক্তব্যে খুনের মূল উদ্দেশ্য বেরিয়ে আসবে। যদি পরকীয়াই খুনের মূল কারণ হয়, তাহলে আমরা দেশের প্রচলিত আইনে খুনি বাবু ও তার পরকীয়া প্রেমিকা অর্থাৎ এমরানের স্ত্রী ফারজানার সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়