প্রকাশ : ১৮ জুলাই ২০২২, ০০:০০
আতশবাজি নিয়ে জেলা প্রশাসকের বক্তব্য
গত ১০ জুলাই চাঁদপুর শহরের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ হিসেবে পরিচিত চাঁদপুরের পৌরপার্কে ঈদুল আজহার প্রধান জামাতে অংশ নেন চাঁদপুরের নবাগত জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান। তিনি নামাজ শুরুর পূর্বে তাঁর শুভেচ্ছা বক্তব্যে করোনা সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্যবিধি মানতে মাস্ক পরাসহ যে ক’টি বিষয়ে বক্তব্য রাখেন, তার মধ্যে প্রাধান্য পায় আতশবাজির বিষয়টি। তিনি বলেন, ৯ জুলাই রাতে আমার বাসভবনের সন্নিকটে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের সামনে আতশবাজির বিকট শব্দ শুনছিলাম। খোঁজ নিয়ে জানলাম, কিছু শিক্ষিত ছেলে এই আতশবাজি করছে। অথচ তাদের বোঝা ও জানার কথা, আতশবাজির বিকট শব্দে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের কতো বড় ক্ষতি হতে পারে। সেজন্যে বলছি, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সর্বোচ্চ সনদ নিয়েও অনেক শিক্ষার্থী বিবেকসম্পন্ন হয় না। তিনি এ ব্যাপারে অভিভাবকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। আতশবাজি নিয়ে জেলা প্রশাসক কোনো ধর্মীয় বিশ্লেষণে না গেলেও তাঁর উষ্মা প্রকাশ করেছেন সুস্পষ্টভাবে। এটা যৌক্তিক। যে কেউ যে কোনো আনন্দ বা উৎসব উদ্যাপন উপলক্ষে তার উল্লাস প্রকাশে আতশবাজি করতেই পারে। তাই বলে সেটা যদি হয় হাসপাতাল ও আবাসিক এলাকায়, তাহলে সেটা নিয়ে জেলা প্রশাসক কেনো, যে কোনো সচেতন ব্যক্তিই আপত্তি তুলতে পারে। কিন্তু এ আপত্তিকে যারা আমলে নেয়ার কথা, তারা সেটা নেয় না। বস্তুত এখানেই প্রশ্ন উত্থাপিত হয়।
|আরো খবর
আতশবাজি আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি নয়। উইকিপিডিয়া থেকে জানা যায়, আতশবাজি মূলত চীনের উদ্ভাবন। আতশবাজি করার একটি সাংস্কৃতিক অনুশীলন হলো অশুভ আত্মাকে ভয় দেখানো। চীনা নববর্ষ এবং মধ্য-শরৎ চাঁদ উৎসবের মতো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বিপুল পরিমাণে আতশবাজি ব্যবহৃত হয়। এমন দৃষ্টিনন্দন দৃশ্য দেখার জন্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে অজস্র পর্যটক দর্শনীয় স্থানগুলোতে ভিড় করেন। চীন বিশ্বের বৃহত্তম আতশবাজি প্রস্তুতকারক এবং রফতানিকারক দেশ।
আমাদের দেশে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আতশবাজির ব্যাপক প্রচলন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যে কোনো বড় ধরনের উৎসবে আতশবাজি যেনো অপরিহার্য অনুষঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে সেটা নির্দিষ্ট উৎসবস্থলেই মানায়। কোনো অবস্থাতেই হাসপাতাল, আবাসিক এলাকা ও মসজিদের সম্মুখে আতশবাজি গ্রহণযোগ্য নয়। আতশবাজির ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন এবং প্রাক সতর্কতা জারি বাঞ্ছনীয় বলে আমরা মনে করি।