সোমবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৫  |   ২৯ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ গাজী গ্রেফতার

প্রকাশ : ১০ নভেম্বর ২০২২, ০০:০০

পল্লী বিদ্যুতের এমন গণশুনানি সর্বত্র দরকার
অনলাইন ডেস্ক

১৯৭৭ সালে জারিকৃত রাষ্ট্রপতির এক অধ্যাদেশ বলে গঠিত বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বিআরইবি, সংক্ষেপে আরইবি) ১৯৭৮ সাল থেকে কার্যক্রম শুরু করে। ২০১৩ সালে রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশটি রহিত হলে বর্তমানে আরইবি চলছে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড আইন, ২০১৩ দ্বারা। শুরুর দিকে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি, সংক্ষেপে পিডিবি)-এর বিশালত্বের কাছে আরইবি ছিলো ক্ষুদ্র একটি প্রতিষ্ঠান। আর বর্তমানে বাংলাদেশের সবচে’ বড় বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান, যা প্রধানত পুরো দেশের গ্রামীণ এলাকায় বিদ্যুৎ লাইন ও বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র তৈরি করে। ২০১১ সাল পর্যন্ত আরইবির উদ্যোগে ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি গঠিত হয়। এই সমিতিসমূহ সরকারের ‘ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ’ কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশে শতভাগ বিদ্যুতায়ন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

আরইবি প্রতিষ্ঠার দু বছর পর ১৯৮০ সালের ২৫ জুন হাজীগঞ্জের আলীগঞ্জে সদর দপ্তর স্থাপন করে কার্যক্রম শুরু করে চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। তখন এটি পুরো চাঁদপুর জেলাসহ সন্নিহিত অঞ্চলেও বিদ্যুৎ সরবরাহের কার্যক্রম চালায়। বর্তমানে এ সমিতি দুভাগে বিভক্ত হয়েছে। একটি চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ (সদর দপ্তর আলীগঞ্জ) এবং অন্যটি চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ (সদর দপ্তর বাবুরহাট, চাঁদপুর)। সমিতি-১-এর আওতায় ৩ লাখ ৩৫ হাজার ৭৫১ জন গ্রাহক এবং সমিতি-২-এর আওতায় ৪ লাখ ৩৮ হাজার ৪৩১ জন গ্রাহক রয়েছে।

পিডিবি দেশের বিদ্যুৎ অবকাঠামো নির্মাণ, দেশের অধিকাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং শহর-নগরে বিদ্যুৎ বণ্টনে দায়বদ্ধ। তাদের গ্রাহকদের অধিকাংশ এখন প্রি-পেইড মিটারের আওতায়। সেজন্যে গ্রাহক পর্যায়ে তাদের ঝামেলা পূর্বের চেয়ে অনেক কম। অন্যদিকে আরইবির আওতায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি গ্রামীণ পর্যায়ে বিদ্যুৎ সেবা দিতে গিয়ে গ্রাহক পর্যায়ে বহুবিধ ঝামেলার সম্মুখীন। বিদ্যুৎ ব্যবহারের পর গ্রাহকদের নিকট বিল পৌঁছে দিলেই তবে তারা সেটি আদায় করতে পারে। এ বিল নিয়ে সমিতি কর্তৃপক্ষকে শুনতে হয় ভূতুড়ে বিল, অতিরিক্ত বিলের অপবাদ। এছাড়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ তো রয়েছেই। গ্রামাঞ্চলে ব্যাপক লোডশেডিংয়ের কারণে ‘বিদ্যুৎ যায় না, মাঝে মাঝে আসে’ এমন কথাও শুনতে হয়। উপর্যুপরি অনেক প্রভাবশালী গ্রাহকের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া পড়ার যন্ত্রণা সইতে হয়। মাঝে মাঝে মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে গিয়ে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উশৃঙ্খল গ্রাহক কর্তৃক হেনস্তার শিকার হতে হয়।

গ্রাহকদের সাথে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কর্তৃপক্ষ তথা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যে বিরাট দূরত্ব তৈরি হয়েছে কিংবা রয়ে গেছে সেটা একেবারে স্পষ্ট। কিন্তু সেটা সকলে বুঝে না। অবশেষে সেটি বুঝছেন চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২-এর জেনারেল ম্যানেজার দেব কুমার মালো। তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দ্বারা আদিষ্ট হয়ে কিংবা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে গত ৮ নভেম্বর ২০২২ মঙ্গলবার সকালে মতলব উত্তরে পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক সচেতনতায় এক গণশুনানির আয়োজন করেছেন। এতে তাঁর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন মতলব উত্তর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম.এ. কুদ্দুস। এই গণশুনানিতে খোলামেলা অনেক আলোচনা হয়, পারস্পরিক সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা হয়, যথাসময়ে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের তাগিদ দেয়া হয় এবং গ্রাহকদের সাথে দূরত্ব কমাবার প্রয়াসগুলো তুলে ধরা হয়। নিঃসন্দেহে এমন উদ্যোগ প্রশংসনীয়। এ উদ্যোগ শুধু মতলব উত্তরে নয়, দেশের সর্বত্র বাস্তবায়ন করা দরকার বলে আমরা মনে করি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়