শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২১ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জে সংবাদকর্মীর কন্যাকে অপহরণ চেষ্টায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের
  •   লক্ষ্মীপুরে মাদকসহ বাবা ও দুই ছেলে আটক
  •   চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন মামলার ৮ আসামী আটক
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার

প্রকাশ : ০২ জুন ২০২২, ০০:০০

প্রধান শিক্ষকের সাহসিকতা

প্রধান শিক্ষকের সাহসিকতা
অনলাইন ডেস্ক

আমাদের প্রায় সকলেরই জীবনের প্রতি অনেক মায়া। আমরা অধিকাংশজনই সাহস করে অন্যকে অন্যায় কাজ করতে দেখলেও তাকে নিবৃত্ত হতে বলি না, বাধা দেয়া দূরে থাক। ভয় হচ্ছে, যদি না অন্যায়কারী ক্ষিপ্ত হয়ে আমার ওপর আক্রমণ করে বসে, আর সে আক্রমণে আমি যদি মরে যাই। কিন্তু মানুষের মধ্যে যাদের বিবেক সক্রিয়, তারা জীবনের মায়া ভুলে যায়। তারা অন্যায় দেখলেই তাৎক্ষণিক স্বীয় ভূমিকা নিশ্চিত করে। এজন্যে তারা অপরিসীম সাহসিকতা প্রদর্শন করে, এমনকি জীবন বিপন্ন করার মতো ঝুঁকি নেয়। এতে কেউ কোনো দুর্ঘটনা ছাড়াই সফল হয়, আবার কেউ কমণ্ডবেশি দুর্ঘটনা কবলিত হয়। পরিণামে জীবন চলে যায় কিংবা শারীরিক, মানসিক ও আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হয়।

আমাদের মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও তদূর্ধ্ব পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বখাটে ও উচ্ছৃঙ্খল প্রকৃতির ছেলে-মেয়েরা সর্বকালেই ছিলো এবং এখনো আছে। এদেরকে নিয়ন্ত্রণ করা কিংবা দমিয়ে রাখা মোটেও কঠিন কাজ নয়, যদি প্রতিষ্ঠান প্রধানের সদিচ্ছা ও সাহস থাকে। কিন্তু অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই সেটা দেখা যায় না। অনেক শিক্ষকই খেদ প্রকাশ করে বলেন, শিক্ষার্থীদের প্রতি শারীরিক ও মানসিকসহ যে কোনো ধরনের শাসনই যখন আইনি বাধায় উঠে গেছে, তখন আমরা ঝুঁকি নেবো কেন? এমন বাস্তবতাতেও যখন একজন প্রধান শিক্ষককে অন্য একটি বিদ্যালয়ের উচ্ছৃঙ্খল ছাত্রকে দমানোর জন্যে সাহসিকতা প্রদর্শন করতে দেখা যায়, তখন বিস্মিত হতেই হয়।

এই প্রধান শিক্ষকের নাম মোঃ সাখাওয়াত হোসেন পাটওয়ারী। তিনি চাঁদপুর সদর উপজেলার আশিকাটি ইউনিয়নের এম. এম. নূরুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ে কর্মরত। গত সোমবার দুপুরে তিনি ক’জন শিক্ষকসহ তাঁর বিদ্যালয় এলাকায় আহাদুল ইসলাম পাটোয়ারী নামে আল-আমিন একাডেমি স্কুল এন্ড কলেজের দশম শ্রেণীর এক ছাত্রকে দুটি দেশীয় ধারালো অস্ত্রসহ আটক করে চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশের নিকট সোপর্দ করেন। জানা যায়, সেনগাঁও পাটোয়ারী বাড়ির জাহাঙ্গীর পাটোয়ারীর ছেলে আহাদুল তার বাড়ির নিকটস্থ নুরুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে স্থানীয় কিশোরদের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এক পর্যায়ে সে উত্তেজিত হয়ে তার বাড়ি থেকে ২টি ধারালো অস্ত্র নিয়ে এসে ঐ কিশোরদের ডাক-চিৎকার দিয়ে খুঁজতে থাকে। এ বিষয়টি উক্ত প্রধান শিক্ষক জানামাত্রই অস্ত্রসহ আহাদুলকে আটকের ব্যবস্থা করেন।

চাঁদপুর শহর শুধু নয়, চাঁদপুর জেলার মধ্যে আল-আমিন একাডেমি একটি বিখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের প্রায়শই সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্বে লিপ্ত হয়ে সংবাদের উপজীব্য হতে দেখা যায়। এ প্রতিষ্ঠানে মেধাবী শিক্ষার্থীরা পড়ে এবং ফলাফলও ভালো। কিন্তু এদেরকে পরীক্ষায় ভালো সনদ অর্জনের জন্যে লেখাপড়ায় মনোযোগী করানোর পাশাপাশি ভালো মানুষ হবার শিক্ষা দেয়াটা অনেক বেশি জরুরি। সোমবার এখানকার শিক্ষার্থী আহাদুলের অস্ত্রসহ আটক হবার ক্ষেত্রে অন্য বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সাহসিকতার প্রেক্ষিতে কথা উঠেছে, নিজ প্রতিষ্ঠানে এদেরকে শায়েস্তা করার দৃষ্টান্তযোগ্য কঠোর পদক্ষেপ প্রতিষ্ঠান প্রধানসহ অন্যরা নিচ্ছেন না কেন? কোনো প্রতিবন্ধকতা আছে কি?

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়