রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫  |   ২৭ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ গাজী গ্রেফতার

প্রকাশ : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০

প্রধান শিক্ষকের গায়ে হাত! মেনে কি নেয়া যায়?
অনলাইন ডেস্ক

‘তরপুরচণ্ডীতে বখাটের হাতে প্রধান শিক্ষক লাঞ্ছিত’ শিরোনামের সংবাদ পড়ে সচেতন পাঠকমাত্রই উত্তেজনা অনুভব করেছেন। গত বৃহস্পতিবার চাঁদপুর কণ্ঠে প্রকাশিত এই সংবাদে লিখা হয়েছে, চাঁদপুর সদর উপজেলার তরপুরচণ্ডী জিএম ফজলুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ রুহুল আমিন খন্দকার বখাটের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন। এ নিয়ে স্কুল শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। যে কোনো সময় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে বলে স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন। বখাটে এই যুবকের নাম সুপ্ত মাতাব্বর। সে ওই এলাকার শাহজাহান মাতাব্বরের ছেলে। মঙ্গলবার বিকেলে বিদ্যালয় মাঠে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওইদিন স্কুল চলাকালে সুপ্ত মাতাব্বর তার বখাটে বাহিনী নিয়ে বিদ্যালয় মাঠে প্রবেশ করে। কিছুক্ষণের মধ্যেই মাঠে প্রবেশ করা বখাটেদের মাঝে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে অশালীন ভাষায় গালাগাল করতে থাকে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। তাদের চেঁচামেচি-চিৎকার দেখে প্রধান শিক্ষক ছুটে এসে বললেন, ‘তোমরা বাইরে যাও। এখানে ক্লাস চলে’। এ কথা বলতে না বলতেই প্রধান শিক্ষককে বখাটে সুপ্ত মাতাব্বর কিলঘুষি মারতে থাকে এবং বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে সে প্রধান শিক্ষককে প্রাণনাশের হুমকি দেয় বলে জানান প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিন খন্দকার। এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, এরা কয়েকজন কিশোর গ্যাং ও বখাটে হিসেবে এলাকায় চিহ্নিত। তারা মাদকসেবন ও ইভটিজিং করে থাকে। তাদের ভয়ে এলাকাবাসী প্রতিবাদ বা মুখ খোলার সাহস পায় না।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ রুহুল আমিন খন্দকার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বিষয়টি নিয়ে বসবেন। সেজন্যে আপাতত কোথাও অভিযোগ দেইনি। তরপুরচণ্ডী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমাম হাসান রাসেল গাজী জানান, বিষয়টি প্রধান শিক্ষক আমাকে জানাননি। আমি লোকমুখে শুনে প্রধান শিক্ষককে ফোন করে জেনেছি। সুপ্ত মাতাব্বর সত্যিকারের বখাটে ছেলে। এই বখাটেপনার জন্যে ইতঃপূর্বে তিন-চারবার জেলও খেটেছে সে। আমার ছোট শিশুকন্যার অসুস্থতায় ব্যস্ত থাকায় আজ বুধবার বসার কথা থাকলেও বসতে পারিনি। রোববার এ নিয়ে বসবো। তারপরও প্রধান শিক্ষককে বলেছি, থানায় অভিযোগ করতে। তিনি কেনো অভিযোগ করছেন না তা জানি না।

আমরা তরপুরচণ্ডী জিএম ফজলুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের গায়ে স্থানীয় বখাটের হাত তোলার ঘটনায় চরম উদ্বেগ প্রকাশ করছি। শুধু এলাকাবাসী কেনো, কোনো সুস্থ, সচেতন, বিবেকবান মানুষ এমন ঘটনায় কেবল মর্মাহত নয়, কেউ কেউ উত্তেজনাও অনুভব করছেন। কথা হলো, প্রধান শিক্ষক কেনো থানায় যেতে তথা পুলিশের সাহায্য নিতে ইতস্তত কিংবা বিলম্ব করেছেন বা করছেন? আমরা মনে করি, একজন বখাটে কোনো অবস্থাতেই এতোটা ক্ষমতাধর হতে পারে না, যার ভয়ে একজন প্রধান শিক্ষক থানা-পুলিশের দ্বারস্থ হতে বিলম্ব করবেন? আমরা এ ব্যাপারে শিক্ষক সংগঠনের জোরালো ভূমিকা প্রত্যাশা করছি। যদি এমন ভূমিকা তারা পালন না করে, তাহলে অবাঞ্ছিতভাবে যে কোনো শিক্ষক, প্রধান শিক্ষক, এমনকি শিক্ষার্থীরাও বখাটে সহ যে কোনো দুর্বৃত্তের হাতে লাঞ্ছিত হবার সমূহ সম্ভাবনা দেখা দেবে। অতএব, সাবধান।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়