প্রকাশ : ১৫ মে ২০২৫, ২৩:৩১
সাহিত্য একাডেমির বিষয়ে চাঁদপুরের ৫১ লেখকের বিবৃতি

চাঁদপুর সাহিত্য একাডেমী নির্বাচনকে বানচালের ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারের বিরুদ্ধে বিবৃতি দিয়েছেন চাঁদপুরের অর্ধ-শতাধিক জন কবি ও লেখক। বৃহস্পতিবার (১৫ মে ২০২৫) রাতে তারা এ বিবৃতি প্রদান করেন।
|আরো খবর
বিবৃতিতে তারা বলেন, চাঁদপুর সাহিত্য একাডেমি জেলার কবি-লেখকদের প্রাণের সংগঠন। দীর্ঘ ১২ বছর পর ১৬ মে ২০২৫ তারিখে একাডেমির সাধারণ সভা হতে যাচ্ছে। সভায় সাধারণ সদস্যদের প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে একাডেমীর নির্বাহী কমিটি গঠন করা হবে। ফলে নির্বাচনকে ঘিরে গত দু সপ্তাহ ধরে চাঁদপুর লেখকদের মাঝে উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। প্রার্থীরা সদস্যদের কাছে যাচ্ছেন, ভোট চাচ্ছেন। একাডেমির নির্বাহী কমিটি গঠন হলে এ সংগঠনটিতে প্রাণের সঞ্চার হবে। অচলায়তন ভাঙবে, জঞ্জাল দূরে হবে। লেখকদের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও কল্যাণে একাডেমি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে। ফলে একাডেমির সভাপতি জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সাধারণ সভা ও নির্বাহী কমিটি গঠনের বিজ্ঞপ্তিতে চাঁদপুরের লেখকরা উজ্জীবিত ও আশান্বিত।
অথচ দুই-তিনজন ব্যক্তি চাঁদপুর সাহিত্য একাডেমির দীর্ঘদিন পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া নির্বাচনকে বানচাল করতে ঘৃণ্যতম অপপ্রচার এবং মিথ্যাচারে লিপ্ত হয়েছেন। তারা জেলা প্রশাসনের এই সুন্দর প্রয়াসকে থামাতে উঠে পড়ে লেগেছে। অথচ তারা অধিকাংশই লেখক নন। তাদের কোনো সাহিত্যকর্ম, বই বা প্রকাশনা নেই। সাহিত্যের কর্মকাণ্ডে তাদের গত ২৫ বছরেও দেখা যায়নি।
উল্লেখ্য, জেলা প্রশাসন স্থানীয় সকল পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নির্ধারিত ফরমে সাহিত্য একাডেমির সদস্য আহ্বান করে। পরে আগ্রহীদের জমাকৃত আবেদনপত্র সুদীর্ঘ প্রক্রিয়ায় যাচাই-বাছাই কমিটির মাধ্যমে গঠনতন্ত্রের নিয়মানুসারে প্রথমে প্রাথমিক সদস্য, পরে সাধারণ সদস্য করা হয়। পাশাপাশি ২০১২ সালের সাধারণ সদস্য তালিকায় যারা অলেখক, সাহিত্যচর্চায় যাদের ন্যূনতম সম্পর্ক নেই তাদেরকে সদস্যপদ থেকে বাতিল করা হয়। এক্ষেত্রে একজন লেখকও সাধারণ সদস্য থেকে বাদ পড়েননি।
পরে একাডেমির সভাপতি মহোদয় খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ ও আপিলের সুযোগ দেন। তারপর সাধারণ সভার আহ্বান করে প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেন। ১৯৮৬ সালে একাডেমি প্রতিষ্ঠার পর ইতিহাসে এই ভোটার তালিকা প্রকাশ করে প্রথম প্রত্যক্ষ ভোটে সাহিত্য একাডেমীর নির্বাহী কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যে কারণে একাডেমির সভাপতি মহোদয়কে মূলধারার লেখকরা আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
সাহিত্য একাডেমির এমন যুগান্তকারী উদ্যোগকে বিনষ্ট করতে দু-তিনজন ব্যক্তি অপপ্রচার চালাচ্ছে। তারা কেউ নিয়ম মেনে একাডেমির সদস্য হয়নি বা সদস্য হতে আগ্রহ দেখায়নি। এখন নির্বাচনের উৎসব দেখে তাদের গাত্রদাহ হচ্ছে। চাঁদপুরের মূলধারা লেখকদের বিরুদ্ধে মুষ্টিমেয় কয়েকজন ষড়যন্ত্র করছেন, যা আপত্তিকর ও ঘৃণ্য প্রয়াস। আমরা এ ধরনের জঘন্যতম প্রতিহিংসামূলক কার্যক্রমের তীব্র নিন্দা জানাই৷ চাঁদপুরের লেখকরা এক ও অভিন্ন। ষড়যন্ত্র তাদের পৃথক করতে পারবে না।
