প্রকাশ : ১৫ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০
ফেসবুক কর্তৃপক্ষ তার ইউজারদের সময় থাকতে জানিয়ে দেয় কার কবে জন্মদিন। সেমতে কেউ কেউ নিজে এবং তার ফ্রেন্ডরা ফেসবুকে জন্মদিন নিয়ে ব্যয়হীন স্বল্প আয়াসের কর্মকা-ে লিপ্ত হয়। এমতাবস্থায় কোনো কোনো ফ্রেন্ড কম-বেশি খরচ করে জন্মদিনের কেক নিয়ে সশরীরে হাজির হন এবং ছোট-বড় আয়োজনে সময় কাটান। এভাবে ফেসবুকের কল্যাণে আমাদের জন্মদিন-সংস্কৃতি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অনেক জোরদার হয়েছে। এতে কারো কারো অনিচ্ছাকৃত ব্যয় বেড়েছে। কেউ কেউ আনন্দে হচ্ছেন অনেক উচ্ছ্বসিত, আবার তার বিপরীতে কেউ কেউ হচ্ছেন কিছুটা বিরক্ত ও বিব্রত। তারপরও জন্মদিন পালনের এমন সংস্কৃতিতে নেতিবাচকতার চেয়ে ইতিবাচকতাই প্রবল বলে মনে হচ্ছে।
গুরুত্বপূর্ণ/খ্যাতিমান/কৃতী ব্যক্তিদের জন্মদিন শুধু ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পালন করাটা যথার্থতায় পর্যবসিত হয় না। সেজন্যে পূর্ব থেকে আনুষ্ঠানিকতা সম্পাদনের প্রস্তুতি নিতে হয়। এমন প্রস্তুতি না নিলে সংশ্লিষ্ট কিংবা দায়িত্বশীলদের সমালোচনার মুখে পড়তে হয়, এমনকি জবাবদিহিতার আওতায় আসতে হয়। এসব ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করলে তাদের মৃত্যুবার্ষিকী পালনেও পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে দোয়া/আশীর্বাদ অনুষ্ঠান আয়োজন করে পরকালীন শান্তি কামনা করতে হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ফেসবুকের জন্মদিন-সংস্কৃতির ন্যায় মৃত্যুদিন বা মৃত্যুবার্ষিকী পালনের হিড়িক পড়েছে। এতে মৃত ব্যক্তির গুণমুগ্ধদের মধ্যে যারা সামর্থ্যবান তারা মসজিদ-মাদ্রাসায় দোয়ার আয়োজন করছে। নিঃসন্দেহে এটা ইতিবাচক। কিন্তু চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি, সাবেক এমপি, মুক্তিযুদ্ধের শীর্ষস্থানীয় সংগঠক আঃ রবের মৃত্যুবার্ষিকী যদি কেবল ফেসবুক, ছোটখাট দোয়ায় সীমাবদ্ধ থাকে, তাহলে কিন্তু কথা বলার সুযোগ তৈরি হয়।
সাবেক এমপি মরহুম আঃ রবের মৃত্যুবার্ষিকীই কেবল নয়, তাঁর সমপর্যায়ের অনেক খ্যাতিমান রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক ব্যক্তির মৃত্যুবার্ষিকী দলীয়/সাংগঠনিক পর্যায়ে তো পালিত হয়ই না, এমনকি পারিবারিক পর্যায়েও হয় না। পত্রিকায় প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে খ্যাতিমান ব্যক্তিদের অনেককেই তাঁদের মৃত্যুবার্ষিকীতে স্মরণ করার মতো উদ্যোগী কোনো লোককে খুঁজে পাওয়া যায় না। নিঃসন্দেহে এটা কষ্টকর শুধু নয়, লজ্জাজনকও।