প্রকাশ : ২৬ জুলাই ২০২২, ০০:০০
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকালীন ১নং সেক্টর কমান্ডার হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি (চাঁদপুর-৫) নির্বাচনী এলাকার চারবারের নির্বাচিত এমপি মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম গত ২৪ জুলাই বিকেলে শাহরাস্তি পৌরসভার মেয়র হাজী আব্দুল লতিফের বাসভবনে চাঁদপুরের সিনিয়র সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় মিলিত হন। এ সভায় শাহরাস্তি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নাসরিন জাহান শেফালী সাংবাদিকদেরকে এমপি মহোদয় তথা সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচারণার আওতায় আনার অনুরোধ জানান। এর জবাবে চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি এএইএম আহসান উল্লাহ বলেন, আমরা ঠিকই উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে সংবাদ পরিবেশন করি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দেই, কিন্তু এক শ্রেণীর সরকার দলীয় ঈর্ষাপরায়ণ নেতা তাতে লাইক বা কমেন্ট দেয়া তো দূরের কথা, বরং প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য বিরোধিতা কিংবা সমালোচনায় লিপ্ত হতে দেখা যায়। তার এমন বক্তব্যে সভাস্থল করতালিতে মুখরিত হয়ে উঠে।
একই দিন কচুয়ায় সংঘটিত হয়েছে এক দৃষ্টিকটু ঘটনা। এ ঘটনায় গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠে প্রকাশিত সংবাদের শিরোনাম হয়েছে ‘কচুয়ায় দুই ঘন্টার ব্যবধানে একই অ্যাম্বুলেন্স উদ্বোধন করলেন দুই নেতা’। এ সংবাদে লিখা হয়েছে, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক ৫০ শয্যাবিশিষ্ট কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জন্যে বরাদ্দকৃত একটি অ্যাম্বুলেন্স ২ ঘন্টার ব্যবধানে উদ্বোধন করলেন দুই কেন্দ্রীয় নেতা। সকাল ১১টার দিকে উদ্বোধন করেন চাঁদপুর-১ (কচুয়া) আসনের এমপি, সাবেক পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর। বেলা দেড়টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মিলনায়তনে ব্যাপক আয়োজনের মধ্য দিয়ে নতুন অ্যাম্বুলেন্সটি উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ রোকেয়া সুলতানা। একটি অ্যাম্বুলেন্সের এমন দুদফা উদ্বোধনে স্থানীয় নেতা-কর্মীসহ জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
আমাদের চাঁদপুর জেলার প্রায় সকল উপজেলায় শুধু সরকার বা শাসক দলে নয়, বিএনপি, জাতীয় পার্টির মতো বৃহৎ রাজনৈতিক দলসহ ছোট ছোট রাজনৈতিক দলগুলোতেও নেতা-কর্মীদের মাঝে দ্বিধা-বিভক্তি/বিরোধ তথা গ্রুপিং লক্ষ্য করা যায়। এর ফলে মাঝে মাঝে এমন দৃশ্যপট তৈরি হয়, তাকে শুধু দৃষ্টিকটু বললেও কম হয়ে যায়। আশ্চর্যজনক বিষয় হলো, এমন দৃশ্যপটের অবতারণা বার বার হলেও দলীয় প্রধান বা তাঁর পক্ষের কেউ তাতে সরাসরি বা প্রকাশ্য হস্তক্ষেপ করেন না। শোনা যায়, এমনকি বোঝা যায়, কেন্দ্রীয় প্রভাবশালী নেতাদের কেউ কেউ দলীয় অভ্যন্তরীণ বিরোধ বা গ্রুপিংয়ে ইন্ধন দিয়ে ফায়দা লোটেন। দলীয় সাধারণ নেতা-কর্মী ও নিরীহ জনগণ এমনটি মোটেও পছন্দ করেন না। কেননা এতে দলীয় আদর্শের বিচ্ছুরণের চেয়ে ক্ষমতা বা নেতৃত্বের দ্বন্দের উৎকট গন্ধ পাওয়া যায়।