শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২৪  |   ৩০ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জে সংবাদকর্মীর কন্যাকে অপহরণ চেষ্টায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের
  •   লক্ষ্মীপুরে মাদকসহ বাবা ও দুই ছেলে আটক
  •   চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন মামলার ৮ আসামী আটক
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার

প্রকাশ : ০২ আগস্ট ২০২২, ০০:০০

কী কঠিন কথা বললেন তিনি!

কী কঠিন কথা বললেন তিনি!
অনলাইন ডেস্ক

গত রোববার কচুয়া বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজ মিলনায়তনে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের আয়োজনে শিক্ষার মানোন্নয়নে এক মতবিনিময় ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও চাঁদপুর-১ (কচুয়া)-এর জাতীয় সংসদ সদস্য ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর। বিশেষ অতিথি ছিলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত ইতিহাসবিদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার, লেখক ও গবেষক অধ্যাপক ড. মুনতাসির মামুন। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, অতীতের মতো আজ শিক্ষকদের মান মর্যাদা ও সম্মান নেই। অতীতে শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের পা ছুঁয়ে সালাম করতো ও দোয়া নিতো। এখন শিক্ষকরা রাজনীতিবিদদের কাছে ছুটে যেতে হয়। কিন্তু অতীতে রাজনীতিবিদরা শিক্ষকদের নিকট ছুটে আসতো। এ অবস্থার প্রধান কারণ শিক্ষকতার বৈশিষ্ট্য নিয়ে শিক্ষকরা তাদের দায়িত্ব পালন করছেন না। পেশাজীবী হিসেবে বেসরকারি শিক্ষকরা যে পরিমাণ সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার কথা তা পাচ্ছেন না। একজন বেসরকারি শিক্ষকের বেতন সরকারিভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত অফিসের দারোয়ানের সমতুল্য। তাই শিক্ষকদের কাছ থেকে দারোয়ান-সমতুল্যের বেশি কিছু পাওয়া যাচ্ছে না। এ অবস্থা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। দেশের উন্নয়নের লক্ষ্যে বহু অর্থ ব্যয়ে পদ্মা সেতু নির্মাণসহ বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। কিন্তু দেশ গড়ার কারিগর হিসেবে শিক্ষক সমাজের উন্নয়নে যথাযথ পদক্ষেপ আজও নেয়া হয়নি। শিক্ষকদের মান-সম্মান ও ঐতিহ্য অটুট রাখতে অবশ্যই তাদেরকে উত্তম বৈশিষ্ট্য অনুসরণ করে দায়িত্বপালন করতে হবে। উক্ত সভায় কচুয়ার ৮৬টি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষক-কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করেন। যারা ড. মুনতাসির মামুনের প্রাগুক্ত কঠিন কথাগুলো শুনে নিজেদের দুরবস্থায় সান্ত¡না খুঁজেছেন হয়তো।

এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষকরা মূল বেতনের ২৫ শতাংশ উৎসব বোনাস, মাসিক এক হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া ও ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা এবং বার্ষিক ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট পেয়ে থাকেন। অথচ এমন শিক্ষকদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে বহুতল ভবনসহ নানা অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে এবং হচ্ছে। আজকাল এক হাজার টাকায় গ্রামের কোথাও কুঁড়ে ঘর ভাড়া পাওয়া গেলেও শহরে তো কল্পনাও করা যায় না। রিকশাচালক, দিনমজুর, শ্রমিক, গৃহকর্মী বা বুয়ারাও ২-৩ হাজার টাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করে। এমতাবস্থায় বেসরকারি শিক্ষকদের মাসিক বাসা ভাড়া বাবদ এক হাজার টাকা প্রদান করা পরিহাসমূলক। বর্তমানে রেজিস্টার্ড ভালো চিকিৎসকদের রোগী দেখার ফি হচ্ছে পাঁচশ টাকা। আর বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফি ও ঔষধ কেনা বাবদ শত শত বা হাজার হাজার টাকা তো লাগেই। এমতাবস্থায় বেসরকারি শিক্ষকদের মাসিক পাঁচশ টাকা মেডিকেল ভাতা দেয়া অবাস্তব সম্মত।

নানা কারণে দেশে ক্রান্তিকাল চলছে। কঠিন পরিস্থিতির আশঙ্কায় সকলেই কমণ্ডবেশি দুশ্চিন্তাগ্রস্ত। এমন বাস্তবতায় বেসরকারি শিক্ষকদের উস্কে দেয়ার উদ্দেশ্যে আমাদের এ সম্পাদকীয় নিবন্ধ নয়। ড. মুনতাসির মামুন কর্তৃক বেসরকারি শিক্ষকদের সম্পর্কে উচ্চারিত কঠিন কথাগুলো সরকারকে সংবেদনশীলতার সাথে সুবিবেচনায় রাখার জন্যে আমাদের সনির্বন্ধ অনুরোধ থাকলো। আমরা মনে করি, দেশ গড়ার কারিগর শিক্ষকদের যথাযথ বেতন-ভাতা প্রদানের বিষয়টিতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব না দিয়ে কেবল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত উন্নয়নেই শিক্ষার প্রকৃত মানোন্নয়ন হতে পারে না।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়