প্রকাশ : ১৯ জুন ২০২২, ০০:০০
সাবেক জনপ্রতিনিধির সক্রিয়তা-নিষ্ক্রিয়তা
চাঁদপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান পদে নব্য ধনী এক ব্যক্তি প্রার্থী হবার ঘোষণা দিয়েই শুরু করেন দান-সদকার কাজ। তিনি গণসংযোগ করতে গিয়ে যেখানে যে সমস্যা প্রত্যক্ষ করেছেন, চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবার পর সে সমস্যার পূর্ণ সমাধানে প্রতিশ্রুতি শুধু দেননি, সাময়িক সমাধানে স্বীয় অর্থায়নে কাজ করে দিয়েছেন। কারো মৃত্যুর খবর পেয়ে জানাজায় দৌড়ে গেছেন, শোকাহত পরিবারকে সমবেদনা জানিয়েছেন এবং আর্থিক অনুদানও দিয়েছেন। তিনি দাওয়াত পেয়ে শুধু নয়, বিনা দাওয়াতেও মূল্যবান উপহার নিয়ে হাজির হয়েছেন অনেক বিয়ের অনুষ্ঠানে। কিন্তু ওই ব্যক্তি নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর আর প্রার্থী হননি। জানা গেছে, পরিবারের সদস্যদের চাপে তিনি মনোনয়নপত্র ক্রয়ের সুযোগও পাননি।
|আরো খবর
আমাদের দেশে জনপ্রতিনিধিত্ব করার খায়েশে অনেক ধনাঢ্য ব্যক্তি আগাম গণসংযোগ করতে গিয়ে দান-সদকায় নিজের আর্থিক সামর্থ্য ও উদারতা প্রদর্শন করার জন্যে অনেক কিছুই করেন। এদের কেউ কেউ নির্বাচিত হতে পারলে অনিয়ম-দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে সুদাসলে ঋণ আদায়ের মতো নির্বাচনপূর্ব দান-সদকায় ব্যয়িত অর্থের কয়েকগুণ পকেটস্থ করার হীন প্রয়াস চালান। আবার কেউ কেউ নির্বাচিত হয়ে সততাণ্ডস্বচ্ছতার সাথে নির্দিষ্ট মেয়াদের দায়িত্বপালন করেন, একই সঙ্গে স্বীয় অর্থে নানা ধরনের সমাজসেবামূলক কাজ অব্যাহত রাখেন। এরা পরবর্তী মেয়াদে নির্বাচিত হতে না পারলেও জনতার সাথেই মিলে মিশে থাকেন এবং স্বীয় সামর্থ্যে সমাজসেবায় অবদান রেখে নিজের সক্রিয়তা প্রমাণ করেন।
এর বিপরীত চিত্রই সমাজে দেখা যায় বেশি। জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হতে না পারার খেদে কেউ কেউ রাগ-অভিমানে জনবিচ্ছিন্ন থাকার প্রচেষ্টা চালান এবং এলাকার গরিব-দুঃখী মানুষের পাশে মোটেও দাঁড়ান না কিংবা কেউ দাঁড়াবার আহ্বান জানালে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এভাবে স্বীয় নিষ্ক্রিয়তা প্রমাণের দৃশ্যমান কাণ্ডে জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেন। তার ‘ফুলের মতো চরিত্র’ ও জনদরদী অবয়বসহ ইতিবাচক ইমেজকে ধূলিসাৎ করেন।
আবার সাবেক জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে বিরলদৃষ্টভাবে কেউ কেউ ধারাবাহিক সক্রিয়তা প্রদর্শন করেন। এমনটি যে নিঃস্বার্থ মানসিকতার পরিচায়ক, সেটি বলার অপেক্ষা রাখে না। চাঁদপুর সদর উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নে সদ্য সাবেক এক জনপ্রতিনিধির কমণ্ডবেশি সক্রিয়তা দেখে মনে হয়েছে, জনপ্রতিনিধিরা সত্যিকার অর্থে জনবান্ধব হলে, নিঃস্বার্থ সমাজসেবক হলে তারা নির্বাচিত হওয়া না হওয়ার বিষয়টিতে আবর্তিত হন না, তারা সর্বাবস্থায় জনস্বার্থে সক্রিয় থাকতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।