প্রকাশ : ২৫ ডিসেম্বর ২০২১, ০০:০০
প্রেসক্রিপশন দেখতে রূঢ়তা কেন?
ঔষধ কোম্পানিগুলো তাদের উৎপাদিত পণ্যের বিপণন বাড়াতে অনেকটা মরিয়া হয়ে গেছে। তাদের বিক্রয় প্রতিনিধি (এমআর বা এমপিও)কে দিয়ে তারা রেজিস্টার্ড বড়-ছোট চিকিৎসকসহ গ্রাম্য চিকিৎসক, এমনকি ফার্মেসির মালিক-কর্মচারীকে পর্যন্ত বিভিন্ন উপায়ে ও প্রকারে উপহার প্রদান করে চলছে। তারপরও কোম্পানিগুলো আশ^স্ত হতে পারছে না। সেজন্যে মাঠ পর্যায়ে কর্মরত তাদের এমআর/এমপিওকে চিকিৎসকদের প্রেসক্রিপশন দেখা বা মনিটরিং করার তাগিদ দিয়ে তাদের বেপরোয়া করে তুলেছে।
|আরো খবর
নামীদামী ব্যস্ত হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, চিকিৎসকদের চেম্বারের সামনে এবং ঔষধ কেনাবেচায় ব্যস্ত ফার্মেসিগুলোতে এমআর/এমপিওদের ঠাসাঠাসি ভিড় লক্ষ্য করা যায় প্রেসক্রিপশন মনিটরিংয়ের প্রয়োজনে। তারা শুধু দেখে বা পর্যবেক্ষণেই ক্ষান্ত হয় না। তারা প্রেসক্রিপশনের ছবি তুলতে চায়। তাদের এই চাওয়াতেই রোগীদের সাথে তাদের কারো কারো আচরণগত সমস্যা হয়। অধিকাংশ এমআর/এমপিও রোগীর হাত থেকে টেনে নিয়ে প্রেসক্রিপশনের ছবি তুলতে চান। এতে নিরীহ অসহায় রোগীরা ফ্যালফ্যাল নয়নে তাকিয়ে থাকেন, আর সচেতন, আত্মমর্যাদাসম্পন্ন কিংবা প্রভাবশালী রোগীরা চটে যান। তখন শুরু হয় তর্ক। এ তর্ক থেকে মারমুখী পরিস্থিতি তৈরি হয়। এমতাবস্থায় এমআর/এমপিওরা সংঘবদ্ধ অবস্থায় থাকলে প্রভাবশালী রোগীকেও ভয় পেতে হয়, ভড়কে যেতে হয়। প্রেসক্রিপশন নিয়ে এমনটি হবে কেন?
প্রতিটি ঔষধ কোম্পানি তাদের এমআর/এমপিওসহ সকল স্তরের প্রতিনিধি এবং তাদের তত্ত্বাবধানকারী কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন। এ প্রশিক্ষণে বেপরোয়া মনোভাব ও রূঢ়তা এড়িয়ে বিনয়ের সাথে ভদ্র আচরণ করে তথা সর্বোচ্চ শিষ্টাচার প্রদর্শন করে কীভাবে রোগীদের প্রেসক্রিপশন দেখা যায় সে ব্যাপারে কৌশল শিখিয়ে দেয়া দরকার। অন্যথায় রোগীদের ছোট ছোট ক্ষোভ দানা বেঁধে বড় ক্ষোভে পরিণত হতে পারে এবং সেটি কোথাও না কোথাও একদিন মারাত্মক অপ্রীতিকর ঘটনার জন্ম দিতে পারে, যা হয়ে যাবে গণমাধ্যমের সংবাদের উপজীব্য।
আমরা মনে করি, ঔষধ কোম্পানিগুলো তাদের বিক্রয় প্রতিনিধিকে হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ডাক্তারের চেম্বারের সামনে দাঁড় করিয়ে রাখাটাকে নিষিদ্ধ করা উচিত। তারা যাতে ফার্মেসিগুলোতে গিয়ে প্রেসক্রিপশন মনিটরিং কিংবা ছবি তোলার অবাধ সুযোগ পায় সেজন্যে ফার্মেসি মালিক/দায়িত্বশীল কর্মচারীর সাথে ঔষধ কোম্পানির পক্ষে সমঝোতামূলক কোনো না কোনো পদক্ষেপ নেয়া দরকার। এমনটি না করলে যে অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যাবে না সেটা নিশ্চিত।