শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২৪  |   ১৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জে সংবাদকর্মীর কন্যাকে অপহরণ চেষ্টায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের
  •   লক্ষ্মীপুরে মাদকসহ বাবা ও দুই ছেলে আটক
  •   চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন মামলার ৮ আসামী আটক
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার

প্রকাশ : ২০ জুন ২০২২, ০০:০০

খালে বিলে মাছ থাকবে কীভাবে?

খালে বিলে মাছ থাকবে কীভাবে?
অনলাইন ডেস্ক

গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠের তৃতীয় পৃষ্ঠায় প্রকাশিত ‘খালে বিলে মাছ নেই!’ শিরোনামে একটি ছবির ক্যাপসনে লিখা হয়েছে, চলছে বর্ষাকাল। গ্রামাঞ্চলের খালে, বিলে দেশীয় প্রজাতির মাছ ধরার এখন ভরা মৌসুম। কিন্তু খালে, বিলে মাছ নেই। এ নিয়ে জনসাধারণের প্রশ্ন হচ্ছে, তাহলে কি দেশীয় প্রজাতির মাছ বিলুপ্তির পথে? বিশেষ করে যারা মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে তারা রয়েছে আরো চিন্তায়। মৌসুমী মাছ ধরা জেলেরা বর্ষা মৌসুমে মাছ বিক্রির টাকায় সংসারে কয়েকটা দিন সচ্ছলতা আসার দিন গুণলেও তাতে গুড়ে বালি। খালে মাছ না পাওয়ায় এভাবেই ভেসাল জাল উঠিয়ে রাখে জেলেরা। শনিবার দুপুরে ছবিটি তোলা হয়েছে হাজীগঞ্জ উপজেলার গন্ধর্ব্যপুর উত্তর ইউনিয়নের মালিগাঁও বাজার সংলগ্ন গমের খাল থেকে। ছবিটি তুলেছেন কামরুজ্জামান টুটুল।

আমাদের দেশের খালগুলোতে আগের মতো পানি প্রবাহ নেই। তলদেশ ভরাট, কচুরিপানার রাজত্ব, দুপাড়ে দখলদারিত্বসহ নানা কারণে দেশের অধিকাংশ খাল মৃতপ্রায়। নামেই খাল, তাতে দেখা যায় না আগের মতো নৌকার পাল। কিছু খালে বর্ষা মৌসুমে নৌকা চললেও সেগুলো থাকে যন্ত্রচালিত। ছইওয়ালা নৌকাযোগে খালগুলোতে ভ্রমণের দৃশ্য এমন দেখা যায় না বললেই চলে। এমন নৌকায় এখন নাইয়র যায় না কেউ। নৌ চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় খালগুলোর গুরুত্ব এখন অনেক কমে গেছে। শুষ্ক মৌসুমে সেচের প্রয়োজনে কিছু খাল ব্যবহৃত হলেও অধিকাংশ খাল হয়ে গেছে বড় নালা-নর্দমার ন্যায়। বিভিন্ন বাসা-বাড়ির পয়ঃনিষ্কাশনের প্রধান মাধ্যম হয়ে গেছে এই খালগুলো। গৃহস্থালি ময়লা-আবর্জনা ফেলা এবং বিভিন্ন শিল্প-কারখানার বর্জ্য অপসারণের মোক্ষম স্থানও হয়ে গেছে খালগুলো। ফলে এ খালের পানি দূষণমুক্ত থাকার উপায় যেনো আর নেই।

নদী/খালের দুপাড়ে সাধারণত বিলগুলোর অবস্থান হয়ে থাকে। এগুলো হয় স্রোতহীন জলমগ্ন নিচু জায়গা। এগুলোতেও খালের পানির দূষণ ছড়িয়ে পড়ছে। এছাড়া আশেপাশের কৃষি জমিতে ব্যবহৃত রাসায়নিক সারের দূষণ প্রথমত বিলে এবং পরে খালে ছড়িয়ে পড়ছে। বৃষ্টির পানিতে কৃষি জমির রাসায়নিক সার ধুয়ে যাওয়ার সময় তাতে নাইট্রোজেন সমৃদ্ধ যৌগের উপস্থিতি পানির দ্রবণীয় অক্সিজেনের মাত্রায় ঘাটতি ঘটায়। এসব পানি যখন বিল, খাল, নদী ইত্যাদি জলাশয়ে গিয়ে পড়ে, তখন বিদ্যমান পানিতেও অক্সিজেনের মাত্রা কমিয়ে দেয়। ফলে ঐসব জলাশয়ে আর প্লাংটন জাতীয় উদ্ভিদ জন্মাতে পারে না, যা কিনা মাছের প্রাকৃতিক খাদ্য।

বস্তুত প্রাগুক্ত নানা কারণেই আমাদের দেশের খাল-বিলে দেশীয় প্রজাতির মাছের প্রাচুর্য কমে যাচ্ছে। তার ওপর নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল, ভেসাল জাল ইত্যাদির অবাধ ব্যবহারের ফলেও মাছের বংশ নির্বংশ হচ্ছে। কারণ, এসব জালে মাছের পোনা পর্যন্ত ধরা পড়ছে। দেশীয় প্রজাতির কিছু সুস্বাদু মাছকে টিকিয়ে রাখার কৃত্রিম পদ্ধতি অবলম্বন করে আমাদের মৎস্য বিজ্ঞানীরা ইতিবাচক ভূমিকা রাখলেও তারা কিন্তু খাল-বিল-নদী তথা প্রাকৃতিক জলাশয়গুলো দূষণমুক্ত রাখতে উচ্চকণ্ঠ হচ্ছে। কিন্তু সেটি সরকারের কর্ণকুহরে ঠিকমত ঢুকছে না। এ ব্যাপারে সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে ধীর গতিই পরিলক্ষিত হচ্ছে। এমতাবস্থায় খাল-বিলে তো বটেই, নদীতেও মাছের সঙ্কট প্রকট থেকে ক্রমশ প্রকটতর হচ্ছে। কাজেই সময় থাকতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ অতীব জরুরি বলেই আমরা মনে করি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়