বিবৃতিদাতারা হলেন : চাঁদপুর সাহিত্য একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য লেখক আবদুল্লাহিল কাফী, একাডেমির সাবেক নির্বাহী সদস্য ও চাঁদপুর জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি মাহবুব আনোয়ার বাবলু, একাডেমির নির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য ও চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মির্জা জাকির, একাডেমির এডহক কমিটির সদস্য, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক, লেখক কাদের পলাশ, জেলা গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক কবি আশরাফুজ্জামান কাজী রাসেল, চাঁদপুর সাহিত্য মঞ্চের সাবেক সভাপতি কবি মাইনুল ইসলাম মানিক, বর্তমান সভাপতি কবি আশিক বিন রহিম, চাঁদপুর লেখক পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ম. নূরে আলম পাটোয়ারী, চর্যাপদ একাডেমির সাবেক সভাপতি গল্পকার নুরুন্নাহার মুন্নি, একাডেমীর সাধারণ সদস্য গীতিকার কবির হোসেন মিজি, ফরিদগঞ্জ লেখক ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা মহাপরিচালক নূরুল ইসলাম ফরহাদ, লেখক ও গবেষক মুহাম্মদ ফরিদ হাসান, চাঁদপুর সাহিত্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কবি ইকবাল পারভেজ, প্রিয় সময় পত্রিকার সম্পাদক কথাসাহিত্যিক মিজানুর রহমান রানা, সাহিত্য মঞ্চের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাহিত্য একাডেমির সাধারণ সদস্য গল্পকার মনিরুজ্জামান বাবলু, সহ-সভাপতি কবি শাদমান শরীফ, সাধারণ সম্পাদক কবি সাদ আল আমিন, সাংগঠনিক সম্পাদক কবি মোহাম্মদ হানিফ, গবেষক ও শিক্ষক কামরুজ্জামান শিকদার, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও জাতীয় নাগরিক পার্টির শাহরাস্তি উপজেলা প্রতিনিধি কবি তারেক আজিজ, একাডেমির সাধারণ সদস্য ও চাঁদপুর সাহিত্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক কবি মুখলেসুর রহমান ভূঁইয়া, একাডেমির সাধারণ সদস্য কবি ও অনুবাদক মুহাম্মদ সালাহউদ্দীন, নজরুল গবেষণা পরিষদের সাংগঠনিক এইচএম জাকির, একাডেমির সাধারণ সদস্য কবি সুমন কুমার দত্ত, কবি পলাশ দে, লেখক ও সাংবাদিক আতিকুর রহমান রুবেল, কবি আরিফুল ইসলাম শান্ত, কবি এএম সাদ্দাম হোসেন, লেখক বিল্লাল ঢালী, দৈনিক আদি বাংলার সম্পাদক ও লেখক আরিফ রাসেল, কবি ও আবৃত্তিশিল্পী বিথী নন্দী, গল্পকার ইয়াছিন দেওয়ান, লেখক ও সাংবাদিক নূরে আলম, কবি ফারজানা মুন্নি, নারায়নপুর প্রেসক্লাব সভাপতি কবি আরিফ বিল্লাহ, সাহিত্য মঞ্চের সাবেক সহসভাপতি কথাসাহিত্যিক রেজাউল করিম, চাঁদপুর সাহিত্য পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য কবি কাজী সাইফ, ছড়াকার খান-ই-আজম খান, কবি জাহিদ নয়ন, গল্পকার তায়েব হোসাইন, কবি আবু ইউসুফ, কবি সৌরভ সালেকীন, সাহিত্য একাডেমির সাধারণ সদস্য রিয়াজ বেপারী, কবি ও অনুবাদক হাসানাত রাজিব, কবি ও সাংবাদিক হোসেন বেপারী, কবি সঞ্জয় দেওয়ান, কবি ও আবৃত্তিশিল্পী সামিয়া আলম, কবি মাইনুল তোহা, কবি ও আবৃত্তিশিল্পী নুরুন্নাহার নিশি, ভ্রমণ লেখক মারিয়া জামান ও কবি নিঝুম খান।