প্রকাশ : ১৩ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০
চাঁদপুর জেলাটি চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে সুন্দর ভৌগোলিক অবস্থানে থাকায় সড়ক মানচিত্রে ক্রমশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। চট্টগ্রাম ও রাজধানী ঢাকার মধ্যে বিদ্যমান জাতীয় মহাসড়কের ফেণী ও কুমিল্লা জেলার বিরাট অংশ ভারতের সীমান্ত ঘেঁষা। সেজন্যে পাকিস্তান আমলে তৎকালীন সরকার ঝুঁকি এড়াতে ফেণী থেকে নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর হয়ে ফরিদগঞ্জ দিয়ে চাঁদপুর পর্যন্ত একটি সড়কের রূপরেখা নির্মাণ করে, যেটি আঞ্চলিক মহাসড়কে রূপ নিতে নব্বইর দশক হয়ে যায়। বর্তমানে ডাকাতিয়া নদীর ওপর নির্মিত দুটি সেতু দ্বারা এ সড়কটি অবিচ্ছিন্নভাবে চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের এবং খুলনাসহ দক্ষিণাঞ্চলমুখী সড়কের যোগাযোগ রক্ষা করে চলছে। বিশেষত ফেণী-লক্ষ্মীপুর-চাঁদপুর সড়কটি বন্দর নগরী চট্টগ্রাম থেকে রাজধানী ঢাকার সাথে সংক্ষিপ্ত যোগাযোগ স্থাপনের মোক্ষম মাধ্যম হয়ে গেছে। কেননা এ সড়ক দিয়ে চাঁদপুর পৌঁছে বাবুরহাট-মতলব-পেন্নাই কিংবা বাবুরহাট-মতলব-শ্রীরায়ের চর ব্রিজের সড়ক দিয়ে জাতীয় মহাসড়কের মেঘনা-গোমতী ব্রিজের গোড়া তথা দাউদকান্দিতে স্বল্প সময়ে যাওয়া যায়। ভোলা ও লক্ষ্মীপুরের মধ্যে ফেরি চালু হওয়ায় স্বল্পতম সময়ে ভোলা থেকে ঢাকা যাতায়াতেও উক্ত সড়কটির ব্যবহার বেড়েছে।
এদিকে হাজীগঞ্জ-রামগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক দিয়ে নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর অঞ্চলের যানবাহনগুলো হাজীগঞ্জ-কচুয়া-গৌরিপুর সড়ক হয়ে দাউদকান্দি জাতীয় মহাসড়ক ব্যবহার করে রাজধানীতে যাতায়াত করছে। এর বাইরে কালিয়াপাড়া-কচুয়া-গৌরিপুর, রহিমানগর-নবাবপুর-মাধইয়া সড়কও চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের সংযোগ রক্ষা করে রাজধানীতে সংক্ষিপ্তভাবে যাতায়াতের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। কিন্তু এ সড়কগুলো অপ্রশস্ত, এবড়োথেবড়ো ও বাঁকবহুল হওয়ায় খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।
এসব সড়কের মধ্যে হাজীগঞ্জ-কচুয়া-গৌরিপুর সড়ক হয়ে গেছে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ ও দুর্ঘটনাবহুল। এমন কোনো সপ্তাহ বা মাস নেই যে, এ সড়কে বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা না ঘটছে। মোটর সাইকেল, মাইক্রোবাস ও পিকআপ তো দুর্ঘটনাকবলিত হচ্ছেই, ইদানীং বাসও দুর্ঘটনা কবলিত হচ্ছে। বিশেষ করে বিআরটিসির বাস রূট পারমিট ও রাস্তার উপযোগিতা বিবেচনা না করেই বেপরোয়া গতিতে চলছে। অতি সম্প্রতি বিআরটিসি বাসের চাপায় সিএনজি অটোরিকশার তিন যাত্রী (যারা ছিলেন অনার্স-মাস্টার্স পরীক্ষার্থী) এবং ট্রাক্টরের দু সহকারী প্রাণ হারিয়েছেন। আমাদের মতে, হাজীগঞ্জ-কচুয়া-গৌরিপুর সড়ক পুরোপুরি প্রশস্ত ও বাঁকমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত এ সড়কে বিআরটিসির বাস চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। এ ব্যাপারে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি।