সোমবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৫  |   ২৯ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ গাজী গ্রেফতার

প্রকাশ : ১৩ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০

এমন নীরবতা বড় ক্ষতিকর
অনলাইন ডেস্ক

ফরিদগঞ্জে চাঁদপুর কণ্ঠের ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত এমরান হোসেন লিটন গতকাল বুধবার সরেজমিন সচিত্র প্রতিবেদন পরিবেশন করেছেন। ‘ঘটনাস্থল : ফরিদগঞ্জ ॥ সড়কে সরব ট্রাক্টর, নীরব ভূমিকায় প্রশাসন’ শীর্ষক সংবাদে তিনি লিখেছেন, ফরিদগঞ্জে যন্ত্রদানব ট্রাক্টর ও ট্রলির পেটে গ্রামীণ কাঁচা-পাকা রাস্তা। মাটি বহনকারী এই গাড়িগুলোর কারণে গ্রামীণ রাস্তায় বেশিরভাগ গর্ত তৈরি হয়। ফরিদগঞ্জ উপজেলার গ্রামাঞ্চলে ট্রাক্টর ও হর্ন-ব্রেকবিহীন ট্রলি প্রতিনিয়তই চলাচল করার কারণে রাস্তাঘাট ভেঙ্গে হাঁটু পরিমাণ গর্তে পরিণত হচ্ছে। বেহাল হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ নতুন-পুরাতন বহু সড়ক।

এছাড়া অদক্ষ চালকেরা বেপরোয়াভাবে ট্রাক্টর চালানোর কারণে প্রতিনিয়ত আতঙ্কে থাকে এলাকাবাসী। উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামগঞ্জে ট্রাক্টর-ট্রলি ব্যাপক চলাচলের কারণে ধূলো-বালিতে এলাকার পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। সেই সাথে গ্রামাঞ্চলের রাস্তাঘাটের যেমন ক্ষতি হচ্ছে, তেমনি বেপরোয়া চলাচল করায় দুর্ঘটনার আশঙ্কায় ভীত হচ্ছে জনসাধারণ। ট্রাক্টরের কারণে সাধারণ মানুষকে সবসময় আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হয়। আতঙ্কে থাকতে হচ্ছে কোমলমতি স্কুল শিক্ষার্থীদেরও।

জানা গেছে, প্রশাসন কর্তৃক এই দানব ট্রাক্টর চলাচল নিষিদ্ধ করা হলেও ফরিদগঞ্জে এগুলো অবাধে চলাচল করছে। দুর্ঘটনার আশঙ্কা প্রকাশ করে একাধিক সাধারণ মানুষ জানান, এলাকার ইটভাটা মালিক ও প্রভাবশালী মহলের ক্রয়কৃত এসব ট্রাক্টর-ট্রলি জমি থেকে মাটি কেটে বিভিন্ন ইটভাটায় নিচ্ছে। এছাড়া পরিবহন করছে বালু ও ইট। এতে করে যেমন নিচু হচ্ছে জমি, অপরদিকে ভেঙ্গে ধূলিসাৎ হয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ যোগাযোগের কার্পেটিং করা রাস্তা ও মেঠোপথ। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বহু রাস্তা। সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে বিভিন্ন এলাকায় অকালে নিভে যাচ্ছে তাজা প্রাণ। পঙ্গুত্ববরণ করেছে বিভিন্ন বয়সী মানুষ। অথচ ট্রাক্টর মালিকেরা কোনো কিছুর তোয়াক্কা করছে না। ছোটখাট দুর্ঘটনা ঘটলে যৎসামান্য চিকিৎসা খরচ দিয়ে পুনরায় সড়কে চলছে ইটভাটার ওইসব দানব। অথচ এসব বিষয়ে নির্বিকার উপজেলা প্রশাসন।

কয়েকজন মোটরসাইকেল চালক এবং সিএনজি অটোরিকশা চালক বলেন, কর্তৃপক্ষ শুধু আমাদের ওপর বিভিন্ন সময় অভিযান চালায়। কিন্তু ওইসব দানব পরিবহনের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয় না। ভুক্তভোগী জনসাধারণ অতি দ্রুত ট্রাক্টরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।

এই প্রতিবেদনে মোটরসাইকেল চালক ও সিএনজি অটোরিকশা চালকদের যে বক্তব্য উদ্ধৃত করা হয়েছে, তা সঠিক। তবে এ দুটি যানবাহনের অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযান না চালালে যে অরাজকতা হতো, সেটা নিশ্চিত বলা যায়। এটা স্বীকার করতেই হবে যে, দু চাকার মোটরসাইকেল, তিন চাকার সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও ব্যাটারী চালিত অটোবাইক সড়কের ক্ষতি করে না বললেই চলে। কিন্তু বেপরোয়া চলাচলে দুর্ঘটনা ঘটায়। আর ট্রাক্টর-ট্রলি দুর্ঘটনা তো ঘটায়ই, সাথে কাঁচা-পাকা সহ সব ধরনের সড়কের বারোটা বাজিয়ে ফেলে। এটা প্রশাসন ভালো করেই জানে, কিন্তু অবৈধ ট্রাক্টর-ট্রলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণে নীরব ও উদাসীন। এটা যে কারণেই হোক, সেটা দুঃখজনক এবং ফরিদগঞ্জ কেনো, যে কোনো এলাকার জন্যই ক্ষতিকর। আমরা এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার মহোদয়ের কার্যকর পদক্ষেপ প্রত্যাশা করছি। সাথে সাথে এমপি মহোদয়েরও সুদৃষ্টি কামনা করছি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়