প্রকাশ : ০৫ জুন ২০২২, ০০:০০
দৈনিক যুগান্তর ও দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠে মির্জা জাকির চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথের বন্ধ স্টেশনগুলো যে এখন মাদকের আস্তানা সে বিষয়ে সংবাদ পরিবেশন করেছেন। এ সংবাদে লিখা হয়েছে, ২০১২ সালে চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথ সংস্কার ও আধুনিকায়নের আওতায় শাহতলী, শাহরাস্তি ও ওয়ারুক স্টেশনের পুরাতন ভবন ভেঙ্গে নূতন ভবন করা হয় এবং ‘ডি’ শ্রেণির মৈশাদী স্টেশনে নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়। এসব ভবনের কাজ শেষ হওয়ার পর দীর্ঘ পাঁচ বছর অতিবাহিত হলেও এখনও সেই স্টেশনগুলোতে কোনো কার্যক্রম চালু করতে পারেনি রেল কর্তৃপক্ষ। জনবল সঙ্কটে একেবারে বন্ধ রয়েছে শাহতলী, বলাখাল, শাহরাস্তি ও উয়ারুক স্টেশন। স্টেশনগুলো দেখভাল করার জন্যে কেউ না থাকায় প্লাটফর্মগুলো গরু-ছাগলের বিচরণ ক্ষেত্র, বখাটে ভবঘুরে এবং রাতে মাদকসেবীদের আস্তানায় পরিণত হয়েছে। আসবাবপত্রসহ মূল্যবান সম্পদ চুরি হয়ে যাচ্ছে। সন্ধ্যার পর এসব স্টেশনে ভূতুড়ে পরিবেশ বিরাজ করছে। রেল পুলিশের নিজস্ব কোনো যানবাহন না থাকায় তারা স্টেশনগুলোতে চলমান অপরাধকর্ম নিয়ন্ত্রণে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে পারছে না।
চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথের বন্ধ স্টেশনগুলো সম্পর্কে চট্টগ্রাম বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) আবুল কালাম চৌধুরী বলেছেন, রেলওয়েতে নিয়োগ প্রক্রিয়া দু-একটা পর্যায়ে শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে এসব স্টেশনে লোকবল নিয়োগ হলে উদ্ভূত সমস্যা থাকবে না। তিনি লোকবলহীন স্টেশনগুলোতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা একটু নজর দিলে দেশের সম্পদ অনেক ক্ষেত্রে রক্ষা পাবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন।
ডিআরএমের এ অভিমত ইতিবাচক। কিন্তু তিনি চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথের বন্ধ স্টেশনগুলো যে পৌরসভা ও ইউনিয়নে অবস্থিত সেসবের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিকে এবং সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কিংবা পুলিশ সুপারকে চিঠি দিয়ে যদি স্টেশনগুলোর প্রতি দেশের সম্পদ রক্ষার স্বার্থে নজর রাখার অনুরোধ জানাতেন, তাহলে স্টেশনগুলো আর যা-ই হোক মাদকের নিরাপদ আস্তানা হতো না। এছাড়া স্থায়ী জনবল নিয়োগে সমস্যা বা প্রতিবন্ধকতা থাকলে কিংবা বিলম্বিত হলে তিনি (ডিআরএম) ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনাক্রমে বন্ধ স্টেশনগুলোতে মাস্টাররোলে কেয়ারটেকার নিয়োগ দিতে পারেন। প্রতিটি বন্ধ স্টেশন এলাকার আশেপাশে বসবাসকারীদের মধ্য থেকে এই কেয়ারটেকার নিয়োগে জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতা নিতে পারেন। এমনটি যদি সম্ভব না হয়, তাহলে গ্রাম পুলিশ কিংবা ভিলেজহ ডিফেন্স পার্টি (ভিডিপি) কে বন্ধ স্টেশনগুলোর সম্পদ রক্ষায় এবং মাদকের আস্তানা প্রতিহতকরণে ভূমিকা রাখার ব্যাপারে প্রণোদনা দেয়া যায় কিনা সেটিও রেল কর্তৃপক্ষ ভেবে দেখতে পারে। এছাড়া সরকারি সম্পদ রক্ষায় বিদ্যমান আইনে যাদের কিছু করার আবশ্যকতা রয়েছে, তাদেরকে চিঠি দিয়েও রেল কর্তৃপক্ষ স্মরণ করিয়ে দিতে পারে ও তাগিদ দিতে পারে। মোদ্দা কথা, চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথের বন্ধ স্টেশনগুলোর ব্যাপারে রেল কর্তৃপক্ষের একেবারে নিশ্চুপ থাকা বাঞ্ছনীয় নয় বলে মনে করছি।