প্রকাশ : ০৭ জুন ২০২২, ০০:০০
মাঠবিহীন স্কুল ও পরিচর্যাহীন মাঠ প্রসঙ্গে
আমাদের দেশে এখন অনেক জায়গা নিয়ে নতুন কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ার প্রয়াস অনেকটাই বিরল। কেবল একটি ভবন করতে পারলেই হলো, তাতে ক্লাস শুরুর উদ্যোগে সংশ্লিষ্টরা খোঁজেন তৃপ্তি। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই এটি তৃপ্তিদায়ক বিষয় নয়। শিক্ষার্থীরা বাসা/বাড়ি থেকে নির্দিষ্ট সময়ে এসে ক্লাসরুমে ঢুকবে, নির্দিষ্ট সংখ্যক ক্লাস শেষ করে বাসা/বাড়িতে ফিরে যাবে-কেবল এমনটিই শিক্ষার্থীর কাজ নয়। ক্লাস শুরুর আগে এবং বিরতির সময় শিক্ষার্থীরা খেলবে, হৈচৈ করবে-এমনটিই শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা। এছাড়া ক্লাস শুরুর আগে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সম্মুখস্থ ছোট-বড় মাঠে দৈনন্দিন সমাবেশে (অ্যাসেম্বলীতে) শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়ে তারপর ক্লাসে যাবে-এটাও পড়ে শিক্ষার্র্থীদের প্রত্যাশার মধ্যে।
|আরো খবর
আজকাল নূতন গড়ে ওঠা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের জন্যে মাঠ এবং মাঠকেন্দ্রিক প্রত্যাশা অধিকাংশ ক্ষেত্রে অনেকটা তিরোহিতই থাকে। আর নূতন-পুরানো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে যেগুলোর ছোট-বড় মাঠ আছে, সেগুলোতে নেই সুষ্ঠু পরিচর্যা এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নেই সুনজর কিংবা ন্যূনতম বরাদ্দ। এর ফলে মাঠগুলো নানা কারণে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে কিংবা বিপজ্জনক অবস্থায় থাকে। গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠে প্রকাশিত হয় এমন একটি সংবাদ। যার শিরোনাম হয়েছে ‘গাইড ওয়াল না থাকায় বিদ্যালয়ের মাঠ পুকুরে ॥ ছাত্র-ছাত্রীদের খেলাধুলায় ব্যাঘাত ঘটছে।’
এ বিদ্যালয়টির নাম দক্ষিণ শাশিয়ালী এম.এ. বারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এটি ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৭নং পাইকপাড়া ইউনিয়নে অবস্থিত। এ বিদ্যালয়ের সম্মুখস্থ মাঠটি পশ্চিম পার্শ্বস্থ পুকুরে ভাঙ্গনের শিকার হয়েছে। গাইড ওয়াল কিংবা সীমানা দেয়াল না থাকায় এ মাঠটিতে ছাত্র-ছাত্রীদের খেলাধুলা করা রীতিমত ঝুঁকির বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ, এ বিদ্যালয়ে পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীরা নিতান্তই শিশু। ভাঙ্গনগ্রস্ত মাঠটিতে শিশুদেরকে খেলাধুলা ও দৌড়াদৌড়িতে পুরোপুরি বারণ করে রাখা যায় না। কেননা তারা ভীষণ খেলাধুলা ও হৈ চৈ প্রবণ। সেজন্যে প্রতিনিয়ত প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষক ও অভিভাবকরা এমন আশঙ্কায় থাকে যে, কে কখন পুকুরে পড়ে যায় এবং সাঁতার না জানার কারণে ডুবে মারা যায়।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সরকার যে সমস্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সড়কের পাশে অবস্থিত, সেগুলোতে বিদ্যমান মাঠসহ বিদ্যালয়ের চারপাশে পর্যায়ক্রমে সুন্দর সীমানা দেয়াল নির্মাণ করে চলছে। কিন্তু যে সকল বিদ্যালয় পুকুর/দিঘি কিংবা অন্য কোনো জলাশয়ের পাশে বা পাড়ে অবস্থিত, সেগুলোর মাঠ রক্ষা বা পরিচর্যায় সড়কটির কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। গাইডওয়াল/রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ করে পাড় রক্ষা এবং সীমানা দেয়াল নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অনুধাবন করছে বলে মনে হচ্ছে না। এছাড়া বিদ্যমান মাঠ মসৃণ বা সুসমতল রাখার ব্যাপারেও কর্তৃপক্ষীয় উদাসীনতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এটা মোটেও ঠিক নয়। আমরা দক্ষিণ শাশিয়ালী এম.এ বারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠটিকে পুকুরের ভাঙ্গন থেকে রক্ষায় সরকারের প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের পাশাপাশি জেলা/উপজেলা পরিষদসহ স্থানীয় এমপির অনুদান বা প্রকল্প প্রত্যাশা করছি।