প্রকাশ : ০৮ মার্চ ২০২২, ০০:০০
চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে
চিকিৎসকের অবহেলা, ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু ও ব্যবস্থপনাগত ত্রুটির কারণে চাঁদপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে সাম্প্রতিক সময়ে বিক্ষুব্ধ ব্যক্তি বা ব্যক্তি সমষ্টির উল্লেখযোগ্য হামলার ঘটনা নেই বললেই চলে। কিন্তু অতীতে মাঝে মধ্যে এ ঘটনা ঘটতো। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের শীর্ষ ব্যক্তি সিভিল সার্জন যখন এই হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্বপালন করতেন, তখন এই হাসপাতালে হামলার ঘটনাটা তুলনামূলক বেশি ঘটতো। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক পদে শূন্যতা পূরণের পর রোগীর পক্ষের বিক্ষুব্ধ লোকজন কর্তৃক হাপাতালে হামলার ঘটনা ২-১টা ঘটলেও সেটি বেশিদূর গড়ায় নি, কেননা অভিভাবক বা শীর্ষ ব্যক্তি হিসেবে তত্ত্বাবধায়ক হয় পুলিশ ডেকেছেন, নয়তো নিজেই উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দিয়েছেন।
|আরো খবর
হাসপাতালটিতে এখন কারো হামলার আশঙ্কার চেয়ে প্রতিনিয়ত দালালদের দৌরাত্ম্যই বেশি লক্ষ্য করা যায়। এ দালালরা সাধারণত নিকটস্থ ডায়াগনস্টিক ল্যাবরেটরী বা সেন্টারের কিংবা চাঁদপুর শহরস্থ বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিক/বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃক নিয়োজিত। এমনকি রাজধানী কিংবা অন্য কোনো স্থানের হাসপাতালের পক্ষে অ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইভাররূপী দালালও প্রতিনিয়ত রোগীদের এটেনডেন্ট তথা পক্ষের লোকজনের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে তাদের পেছনে ঘুরঘুর করে এবং রোগী বাগিয়ে নেয়ার নিরন্তর প্রয়াস চালায়। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক তাঁর ব্যবস্থাপনা, মনিটংিসহ অনিবার্য কিছু দায়িত্বপালনের পাশাপাশি এসব দলাল তাড়ানোর কাজ করার ফুরসত সাধারণত খুঁজে পান না। এমতাবস্থায় এ হাসপাতালে সার্বক্ষণিক সশস্ত্র নিরাপত্তা রক্ষী হিসেবে হয় পুলিশ নয়তো আনসার নিয়োগের বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে সচেতন মহলের পক্ষে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর অনুপ্রেরণায় গঠিত সচেতন নাগিরক কমিটি (সনাক), চাঁদপুর দাবি জানিয়ে আসছিলো। কিন্তু এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃশ্যমান তৎপরতা পরিলক্ষিত হচ্ছিলো না।
অবশেষে গত রোববার (৬ মার্চ ২০২২) চাঁদপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে টিআইবি-সনাকের আলোচনা সভায় এ হাসপাতালের নিরাপত্তা বিষয়ে দৃশ্যমান তৎপরতা সম্পর্কে জানা গেছে। বর্তমানে কর্মরত তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ একেএম মাহাবুবুর রহমান উক্ত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতাকালে বলেছেন, হাসপাতালে কোনো নিরাপত্তা কর্মী না থাকায় দালালদের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি পেয়েছে। আগামী অর্থ বছরে ১২ জন আনসারের জন্যে প্রশাসনিক অনুমোদন ও বাজেট চাওয়া হয়েছে। আমাদের বিশ^াস, স্থানীয় এমপি ও উক্ত হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি হিসেবে শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনির আন্তরিক সহযোগিতায় কাক্সিক্ষত অনুমোদন ও বাজেট বরাদ্দ পাওয়া যাবে। আশা করি তত্ত্বাবধায়ক মহোদয় কোনোভাবেই হতোদ্যম না হয়ে এ ব্যাপারে তাঁর অব্যাহত তদবির বা প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবেন এবং তাতেই এ হাসপাতালের নিরাপত্তা সংক্রান্ত সমস্যার বহুল কাক্সিক্ষত সমাধান আসবে।