শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৪ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জে সংবাদকর্মীর কন্যাকে অপহরণ চেষ্টায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের
  •   লক্ষ্মীপুরে মাদকসহ বাবা ও দুই ছেলে আটক
  •   চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন মামলার ৮ আসামী আটক
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার

প্রকাশ : ২৩ আগস্ট ২০২২, ০০:০০

অরাজকতা করে উচ্ছেদের প্রয়াস?

অরাজকতা করে উচ্ছেদের প্রয়াস?
অনলাইন ডেস্ক

গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠের শেষ পৃষ্ঠায় শীর্ষ সংবাদের শিরোনামটাই মর্মস্পর্শী--‘নিরাপত্তাহীনতায় ভুক্তভোগী পরিবার ॥ কচুয়ায় ইউপি সদস্যের উপস্থিতিতে নিরীহ পরিবারের বাড়িঘর ভাংচর’। এ সংবাদটিতে যে তিনটি ছবি স্থান পেয়েছে, সেগুলোই যেনো ঘটনার সত্যতা প্রমাণের জন্যে অনেক সহায়ক।

গত ১৮ আগস্ট বৃহস্পতিবার দুপুরে কচুয়া উপজেলাধীন ৯নং কড়ইয়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের নির্বাচিত ইউপি সদস্য আব্দুল জলিলের উপস্থিতিতে তার প্রবাসী ভাই জাহাঙ্গীরের স্ত্রী হাসিনা বেগমের মদদপুষ্ট লোকজন উক্ত নিরীহ পরিবারের ওপর হামলা চালায়। কচুয়া-কালিয়াপাড়া সড়কের পাশে নোয়াগাঁও ব্রীজ সংলগ্ন উত্তর পাশে সংঘটিত হামলায় ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।

এ জঘন্য হামলার শিকার হয়েছেন নোয়াগাঁও গ্রামের আলাউদ্দিন বেপারী বাড়ির মৃত আব্দুল খালেকের স্বামী পরিত্যক্তা মেয়ে তাহমিনা বেগমের পরিবার। নিরীহ-অসহায় তাহমিনা জানান, আমি নিতান্তই এক হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান। স্বামী কর্তৃক পরিত্যক্ত হয়ে আমার এগার বছর বয়সী ছেলে ও মাকে নিয়ে নোয়াগাঁও ব্রীজ সংলগ্ন খালের উত্তর পাশে দক্ষিণ নোয়াগাঁও মৌজার ১৭০০ দাগে আমার পৈত্রিক সম্পত্তিতে ঘর উঠিয়ে গত ৭-৮ বছর ধরে বসবাস করে আসছি। বৃহস্পতিবারে হামলাকারীরা ইউপি মেম্বার আঃ জলিলের উপস্থিতিতে আমার বসতঘর, রান্নাঘর, টয়লেট ভাংচুর করে পাশের পুকুর ও খালে ফেলে দেয়। এমনকি আমার ব্যবহৃত নলকূপটি পর্যন্ত খুলে নিয়ে যায়। এ সময় আমার ছেলে ও মা সহ আমি হামলা ঠেকাতে দিয়ে বেদম মার খাই। উপায়ন্তর না পেয়ে সাহায্যের জন্যে ৯৯৯ নম্বরে ফোন দেয়ার পর কচুয়া থানার এসআই আব্দুস সামাদ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছলে হামলাকারীরা সটকে পড়ে। পুলিশ চলে গেলে আমি সিএনজি অটোরিকশাযোগে থানায় অভিযোগ দায়েরের উদ্দেশ্যে রওনা দেই। পথিমধ্যে হাসিনা বেগমের লেলিয়ে দেয়া লোকজন অটোরিকশা আটকিয়ে চালককে মারধর করে এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে আমাকে থানায় যেতে দেয়নি। আমি বসতঘর হারিয়ে অন্যের ঘরে মানবেতর জীবনযাপন করছি এবং হাসিনা গংয়ের বিভিন্ন হুমকি-ধমকির মুখে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

হামলার উদ্যোক্তা হাসিনা বেগমের দাবি হচ্ছে, তাহমিনা যে স্থানে ঘর উঠিয়ে বসবাস করছে সে স্থানটি জেলা পরিষদ থেকে আমি লিজ নিয়েছি। আমি তাহমিনার ঘর-দরজা ভাংচুর করি নি, তবে তার লিজকৃত জায়গায় তাহমিনা নূতন করে ঘর তৈরির উদ্যোগ নিলে আমরা বাধা দিতে যাই। এতে তাহমিনা ও তার লোকজনেরা আমাদেরকে মারধর শুরু করলে আমরাও পাল্টা মারধর করি। তাহমিনা এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার বসতঘর ১৭০০ দাগে, আর হাসিনা গং লিজ নিয়েছেন ১৩৯৯ দাগে।

কচুয়া উপজেলায় কর্মরত সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ ইবনে আল জায়েদ হোসেন বলেন, ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে। কচুয়া থানার এসআই আব্দুস সামাদ জানান, ভাংচুরের ঘটনা আমি প্রত্যক্ষ করেছি। উভয় পক্ষকে আমি থানায় আসতে বলেছি।

এই দু সরকারি কর্মকর্তার আশ্বাস স্বামী পরিত্যক্তা অসহায় তাহমিনা বেগমের জন্যে অবশ্যই আশাপ্রদ। কিন্তু তাহমিনা বেগম তো তাঁদের কাছে অভিযোগ দায়েরের জন্যে যাবার সুযোগ পেতে হবে। আমরা মনে করি, এ সুযোগ কড়ইয়া ইউপি চেয়ারম্যানকেই করে দিতে হবে, কেননা তার ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুল জলিলের উক্ত ঘটনার সাথে সরাসরি সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। অবশ্যই বলা দরকার, লিজ গ্রহীতাকে জায়গা বুঝিয়ে দেয়ার দায়িত্ব ইউপি সদস্যের নয়। লিজ প্রদানকারী লিজ গ্রহীতাকে দখল বুঝিয়ে দিতে অবৈধ দখলদারকে আগাম নোটিস প্রদানপূর্বক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে উচ্ছেদ অভিযান চালাতে পারে। কিন্তু কড়ইয়ার নোয়াগাঁও গ্রামে যেটি হয়েছে, সেটি অনেক বাড়াবাড়ি হয়েছে, যাকে অরাজকতা বললে অত্যুক্তি হবে বলে আমরা মনে করি না।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়