শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২১ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জে সংবাদকর্মীর কন্যাকে অপহরণ চেষ্টায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের
  •   লক্ষ্মীপুরে মাদকসহ বাবা ও দুই ছেলে আটক
  •   চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন মামলার ৮ আসামী আটক
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার

প্রকাশ : ০৬ জুন ২০২২, ০০:০০

‘কচুর খবর’ই যখন সন্তোষজনক

‘কচুর খবর’ই যখন সন্তোষজনক
অনলাইন ডেস্ক

আমরা অনেকেই কারো দেয়া কোনো খবরে সন্তুষ্ট না হলেই উত্তেজিত হয়ে বলি ‘কী কচুর খবর কইতাছস্ বা কইতেছেন?’ গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠের কৃষিকণ্ঠ পাতায় দেখলাম, সেই কচুর খবরই এখন সন্তোষজনক। খবরটির শিরোনাম হয়েছে ‘কচু চাষে অল্প পুঁজিতে অধিক লাভবান কৃষক একাব্বর খাঁ’। এ খবরে মোঃ আবদুর রহমান গাজী লিখেছেন, চলতি মৌসুমে চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামের কৃষক একাব্বর খাঁ ২০ শতাংশ জমিতে চাষ করেছেন পানিকচুর (গ্রাম্য ভাষায় যার বহুল পরিচিত নাম পাইন্যা কচু)। এই কচু চাষাবাদের জন্যে জমি তৈরি থেকে শুরু করে সর্বশেষ পর্যন্ত ব্যয় হয় ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা। রোপণ করা হয় তিন হাজার কচুগাছ। এ গাছ ছাড়া এ গাছ থেকে বের হওয়া লতিও বিক্রি করা যায়। সব মিলিয়ে ২০ শতাংশ জমি থেকে কচু ও লতি মিলিয়ে প্রায় ৮০-৯০ হাজার টাকার ফলন বিক্রি করা যায় অনায়াসে। কৃষক একাব্বর খাঁ জানান, কচু রোদ-বৃষ্টিসহ সবকিছু সহ্য করতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টিতে অন্যান্য ফসলের কম-বেশি ক্ষতি হয়, কিন্তু কচুর তেমন ক্ষতি হয় না। আমি কচু চাষে লাভবান হয়েছি দেখে বিভিন্ন গ্রামের কৃষকরা এখন কচু চাষে উৎসাহিত হচ্ছেন। একাব্বর খাঁর উৎপাদিত কচু নিজ গ্রামের চাহিদা মিটাতে পারছে বলে তিনি বিভিন্ন জেলায় রফতানির আলাপ-আলোচনা চালাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।

মানুষ প্রাচীন কাল থেকে যে উদ্ভিদগুলোর চাষাবাদ করে আসছে কচু তার অন্যতম। বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের প্রায় সব এলাকায় কম-বেশি কচু দেখতে পাওয়া যায়। কিন্তু সব কচুই খাবার উপযোগী নয়। খাবার উপযোগী কচুগুলো হচ্ছে : মুখীকচু, পানিকচু, ওলকচু, মানকচু, দুধকচু, শোলাকচু, পঞ্চমুখী কচু ইত্যাদি। একাব্বর খাঁ যে কচুটি চাষ করেছেন, সেটি হচ্ছে পানিকচু তথা পাইন্যা কচু। পানিতে হয় বলেই সম্ভবত এর নাম পানিকচু। সবজি হিসেবে এ কচুটি অনেক সমাদৃত। আমাদের চট্টগ্রাম বিভাগের মানুষের নিকট পানিকচুর জনপ্রিয়তা অনেক। কারণ এর স্বাদ ও পুষ্টিমান অত্যধিক, রান্না করাও সহজ। এই কচু আঁশ জাতীয় হওয়ায় এটি কোষ্ঠ-কাঠিন্য দূর করে। কচুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ আয়রন ও ক্যালসিয়াম, যা আমাদের হাড় শক্ত করতে সহায়তা করে। কচুতে আয়োডিনের পরিমাণও অনেক। যাদের গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিডিটি রয়েছে, তাদের জন্যে কচু অনেক উপকারী। কচুর লতিতে চিনির পরিমাণ কম থাকায় ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীরাও নিশ্চিন্তে খেতে পারেন এটি। যাদের রক্তশূন্যতা রয়েছে, তারা নিয়মিত কচু খেলে উপকার পায়। কচু খেলে রক্তের কোলেস্টেরল কমে, তাই উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্যে ওলকচুর রস বেশ উপকারী। নিয়মিত কচু খেলে কোলন ক্যান্সার ও স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে। জ¦রের সময় রোগীকে দুধকচু রান্না করে খাওয়ালে দ্রুত জ¦র ভালো হয়ে যায়।

বহুমাত্রিক বিবেচনায় কচুর খবরই আসলে অনেক ভালো খবর। চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামের কৃষক একাব্বর খাঁ সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে ২০ শতাংশ জমির কচু ও লতি বিক্রি করে পেতে যাচ্ছেন সর্বোচ্চ ৯০ হাজার টাকা। এতে তিনি পৌনে এক লাখ টাকা লাভ করতে যাচ্ছেন। এটা আলু, পিঁয়াজ, টমেটোসহ অন্যান্য সবজি চাষের চেয়ে অনেক লাভজনক ও ঝুঁকিহীন। আমরা এতোটা পুষ্টিমান ও লাভজনক কচুর মতো সবজি চাষ চাঁদপুর জেলাসহ দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে কার্যকর ভূমিকা পালনের জন্যে সরকারের কৃষি বিভাগের প্রতি জোর অনুরোধ জানাচ্ছি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়