প্রকাশ : ১৩ ডিসেম্বর ২০২২, ০০:০০

জুয়া একটা পুরানো খেলা। এই খেলাটা যে কতোভাবে হয় তার বিবরণ দেয়া কঠিন। চলমান ফুটবল বিশ্বকাপ নিয়ে তো যত্রতত্র চলছে জুয়া। জুয়ার আসর নিরিবিলি ও নিরাপদ জায়গায় যেমন বসে, তেমনি হাটবাজার, মেলা তথা জনাকীর্ণ স্থানেও বসে। জুয়া কখনও কখনও অনুমোদিত হয়, আর অননুমোদিত হয় অধিকাংশ সময়। জুয়া আয়োজনের পেছনে পেশাদার কিছু জুয়াড়ি ঝুঁকিপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এরা জুয়া নিয়ে গতানুগতিক ভাবনায় যেমন নিমগ্ন থাকে, তেমনি উদ্ভাবনী কিছু করার চেষ্টাও করে। পেশাদার জুয়াড়িদের মধ্যে প্রভাবশালী লোকজন থাকে, যারা জুয়া আয়োজনে ঝক্কি-ঝামেলা মোকাবেলায় নানা মহলকে ম্যানেজ করে। সেজন্যে জুয়া পুরোপুরি বন্ধ হয় না। কোথাও না কোথাও চলতেই থাকে।
মাদক যে কোনো সমাজের জন্যে বড় একটি সমস্যা। এই মাদক সেবন ও বিক্রির পেছনে পেশাদার কিছু লোকের সংশ্লিষ্টতা আছে। এদের হাত থাকে অনেক লম্বা। এরা যেভাবে বিভিন্ন মহলকে ম্যানেজ করে মাদক দ্বারা সুন্দর সমাজকে কলুষিত করে, তার অনুসন্ধান করতে গেলে চোখ ছানাবড়া হয়ে যায়। এদের কেউ কেউ এতোটা মুখোশধারী যে, যাদের প্রকৃত পরিচয় জানলে রীতিমত স্তম্ভিত হতে হয়।
পেশাদার জুয়াড়ি ও মাদক ব্যবসায়ীদের অনেকে এতোটা বিলাসবহুল জীবনযাপন করে যে, যাদের দেখে কেউ কেউ জুয়া-মাদকে জড়িয়ে পড়তে উৎসাহিত হয়। সেজন্যে জুয়া-মাদক নির্মূল তো দূরের কথা, কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অনীহা প্রকাশ করে। চাপে পড়ে মাঝে মধ্যে যতোটুকু করে এবং ফলাও করে প্রকাশ করে, তার পেছনেও খুঁজে পাওয়া যায় বিশেষ উদ্দেশ্য। অবশ্য ঢালাওভাবে মাদকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণকারীদের বিষয়ে প্রাগুক্ত পর্যবেক্ষণ ও মন্তব্য যথার্থ নয়। মন্তব্যের বাইরে অবস্থানকারীদের সংখ্যাও আবার খুব কম নয়। সেজন্যে হতাশা থাকে সচেতন মহল ও পর্যবেক্ষকদের মাঝে।
আমাদের দেশে অভিজাত ক্লাবগুলোর আয়ের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ আসে জুয়া থেকে। সেসব ক্লাবে সেজন্যে কোনো অভিযান চালাতে থাকে প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য যতো মানা। এই মানাই যত্রতত্র জুয়া চালানোর ক্ষেত্রে পেশাদার জুয়াড়িদের জন্যে প্রশ্রয় হিসেবে কাজ করে। এ বিষয়টি যাদের গভীরভাবে ভাবা উচিত তারা ভাবে না। কারণ, এ ভাবনায় বাধ সাধে লাভালাভের প্রশ্ন।
গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠের প্রথম পৃষ্ঠায় ‘সাহেববাজারে জুয়া ও মাদক ব্যবসা জমজমাট শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদে মাদক ও জুয়ার সাথে সংশ্লিষ্টদের ভয়ে ভুক্তভোগী এলাকাবাসীর মুখ না খোলার বিষয়টি উঠে এসেছে। এটি উদ্বেগজনক। এই উদ্বেগ নিরসনে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে পুলিশ যদি এগিয়ে যায়, তাহলে এলাকাবাসী পেতে পারে স্বস্তি। চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নস্থ সাহেববাজারের চারপাশের জনপদের মানুষ এই কাঙ্ক্ষিত স্বস্তি লাভ করুক-সে প্রত্যাশা ও দাবি করছি।