প্রকাশ : ১১ অক্টোবর ২০২২, ০০:০০
নৌ পর্যটনে চাঁদপুর জেলার অপার সম্ভাবনার কথা স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ স্কাউটের ৬ষ্ঠ জাতীয় কমডেকা (কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট ক্যাম্প) উদ্বোধন করতে এসে বলেছেন। হাইমচর উপজেলার আলগী দক্ষিণ ইউনিয়নের চরভাঙ্গা এলাকায় মেঘনা নদীর পূর্ব পাড়ে প্রায় একশ’ একর সমতল ভূমিতে আয়োজিত কমডেকা কার্যক্রম উদ্বোধন করতে প্রধানমন্ত্রী আসেন ২০১৮ সালের ১ এপ্রিল। তিনি ওই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যেমন বলেছেন, চাঁদপুর স্টেডিয়ামে আয়োজিত ওইদিনকার জনসভায়ও চাঁদপুরের নৌ পর্যটন সম্ভাবনার কথা বলেছেন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। তারপর গত সাড়ে চার বছরে সেই নির্দেশ পালনের দৃশ্যমান তৎপরতা কতোটুকু সেটি বিশ্লেষণ না করে এতোটুকু বলবো, সরকারের লোকজন আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় প্রধানমন্ত্রীর কথা দ্রুত আমলে না নিলেও বেসরকারি লোকজন ঠিকই দ্রুত আমলে নিয়েছেন। এমনই একজন মতলব উত্তরের কাজী মিজানুর রহমান। তিনি মোহনপুর এলাকায় মেঘনার তীরে প্রায় তিনশ’ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করে কক্সবাজারের আদলে নির্মাণ করেছেন এক আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র, যার নাম দিয়েছেন মোহনপুর পর্যটন লিমিটেড। এটিতে মিঠা পানির সৈকত সৃষ্টি করা হয়েছে, যেখানে গেলে সমুদ্রের লোনা পানির সৈকতের আমেজ অনুভব করা যায় এবং সূর্যাস্তের দৃশ্য উপভোগ করা যায়। এখানে রয়েছে থিম পার্ক, কটেজ, মার্কেটসহ বিভিন্ন ধরনের বিনোদন ব্যবস্থা, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অত্যাধুনিক রেস্তোরাঁ, পাঁচ হাজার লোক একসঙ্গে বসে সভা-সেমিনার করার মতো ব্যবস্থা, উন্মুক্ত বার বি কিউ কর্নার, ঝাউবন সহ বিভিন্ন রেস্তোরাঁ। চাঁদপুর ও নারায়ণগঞ্জ থেকে লঞ্চযোগে সরাসরি এবং অন্যান্য স্থান থেকে ইঞ্জিন চালিত নৌকায়, স্পীড বোটে, প্রাইভেট গাড়িসহ ছোট যানবাহনে এ পর্যটন কেন্দ্রে যাতায়াত করা যায়। এ পর্যটন কেন্দ্রে আপাতত তিনশ’ লোকের কর্মসংস্থান হলেও ভবিষ্যতে দু হাজার লোকের কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা রয়েছে।
মোহনপুর পর্যটন কেন্দ্রে মেঘনা নদীতে নিরাপদে গোসল করা ও সাঁতার কাটার ব্যবস্থা থাকলেও গত ৭ অক্টোবর শুক্রবার এখানে সাঁতার কাটতে গিয়েই পানিতে ডুবে মারা গেছে আবির আহম্মেদ নামে ১২ বছর বয়সী এক শিশু। সে চাঁদপুর শহরের প্রফেসর পাড়া এলাকার বাসিন্দা সুমন মিয়ার ছেলে।
চাঁদপুর বড় স্টেশন মোলহেডে প্রস্তাবিত পর্যটন কেন্দ্রে ও নিকটবর্তী ‘মিনি কক্সবাজার’ নামক চরে পর্যটকদের প্রাণহানির ঘটনা ঘটলেও ২০২০ সালে নির্মিত মোহনপুর পর্যটন কেন্দ্রে কারো প্রাণহানির ঘটনা ইতোমধ্যে গণমাধ্যমে দেখা যায় নি, আবিরের মৃত্যুতে যতোটা দেখা গেছে। সেজন্যে এখানকার কর্মচারীদের আরো সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। কেননা আনন্দ-বিনোদনের স্থলে নিরানন্দের ঘটনা কারোই কাম্য নয়।