প্রকাশ : ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:২৩
চোরের গণপিটুনিতে মৃত্যু এবং মামলায় নিরীহদের হয়রানি!
কুখ্যাত চোর ও ১৪ মামলার আসামী বাবু গাজী (বাবু চোর)-এর গণপিটুনি এবং পরবর্তীতে মৃত্যুর ঘটনায় এলাকার নিরীহ মানুষকে মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগে ভুক্তভোগীরা সংবাদ সম্মেলন করে কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা চেয়েছেন। রোববার (৮ ডিসেম্বর ২০২৪) দুপুরে ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসীর পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন গোবিন্দপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের গোয়ালভাওড় বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সভাপতি মঞ্জিল হোসেন বেপারী। উপস্থিত ছিলেন মামলার আসামী হওয়া ভুক্তভোগী ৯টি পরিবারের স্বজনরা।
লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, ফরিদগঞ্জ গোবিন্দপুর দক্ষিণ ইউনিয়নসহ পুরো উপজেলার গণ্ডি ছাড়িয়ে জেলায় আলোচিত নাম বাবু গাজী। সে একাধারে চোর, মাদক ব্যবসায়ী এবং আন্তঃজেলা মোটরসাইকেল চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য। আমাদের জানা মতে, তার বিরুদ্ধে ১৪টি নিয়মিত মামলা রয়েছে। যার মধ্যে চুরি, মাদক, নারী নির্যাতন এবং মোটরসাইকেল চুরির মামলাও রয়েছে। পুরো এলাকা জুড়ে বাবু গাজী এক আতঙ্কের নাম। যতদিন সে জেলে বা এলাকার বাইরে থাকতো, এলাকার মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতো। কিন্তু যখনই সে এলাকায় আসতো, নিত্যদিন চুরির ঘটনা ঘটতো। ফলে সাধারণ মানুষ তার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। গত ১৩ নভেম্বর রাতে গোবিন্দপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের চররাঘররায় গ্রামে বাবু গাজী চুরি করতে গিয়ে গণপিটুনির শিকার হয়। পরে থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্যে হাসপাতালে পাঠায়। পরবর্তীতে সে গত ২৭ নভেম্বর ঢাকায় মৃত্যুবরণ করে । কিন্তু বাবু গাজীর স্ত্রী কুলছুমা তার স্বামীর মৃত্যুর পর তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে থানায় আমাদের ৯টি পরিবারের সদস্যদের নামে মিথ্যা মামলা করে। মামলায় আমাদের স্বজনরা তাকে পিটিয়েছে এবং ওই পিটুনির কারণে তার মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে, যা সত্যি নয়। এই ঘটনার সাথে কোনো ক্রমেই তারা জড়িত নন। তাই মামলা দিয়ে হয়রানি এবং অসৎ উদ্দেশ্য সাধনে তাদের আসামী করা হয়েছে। আমরা এই মামলার সঠিক তদন্ত দাবি করছি। যাতে প্রকৃত সত্য জনসমক্ষে উদঘাটিত হয়। ইতোমধ্যেই এলাকাবাসী এই বিষয়ে দুই শতাধিক লোকের স্বাক্ষরযুক্ত একটি গণস্বাক্ষর কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিয়েছে।
আমাদের বিস্ময় এইখানে যে, পুলিশ নানা প্রভাবে এখনও বিভিন্ন থানায় হয়রানিমূলক মামলা দায়েরে অনেককেই সুযোগ দেয়। এতে নিরাপরাধ ও নিরীহ অনেক মানুষ পুলিশের ভয়ে পালিয়ে আর্থিক ও মানসিক হয়রানির শিকার হয়। দালালরা মধ্যস্থতার নামে পুলিশের কিছু অসাধু সদস্যকে ঘুষ বাণিজ্যে জড়ায়। জুলাই বিপ্লবে পুলিশের ইমেজ সঙ্কট সত্ত্বেও থানায় হয়রানিমূলক মামলা দায়ের হওয়াটা বাঞ্ছনীয় নয়। কুখ্যাত বাবু চোরের গণপিটুনিতে মৃত্যুর ঘটনায় ফরিদগঞ্জ থানায় তার স্ত্রীর দায়ের করা মামলায় তদন্ত করার পূর্বে নয়টি পরিবারকে হয়রানি করার অভিযোগ শোনাটাই বেমানান মনে হচ্ছে। অগত্যা সেসব পরিবারের পক্ষে ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন হয়েছে। আমরা বিষয়টিতে পুলিশ সুপার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল)কে যথাযথ ভূমিকা পালনের অনুরোধ জানাচ্ছি।