প্রকাশ : ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ১২:২০
ব্যবসায়ীদের আর্তনাদ, পুড়ছে স্বপ্ন
‘মার্চ ফর গাজা’ র্যালি ঘিরে উত্তপ্ত গাজীপুর: দোকানপাট, হোটেল ও কারখানায় হামলা-ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ

‘মার্চ ফর গাজা’ র্যালির প্রতি সংহতি জানিয়ে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের ব্যাপক বিক্ষোভ, দোকানপাটে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। বিক্ষোভকারীরা ইসরায়েলি পণ্য বর্জনের ডাক দিয়ে কোনাবাড়ী, কাশিমপুর, টঙ্গী, কালিয়াকৈর ও বোর্ড বাজার এলাকায় অন্তত ২০টির অধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও কয়েকটি গার্মেন্ট কারখানায় হামলা চালায়।
|আরো খবর
শনিবার (১২ এপ্রিল) সকাল থেকে ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে শান্তিপূর্ণ মিছিল শুরু করেন পোশাক শ্রমিকরা। তবে বিকেল গড়িয়ে আসতেই কোনাবাড়ী ও কাশিমপুর এলাকায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা অভিযোগ করেন, কিছু দোকান ও প্রতিষ্ঠান ইসরায়েলি পণ্য বিক্রি করছে। এ অভিযোগে তারা কোনাবাড়ীর বাটা, আপেক্স, আজওয়া, পিজ্জা হল, স্বপ্ন সুপার শপ, বিউটি সুইট মিটসহ একাধিক দোকান লক্ষ্য করে ভাঙচুর চালায়।
আবাসিক হোটেলে হামলা, মহাসড়কে আগুনউল্লেখযোগ্যভাবে, কোনাবাড়ীর রেইনবো ও মুন আবাসিক হোটেলেও হামলা ও ভাঙচুর চালায় বিক্ষোভকারীরা। রেইনবো হোটেলের আসবাবপত্র মহাসড়কে এনে অগ্নিসংযোগ করা হয়, যা মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে। এতে টাঙ্গাইল মহাসড়কে প্রায় দুই ঘণ্টা যান চলাচল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকে।
কারখানা খোলা রাখায় ক্ষুব্ধ শ্রমিকদের প্রতিক্রিয়াবিকেলে স্ট্যান্ডার্ড স্টিচেস ওভেন লিমিটেড, কনকর্ড নিটিং অ্যান্ড ডাইং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড (কোনাবাড়ী) এবং ডিবিএল গ্রুপের মাইমুন ও মতিন গার্মেন্টস (কাশিমপুর) খোলা রাখায় এসব প্রতিষ্ঠানে বিক্ষোভকারীরা ইট-পাটকেল ছুঁড়ে হামলা চালায়। তারা দাবি করেন, গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতার প্রতিবাদে দেশের সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে সংহতি প্রকাশ করা উচিত ছিল।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপে নিয়ন্ত্রণে পরিস্থিতিগাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কোনাবাড়ী জোনের সহকারী কমিশনার আবু মোহাম্মদ নাসের আল আমিন জানান, “বিকেল সাড়ে ৪টার পর বিক্ষোভকারীরা সংঘবদ্ধ হয়ে দোকানপাট, হোটেল ও কারখানায় হামলা করে। তারা মহাসড়কে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ উদ্যোগে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয় এবং যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।”
কারখানার শ্রমিকদের দাবি ও উদ্বেগবিক্ষোভে অংশ নেওয়া অনেক শ্রমিক জানিয়েছেন, তারা গাজায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদে অংশ নিয়েছেন। তবে আন্দোলনের মধ্যে হামলা ও অগ্নিসংযোগকে অনেকেই ‘চরমপন্থী’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
ভবিষ্যতের আশঙ্কা ও প্রশাসনের নজরদারি b>আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কারা হামলায় নেতৃত্ব দিয়েছেন, ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে তাদের শনাক্ত করা হচ্ছে। প্রয়োজন হলে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হবে। প্রশাসন জানিয়েছে, কেউ যদি গাজা সংহতির নামে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায়, তা কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না।
“ইসরায়েলি পণ্য বিক্রির প্রতিবাদ করতেই আমরা রাস্তায় নেমেছি, তবে ভাঙচুর বা অগ্নিসংযোগ আন্দোলনের ভাষা নয়।” — একজন পোশাক শ্রমিক
ডিসিকে/ এমজেডএইচ