প্রকাশ : ০১ মার্চ ২০২২, ০০:০০
শিক্ষার্থীদের ওপর এমন হামলা দুঃখজনক
২০১০ সালে সরকার দেশের ৩৫ জেলায় কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও মেরিন ইনস্টিটিউট স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। তবে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের আওতায় মাত্র পাঁচ জেলায় মেরিন ইনস্টিটিউট পাঁচ বছরের মধ্যে স্থাপিত হয়ে যায়। এর মধ্যে চাঁদপুর জেলাও রয়েছে। ২০১৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর চাঁদপুর ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজি আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে। চাঁদপুর ও ফরিদগঞ্জের মধ্যে যাতায়াতকালে চাঁদপুর সেতুর পশ্চিম-দক্ষিণ পাশে ডাকাতিয়া নদীর তীরে মনোরম পরিবেশে এটির সুন্দর অবস্থান লক্ষ্য করা যায়। জমি অধিগ্রহণ থেকে শুরু করে অবকাঠামো নির্মাণ ও এটির যাত্রা শুরু পর্যন্ত সকল কাজ নির্বিঘেœ সম্পন্ন হয়েছে। সমস্যা ও সঙ্কটের মধ্যেও এটির কার্যক্রম ভালোই চলছে। চাঁদপুর শহরের প্রাণকেন্দ্র থেকে এটির অবস্থান প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে হওয়ায় কোলাহলমুক্ত পরিবেশে এখানে শিক্ষাদান কার্যক্রম চালানো সম্ভব হচ্ছে।
|আরো খবর
গত ক’দিন ধরে চাঁদপুর ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজিতে উত্তপ্ত পরিস্থিতি ও থমথমে ভাব বিরাজ করছে। কেননা এ ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের ওপর বহিরাগত লোকজন তিন দফা হামলা করেছে। উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে উপর্যুপরি হামলার প্রতিকার না পেয়ে গত রোববার মানববন্ধন ও মিছিল করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার উক্ত ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে বিদ্যমান মাঠে খেলতে যায়। সেখানে তাদের সাথে স্থানীয় সোহান নামে এক যুবকের বাকবিত-া ঘটে। পরে সোহানের নেতৃত্বে অজ্ঞাত যুবকরা শিক্ষার্থীদের ওপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করেন। পরদিন ২৬ ফেব্রুয়ারি দুপুরে ও রাতে এক মহিলা কাউন্সিলর তার নেতৃত্বে আরো দুদফা হামলা চালান। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১০-১২ জন আহত হন। চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আনলে আহতের সংখ্যা আরো বাড়তো। ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ ড. প্রকৌশলী মোঃ সাখাওয়াত আলী বলেন, আমি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে যতোটুকু জেনেছি তা সত্যিই দুঃখজনক। এ ধরনের ঘটনা মোটেও কাম্য নয়। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা তাদের ওপর বহিরাগতদের তিন দফা হামলার পরও ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় এবং পুলিশ হামলাকারীদের কাউকে আটক করতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা তাদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন।
চাঁদপুর হচ্ছে শিক্ষামন্ত্রীর এলাকা। এখানকার ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজিতে শুধু চাঁদপুর জেলার নয়, বিভিন্ন জেলার শত শত শিক্ষার্থীও পড়ালেখা করে। এখানে যদি শিক্ষার্থীরা বহিরাগতদের উপর্যুপরি হামলার শিকার হয়, তাহলে সেটি কেবল দুঃখজনক নয়, লজ্জাজনক বিষয়ও হয়ে দাঁড়ায়। চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ঘটনাটি ভুল বুঝাবুঝি হেতু সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করেন। আমরা মনে করি, ঘটনাটি যে কারণেই ঘটুক, সেটির সুষ্ঠু ও টেকসই নিষ্পত্তি হওয়া উচিত।