শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২১ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।
  •   রাষ্ট্রীয় পদে আসীন হচ্ছেন খবরে আসামিপক্ষে শুনানি করলেন না সমাজী।

প্রকাশ : ১৭ জুন ২০২১, ১২:১১

খাল দখলমুক্ত করা কি কঠিন কাজ?

অনলাইন ডেস্ক
খাল দখলমুক্ত করা কি কঠিন কাজ?

এক সময় আমাদের দেশের খালগুলোতে বর্ষাকালে পাল তোলা নৌকার চলাচল দেখা যেতো। ছোট খালগুলো শুষ্ক মৌসুমে তথা শীতকালে শুকিয়ে যেতো, কিন্তু বড় খালগুলো বিশেষ করে নদীর সাথে সংযোগ রক্ষাকারী খালগুলো শুকাতো না। সেজন্যে সকল মৌসুমে এই বড় খালগুলো ব্যবহার উপযোগী ছিলো। আজকাল ১২ মাস নাব্যতাসম্পন্ন খাল খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। আমাদের চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ, কচুয়া ও মতলব দক্ষিণ উপজেলার বুক চিরে প্রবাহিত বোয়ালজুরি খালে ডাকাতিয়া ও ধনাগোদা নদীর জোয়ারের পানি আসে বলে এটিতে সারা বছরই একসময় যাত্রী ও মালামাল নিয়ে ছোট-বড় নৌযান চলতো। এখন শুষ্ক মৌসুমে এই খালের কোথাও চলে তো, আবার কোথাও চলে না। আর ছোট খালগুলোতে সারা বছরই কোনো নৌযান আর চলে না। সেজন্যে অব্যবহৃত খালগুলোর প্রতি শ্যেন দৃষ্টি পড়েছে অবৈধ দখলে উন্মত্ত মানুষদের। এরা খালগুলোতে শুধু অস্থায়ী দখলদারিত্ব কায়েম করছে না, স্থায়ী দখলদারিত্বই নিশ্চিত করছে। আরসিসি পিলারের ওপরে গড়ে তুলছে পাকা ঘর-বাড়ি।

প্রশ্ন হলো, খাল কি শুধু নৌযান চলাচলের জন্যেই খনন করা হয়?-নিশ্চয়ই নয়। খাল কৃষি কাজের প্রয়োজনে, বিশেষ করে সেচ ও পানি নিষ্কাশনের প্রয়োজনেও খনন করা হয়। কিন্তু বেশি দৃশ্যমানতা তৈরি হয় নৌচলাচলে। এই নৌচলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে খালের কল্যাণকর অপর গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহার অর্থাৎ সেচ ও পানি নিষ্কাশন যেনো সর্বত্র গৌণ হয়ে যায়। এমতাবস্থায় খালগুলো দু পাশ থেকে বিনা বাধায় দখল হয়ে স্বাভাবিক প্রবহমানতা হারিয়ে নালায় পরিণত হয়ে যায়। পরিণতিতে অতিবৃষ্টি এমন কি স্বাভাবিক বৃষ্টিতেও খালগুলো যথাযথ পানি নিষ্কাশন ক্ষমতা হারায় এবং খালের দু ধারে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়, যাতে ফসলহানি হয় এবং বাড়ি-ঘর-রাস্তাঘাটে জনচলাচলে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়। এ চিত্র এখন কোনো সেচ প্রকল্প বা নির্দিষ্ট এলাকার নয়, এ চিত্র সকল স্থানের।

গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠে ব্যানার হেডিং হয়েছে ‘পাউবো খালটি যেনো কৃষকের মরণ ফাঁদ : পানি প্রবাহ বন্ধ ॥ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি’। এ খালটি মতলব উত্তর উপজেলায় মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের অভ্যন্তরে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্তৃক হানিরপাড়-ছেঙ্গারচর বাজার-কালিপুর পর্যন্ত খননকৃত একটি খাল। এই খালের ছেঙ্গারচর বাজার অংশে খালটি দখলের যে ছবি দেখা গেলো, তাতে বাজারের ময়লা-আবর্জনা ফেলে, পাকা স্থাপনা নির্মাণ করে এবং আপনাআপনি গজিয়ে ওঠা জঙ্গল ও কচুরিপানায় ভরপুর হয়ে যাওয়ার ফলে খালটির দৈন্যদশা অনুভব করা যায়। এ সংবাদের প্রতিবেদককে পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেছেন, খালগুলো সংস্কারের ব্যবস্থা শুরু হয়েছে। ইউএনও গাজী শরিফুল হাসান বলেছেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।

চাঁদপুর কণ্ঠসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে খাল দখল, ভরাট নিয়ে যখনই কোনো সংবাদ প্রকাশিত হয় এবং সেই সংবাদের প্রতিবেদককে যে সরকারি কর্মকর্তাই বক্তব্য প্রদান করেন, তারা কেবল খাল সংস্কারের আশ^াস দেন, কিন্তু দখলমুক্ত করার ব্যাপারে সাঁড়াশি, ধারাবাহিক ও টেকসই অভিযান চালানোর বিষয়ে সুস্পষ্ট কিছু বলেন না। কারণ দখলদারদের অধিকাংশই রাজনৈতিক কিংবা অন্য কোনোভাবে ভীষণ প্রভাবশালী। বস্তুত সে কারণে খাল দখলমুক্ত করা অনেক বড় কঠিন (!) কাজ হয়ে গেছে বলে পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়