সোমবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৫  |   ২৯ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ গাজী গ্রেফতার

প্রকাশ : ১৭ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০

যে কোনো মূল্যে চাঁদপুরের নৌপথকে নিরাপদ রাখুন
অনলাইন ডেস্ক

‘ট্রলারে ডাকাতির নাটক (!) ॥ লুটের ৪০ ড্রাম ভোজ্য তেল ও ১৩৬ বস্তা চিনি উদ্ধার’-এটি গতকালকের চাঁদপুর কণ্ঠের একটি সংবাদ শিরোনাম। এ সংবাদের মাধ্যমে চাঁদপুরের নৌপথ যে পূর্বের ন্যায় নিরাপদ নয় সে বিষয়টি আবারো জানা গেলো। নিঃসন্দেহে এটা উদ্বেগজনক। চাঁদপুরপ্রেমী প্রতিটি মানুষ এতে অখুশি না হয়ে পারে না। সংবাদটিতে চাঁদপুর কণ্ঠের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মিজানুর রহমান লিখেছেন, চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে ইসলামিয়া পরিবহন নামে একটি পণ্যবাহী ট্রলার থেকে ব্যবসায়ীদের কেনা ডিও’র ৬৪০ বস্তা চিনি ও ৩৬০ ড্রাম সয়াবিন তেল বিভিন্ন জায়গায় পাচার এবং বিক্রির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় মামলা হলে ৪০ ড্রাম ভোজ্য তেল দাউদকান্দির আশিষ ভাণ্ডার থেকে উদ্ধার করে দাউদকান্দি মডেল থানা পুলিশ। আর ১৪ এপ্রিল ভোরে ১৩৬ বস্তা চিনি চাঁদপুর সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের কানুদি গোলাপ পাটোয়ারীর গোডাউন থেকে উদ্ধার করে চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশ।

পুলিশ ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সূত্র জানায়, নারায়ণগঞ্জের রুপগঞ্জ থানার রূপসী সিটি মিল থেকে ইসলামিয়া পরিবহন নামে ট্রলারটি চিনি ২৫৬০ বস্তা, ময়দা ৭২০ বস্তা, সয়াবিন ও পামওয়েল ৬৪৫ ড্রাম খুলনা নেয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। পথিমধ্যে মতলব উত্তরের ষাটনল এলাকায় সংঘবদ্ধ চক্র মালবাহী ট্রলারটি দাউদকান্দি এলাকায় নিয়ে ৩৬০ ড্রাম তেল নামিয়ে নিয়ে যায়। পরে সেই ট্রলার সেখান থেকে চাঁদপুর সদর উপজেলার কানুদি এলাকায় আসলে ৬৪০ বস্তা চিনি নামিয়ে রাখে।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, ট্রলার মালিক বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের কানুদি আজিজ বেপারীর ছেলে কাদের বেপারী, শরীয়তপুর তারাবুনিয়া ইউনিয়নের নাসির আখন্দের ছেলে আলমগীর আখন্দ ও কানুদি মিয়ার বাজারের গোলাপ পাটোয়ারী যৌথভাবে ট্রলার থেকে চিনি পাচার করে অন্যত্র বিক্রি করে দেয়। ট্রলার মালিক ও অন্যরা গত ১১ এপ্রিল মঙ্গলবার রাতে ট্রলার ডাকাতির নাটক সাজিয়ে চিনি ও তেলগুলো সরিয়ে ফেলে। এছাড়া ট্রলারে থাকা অবশিষ্ট চিনি তেল ও ময়দা নিয়ে খুলনার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। এই ঘটনায় মালের মালিক ইলিয়াস মতলব ও চাঁদপুরে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পর থেকেই ট্রলার মালিক কাদির বেপারী, আলমগীর আখন্দ ও গোলাপ পাটোয়ারী পলাতক রয়েছে। তাদেরকে আটক করলেই ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদ্ঘাটন করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন সচেতন মহল। এর আগের এক ঘটনায় মতলব উত্তরের মোহনপুরের মেঘনা নদী এলাকায় কার্গো জাহাজ থেকে আকিজ গ্রুপের চিনির একটি বড় চালান ডাকাতি হয়েছে মর্মে খোয়া যায়। সেই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা হয় এবং নদী পথে বিভিন্ন পণ্য পরিবহনের চোরাচালান নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে খুলনার ক’জন ব্যবসায়ীর কেনা বিপুল অর্থের তেল-চিনির চালান লোপাট হয়েছে বলে অভিযোগ উঠলো, যা মোটেও স্বস্তিকর নয়।

এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা-ডাকাতিয়া একসময় চোরাকারবারিদের নিরাপদ আস্তানা ছিলো। কোস্ট গার্ড ও নৌপুলিশের কার্যক্রম পুরোদমে চালু হলে সে আস্তানা ভেঙ্গে যায়। অনেক স্বস্তিপূর্ণ ও নিরাপদ হয়ে যায় চাঁদপুরের নৌপথ। সম্প্রতি নৌযানের কর্মচারীদের সাথে যোগসাজশে ডাকাতির নামে চোরাকারবারিরা যা করছে, তাতে চাঁদপুরের নৌপথ ভিন্ন আঙ্গিকে নিরাপত্তাহীনতায় আক্রান্ত হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। কাজেই সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষ সাবধান হোন এবং যে কোনো মূল্যে চাঁদপুরের নৌপথকে নিরাপদ রাখার প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ নিন। অন্যথায় চাঁদপুরের সুনাম বিপন্ন হবার সমূহ সম্ভাবনা এড়ানো যাবে না।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়