প্রকাশ : ২৮ ডিসেম্বর ২০২১, ০০:০০
চাঁদপুরে একটি আন্তর্জাতিক সংস্থায় কর্মরত একজন কর্মকর্তাকে তাঁর পুরো কর্মকালে এতোটা ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে যে, পূর্ববর্তী ও পরবর্তী কোনো কর্মকর্তাকে তীক্ষè পর্যবেক্ষণেও তেমনটি দেখা যায়নি। তিনি সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে যেমন ছিলেন পারদর্শী, তেমনি সামাজিক কর্মকা-েও ছিলেন পারদর্শী। প্রচ- মিশুক প্রকৃতির জনবান্ধব এ কর্মকর্তা ছিলেন ভীষণ কাজপাগল। পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তিনি এমন কোনো ভালো কাজ নেই যে, যাতে নিজেকে জড়িত করেননি। তিনি একই সাথে ভালো সংগঠক ও উদ্যোক্তাও ছিলেন। দলমত নির্বিশেষে সাধারণ মানুষের নিকট তিনি হয়ে উঠেন ¯েœহ, ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার পাত্র। তাঁর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তাঁর কর্মচাঞ্চল্য, কর্মদক্ষতা, আন্তরিকতা ও নিষ্ঠা দেখে রাজধানী কিংবা বিভাগীয় শহরে বাস্তবায়নযোগ্য প্রজেক্টও চাঁদপুরে দিয়ে দেয়। যে প্রজেক্টগুলো এ কর্মকর্তা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করে তাক লাগিয়ে দেন।
ওই কর্মকর্তা পদোন্নতি নিয়ে চাঁদপুর থেকে বদলি হয়ে গেলেই টের পাওয়া যায় যে, তিনি কী ছিলেন এবং তাঁর স্থলাভিষিক্ত কে হয়েছেন। সত্যি কথা বলতে কি, আজও যে প্রতিষ্ঠানটিকে তাঁর কোনো পূর্বসূরিই কর্মচাঞ্চল্য, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতা দিয়ে তাঁর মতো উজ্জ্বল প্রতিভাসে উপস্থাপন করতে পারেননি। সেজন্যে তাঁর সময়টাকে অনেকে ওই সংস্থার জন্যে চাঁদপুরের স্বর্ণযুগ হিসেবে আখ্যায়িত করে থাকে।
চাঁদপুরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের দীর্ঘ সময়ের কার্যালয় ছিলো চাঁদপুর শহরের আঃ করিম পাটোয়ারী সড়কের পূর্ব প্রান্তে ‘কবি সদনে’। এ কার্যালয়টি মূল শহরে থাকলেও সাধারণ মানুষের নজর কাড়তে পারেনি প্রত্যাশিত কর্মতৎপরতার অভাবে। প্রয়োজনের তাগিদে এ কার্যালয়টি শহরের দূরবর্তী টেকনিক্যাল এলাকায় স্থানান্তরিত হয়। তারপর এ কার্যালয় যেনো সাধারণ্যের নজরবহির্ভূত অন্যতম প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। কিন্তু সহকারী পরিচালক পদে দিদারুল আলম যোগদান করে মাদকবিরোধী সর্বাত্মক কর্মতৎপরতায় এ কার্যালয়টিকে গণমাধ্যমের উল্লেখযোগ্য উপজীব্যে পরিণত হন। তিনি দুঃসাহসিক অভিযানের মাধ্যমে যারা দলের নাম ভাঙ্গিয়ে মাদক ব্যবসায় জড়িত তাদেরকে এবং মাদকাসক্ত ব্যক্তিদেরকে আইনের আওতায় আনেন। এতে তিনি অপপ্রচার ও রোষানলের শিকার হন। এমনকি বিভাগীয় কোনো কোনো অসাধু কর্মকর্তার ষড়যন্ত্রের কবলে পড়েন। কিন্তু তিনি সত্যতা প্রমাণ করে এ ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করতে সক্ষম হন।
সম্প্রতি মাদকদব্র্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, চাঁদপুর কার্যালয় থেকে সহকারী পরিচালক দিদারুল আলম বদলি হয়ে অন্যত্র চলে গেছেন। মনে হচ্ছে, অনেক কর্মতৎপরতা তথা মাদকবিরোধী অভিযান চাঁদপুর থেকে বদলি হয়ে তাঁর সাথে চলে গেছে। আগে যেখানে প্রতিদিন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কমপক্ষে একটি সংবাদ পত্রিকায় ছাপা হতো, এখন এক সপ্তাহেও একটি হচ্ছে না। এমনটি কেনো? নিশ্চয়ই কর্মকর্তার ওপর পেশাগত তৎপরতার ভিন্নতা নির্ভরশীল। প্রকৃতপক্ষে এমনটি সঠিক নয়।