প্রকাশ : ০৪ অক্টোবর ২০২২, ০০:০০
এমন বক্তব্যের অনুকূলে হোক যথার্থ কাজ
গত ২ অক্টোবর রোববার সকাল ১১টায় চাঁদপুরের জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান-২০২২ বাস্তবায়ন বিষয়ক জেলা টাস্কফোর্স কমিটির প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে জেলা প্রশাসক কামরুল হাসানের সভাপতিত্বে পুলিশ সুপার, নৌ পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক), ইলিশ গবেষণা কর্মকর্তা, কোস্টগার্ড কর্মকর্তা, মৎস্য কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ, নদী তীরবর্তী ইউনিয়নগুলোর চেয়ারম্যান, মৎস্যজীবী সংগঠন সমূহের নেতৃবৃন্দ, মৎস্য ব্যবসায়ী, বরফকল মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দসহ টাস্কফোর্স কমিটির অন্য সদস্যবৃন্দ অংশ নেন।
|আরো খবর
এই সভায় জেলা প্রশাসক সভাপতির বক্তব্যে বলেন, আগামী ৭ অক্টোবর থেকে ২২ দিনব্যাপী মা ইলিশ রক্ষার প্রয়োজনে এবার নদীতে ২৪ ঘন্টাই অভিযান অব্যাহত রাখা হবে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নদীযুক্ত খালগুলোর মুখ বন্ধ করে দিতে হবে। প্রয়োজনে নৌকা থেকে ইঞ্জিন খুলে রাখতে হবে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি অভিযান হবে এবং যথাযথভাবে শক্তভাবে হবে। প্রশাসনের সকল বিভাগের সমন্বয়ে যৌথভাবে অভিযান চালানো হবে। কোথায় বরফ বিক্রি করবে সেটাও আমরা মনিটরিংয়ে রাখবো। চাঁদপুরের পাশর্^বর্তী শরীয়তপুর ও মুন্সিগঞ্জসহ অন্য যেসব জেলা রয়েছে সেসব জেলার সাথে সমন্বয় মিটিং করা হবে। ২২ দিন যদি আমরা অভিযানটা সফলভাবে সম্পন্ন করতে পারি, তাহলে চাঁদপুরের ইলিশের যে গৌরব সেটি আবার ফিরে আসবে। অভিযান সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্যে যা যা করা দরকার আমরা তা-ই করবো।
জেলা প্রশাসকের এ বক্তব্যকে গতানুগতিক বলা যাবে না। কারণ, এ বক্তব্যে অভিযানের সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা রয়েছে। সেজন্যে এ বক্তব্যের অনুকূলে এবার মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান পূর্বের চেয়ে অনেক বেশি কার্যকরভাবে সম্পন্ন হবে বলে আশা করা যায়।
অতীতের বছরগুলোতে জাটকা সংরক্ষণ ও মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানের শুরুতে অর্থাৎ ২-৪ দিন অনেক বেশি তোড়জোড় বা সক্রিয়তা দেখা গেলেও পরে তাতে ভাটা দেখা গেছে। মধ্যবর্তী সময়টাতে দায়সারা অভিযান এবং শেষের দিকে জোরদার অভিযানের প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। এ দুটি অভিযান সফল করার জন্যে সরকারের জেলা ও উপজেলা মৎস্য বিভাগ মূল কাজ করার কথা। কিন্তু জনবল ও উপকরণের দিক দিয়ে মোটেও স্বাবলম্বী নয় মৎস্য বিভাগ। নদীতে অভিযান চালানোর মতো তাদের নিজস্ব রেসকিউ বোট, স্পীড বোট, ইঞ্জিনচালিত নৌকা এবং অস্ত্রধারী লোকবল নেই। জেলা উপজেলা টাস্কফোর্স কমিটির সহায়তা ছাড়া পৃথকভাবে কোনো অভিযান চালানোর মতো সামর্থ্য নেই এই মৎস্য বিভাগের। অবস্থা এমন-‘ঢাল নেই তলোয়ার নেই নিধিরাম সর্দার’।
আমরা মনে করি, কেবল জাটকা ও মা ইলিশ সংরক্ষণে নয়, পুরো মৎস্য সম্পদ রক্ষায় যথার্থ ভূমিকা রাখার জন্যে সরকারের মৎস্য বিভাগকে জনবল ও উপকরণে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে হবে। খুব বেশি প্রয়োজন নেই এমন খাতে সরকার অনেক অর্থ ব্যয় করলেও মৎস্য বিভাগে কেনো প্রয়োজনীয় অর্থ ব্যয় করছে না সেটা বোধগম্য নয়। এ ব্যাপারে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট অন্য সকলের জোরালো ভূমিকা প্রত্যাশা করছি।