আমাদের দেশে বিখ্যাত ব্যক্তিদের যথার্থ মূল্যায়ন জীবদ্দশায় খুব কমই হয়। যতো মূল্যায়ন ও মায়াকান্না দেখা যায় মৃত্যুর পরই। তাও আবার ক্ষণস্থায়ী। কারো শোকসভায় বক্তাদের প্রতিশ্রুতি থাকে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই লোক দেখানো। কেউ কেউ শোকের নামে নাটকও করে। কুলখানি ও চেহলাম এবং শোকসভার পর অনেক বিখ্যাত-অবিখ্যাত ব্যক্তিকে নিজের পরিবারের লোকজনই ভুলে যায়। স্মৃতিরক্ষায় কিছু করা দূরে থাক, প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী পালনেও কোনো কোনো মৃত ব্যক্তির পরিবার অপারগতা স্বীকার করে। এমন বাস্তবতায় ফরিদগঞ্জ উপজেলার অন্যতম বিখ্যাত ব্যক্তি আবুল খায়ের পাটোয়ারীর জীবদ্দশায় তাঁর পরিবারের সদস্য ও শুভাকাক্সক্ষীরা তাঁর নামে একে পাটোয়ারী ফাউন্ডেশন গঠন করেছেন। যে ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ঈদবস্ত্র বিতরণ করে উদ্যোক্তারা ফাউন্ডেশনটির জানান দিয়েছেন।

জনাব আবুল খায়ের পাটোয়ারী হচ্ছেন ফরিদগঞ্জের অন্যতম প্রবীণ ব্যক্তিত্ব। তিনি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ফরিদগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচিত মেয়র। যিনি একজন বিদ্যোৎসাহী, স্পষ্টভাষী, স্বাধীনচেতা প্রগতিশীল মানুষ। যাঁর বক্তব্য ও আচরণের কাছে তাঁর বয়স হার মানে।

ঈদের খুশি ছড়িয়ে দিতে ফরিদগঞ্জ পৌর এলাকার হতদরিদ্র লোকজনের মাঝে ঈদবস্ত্র বিতরণ করেছে জনাব আবুল খায়ের পাটোয়ারীর নামে প্রতিষ্ঠিত একে পাটোয়ারী ফাউন্ডেশন (প্রস্তাবিত)। রোববার ১৬ এপ্রিল বিকেলে সংগঠনের নিজস্ব কার্যালয়ে ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডঃ নাজমুন নাহার অনির সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আবুল খায়ের পাটোয়ারী স্বয়ং। এ সময় তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে অস্ত্র হাতে নিয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম। সেদিন পরিবার ও প্রতিবেশীদের কথা চিন্তা করিনি। চিন্তা করেছি সারাদেশ নিয়ে। রাজনীতি করছি, জনপ্রতিনিধি হয়েছি। এর সাথে সাথে পরিবারের সদস্য ও সুধীজনদের নিয়ে ফরিদগঞ্জ উপজেলাসহ সারাদেশের অবহেলিত মানুষের জন্যে কিছু করে যেতে চাই। সরকারের পাশাপাশি সংগঠনের মাধ্যমে কিছু করার চেষ্টার অংশ হিসেবে একে পাটোয়ারী ফাউন্ডেশন গঠন। আশা করছি আপনাদের সহযোগিতা নিয়ে এদেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে জীবনের শেষদিন পর্যন্ত আমি এবং সংগঠনের মাধ্যমে আমার বংশধররা ও সুধীমহল সংগঠনকে এগিয়ে নিবেন। ঈদের পূব মুহূর্তে ঈদবস্ত্র দিয়ে লোকজনের মাঝে একটু হাসি ফোটানোর চেষ্টা করছি।

সংগঠনের চেয়ারম্যান অ্যাডঃ নাজমুন নাহার অনি তাঁর বক্তব্য বলেন, ছোটবেলা থেকেই অপরকে সহায়তা করতে শিখেছি। আজ নিজের পায়ে দাঁড়ানোর পর মানুষের জন্যে কিছু করার চেষ্টার অংশ হিসেবে এই ফাউন্ডেশন তৈরি করেছি। আশা করছি ভবিষ্যতে আরো অনেক কিছু করতে পারবো।

আমরা জীবদ্দশায় আবুল খায়ের (একে) পাটোয়ারীর নামে ফাউন্ডেশন গঠনের ক্ষেত্রে উদ্যোক্তাদের ঔদার্যকে সপ্রশংস অভিব্যক্তিতে সাধুবাদ জানাতে চাই। আমরা এ প্রতিষ্ঠানটির টেকসই অস্তিত্ব প্রত্যাশা করি। আবুল খায়ের পাটোয়ারীর নামে প্রকাশনা, কোনো স্থাপনার নামকরণসহ জনকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ড ও প্রাসঙ্গিক কর্মসূচিই এ প্রতিষ্ঠানটির টেকসই অস্তিত্ব নিশ্চিত করতে পারে বলে আমরা মনে করি।