প্রকাশ : ২৪ মে ২০২২, ০০:০০
বাড়িওয়ালাদের সতর্ক থাকা উচিত
চাঁদপুর শহর সংলগ্ন এলাকায় চাঁদপুর সদর উপজেলার আশিকাটি ইউনিয়নের দক্ষিণ আশিকাটি গ্রামে শাপলা আক্তার রিমি (২০) কে শ্বাসরোধ করে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার প্রধান আসামী রিমির কথিত স্বামী শাহপরান গাজীকে ফরিদগঞ্জ থেকে পলাতক অবস্থায় গ্রেফতার করেছে চাঁদপুর সদর মডেল থানার পুলিশ। এ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আবদুর রশিদ জানান, আটক শাহপরান (২৭) নিহত রিমির কথিত স্বামী। রিমি ও শাহপরান বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়নি। বিয়ে ছাড়া কেউ বাড়ি ভাড়া দেয় না বলে তারা স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে দক্ষিণ আশিকাটিতে বাসা ভাড়া নেয়-এমনটি শাহপরান পুলিশকে জানিয়েছে।
|আরো খবর
গত ১৭ মে মঙ্গলবার দুপুরে দক্ষিণ আশিকাটি গ্রামের এনায়েত পাটোয়ারী বাড়িতে ভাড়া বাসায় শাপলা আক্তার রিমির লাশ খাটের নিচে পাওয়া যায়। ঘটনার পর কথিত স্বামী শাহপরান গাজী পালিয়ে যায়। রিমির বড় বোন মৌসুমী আক্তার বাদী হয়ে ১৮ মে বুধবার চাঁদপুর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় রিমির প্রেমিক ও কথিত স্বামী শাহ পরানকে প্রধান আসামী করা হয়। শাহপরান চাঁদপুর সদর উপজেলার শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের পাইকদী গ্রামের সহর আলীর ছেলে। পুলিশ ২২মে শাহপরানকে আদালতে সোপর্দ করে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে।
রিমির লাশের ময়না তদন্তের রিপোর্ট এবং আটক শাহপরান গাজীকে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে নিশ্চয়ই বেরিয়ে আসবে, কীভাবে রিমি হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। আমরা এ প্রসঙ্গে আর কিছু লিখতে চাই না। আমরা লিখতে চাই, কাউকে বাড়ি/বাসা ভাড়া দেয়ার পূর্বে বাড়িওয়ালাদের উদাসীনতা সম্পর্কে। এ উদাসীনতার কারণেই শহর ও গ্রামের বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় নিকট অতীতে জঙ্গিবাদীদের আস্তানা গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছে। যে কারণে পুলিশ বাড়িওয়ালাদের ভাড়া দেয়ার ব্যাপারে সতর্ক হতে কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির মাধ্যমে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালিয়েছে। এতে সুফলও পাওয়া গেছে। কিন্তু বাড়িওয়ালারা যে আবার উদাসীন হতে শুরু করেছে, সেটা রিমি ও শাহপরান বিবাহিত না হওয়া সত্ত্বেও তাদেরকে ঘর/বাসা ভাড়া দেয়ার মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হলো। এটা উদ্বেগজনক।
চাঁদপুর শহরের প্রাণকেন্দ্র, পাঁচ রাস্তার মোড় শপথ চত্বরে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ¦ হাবিবুর রহমান (বর্তমানে মরহুম) তাঁর চারতলা ভবনটিতে স্ট্যাম্পে লিখিত চুক্তি ছাড়া কেবল ব্যবসায়ী নয়, কোনো সাধারণ ভাড়াটিয়াকেও বাসা ভাড়া দিতেন না। এমনটি কমপক্ষে শতকরা নব্বই ভাগ বাড়িওয়ালা করেন বলে মনে হয় না। লিখিত চুক্তি দূরে থাক, কাবিননামা বা অন্য কোনো বৈবাহিক প্রমাণ কিংবা জাতীয় পরিচয়পত্র না দেখেই কোনো দম্পতি, পরিবার কিংবা ব্যক্তিকে যাচাই-বাছাই না করেই বাড়িওয়ালারা তার বাড়ি/ঘর/বাসা ভাড়া দিয়ে দেন শুধুমাত্র মাসশেষে ভাড়া পাওয়ার আশায়। কিন্তু এক্ষেত্রে যে সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়, সেটা অনেকের মাথায়ও থাকে না। এমনটি বাড়িওয়ালাদের মাথায় আনার জন্যে সরকারিভাবে কোনো উদ্যোগ নেয়া যায় কিনা, পুলিশ নিকট অতীতের ন্যায় কোনো পদক্ষেপ নিতে পারে কিনা কিংবা গণমাধ্যমে কোনো প্রচারণা চালানো যায় কিনা সেটা ভেবে দেখবার জন্যে সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।