প্রকাশ : ০৫ ডিসেম্বর ২০২১, ১৮:৫৯
কাল কচুয়া মুক্ত দিবস
৬ ডিসেম্বর সোমবার কচুয়া মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এ দিনে দখলদার পাকবাহিনিকে কচুয়ার মাটি থেকে বিতাড়িত হয় এবং কচুয়াকে স্বাধীন করা হয়।
৫ ডিসেম্বর দিবাগত গভীর রাত পাকসেনাদের একটি শক্তিশালী সু-সজ্জিত ব্যাটলিয়ান কচুয়া-কালিয়াপাড়া একমাত্র পাকা রাস্তা কচুয়ার অদূরে লুন্তি গ্রাম নামক স্থানে তাদের গাড়ীর বিশাল বহর রেখে কাক ডাকা ভোরে কচুয়া অভিমুখে মার্চ করে স্বল্প সময়ে কচুয়া বাজারে পৌছে বাজারটি লুটপাট করে এবং জালিয়ে পুড়িয়ে দেয়।
একটি প্রুপ উল্লেখিত লুন্তি গ্রামটি ঘেরাও দিয়ে চলচাতুরীর অংশ হিসেবে মর্টারেরসেল নিক্ষেপ করে। গ্রামটি জ্বালিয়ে দেওয়ার পূর্ব প্রস্তুতি নিলেও রাজাকাররা ভিন্ন পথে পালিয়ে যাওয়ার কারনে গ্রামটি নিশ্চিত ক্ষতির হাত থেকে বেঁচে যায়। তাদের আগমনী বার্তায় এ গ্রামের নারী-পুরুষ ও মহিলারা গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র চলে যায়। কারণ ওই গ্রামের খন্দকার বাড়ীর সামনে কচুয়ার একমাত্র পাকা রাস্তার ট্রেন্স কাটাসহ বিভিন্নভাবে ব্যারিকেট তৈরি করে মুক্তিযোদ্ধা সালাহউদ্দিন মানিকসহ যুদ্ধকালীন ডেপুটি কমান্ডার জাবের মিয়া ও এয়াকুব মাষ্টারের নেতৃত্বে হোসেনপুর বাজারের উত্তর পার্শ্বের ব্রীজটি গুড়িয়ে দেয়া হয় বলে জানান। লুন্তি গ্রামের অধিবাসী বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন সিকদার।
তিনি আরো জানান, পরের দিন ৬ ডিসেম্বর হানাদার মুক্ত কচুয়ার দায়িত্ব গ্রহণ করেন যুদ্ধকালীন (এফএফ) কমান্ডার ও পালাখাল গ্রামের কৃতি সন্তান আব্দুর রশিদ পাঠান। লোমহর্ষক কাহিনীর ও ধ্বংস লীলা তাকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে দেয়। এ অবস্থায় তীক্ষè প্রতিভার অধিকারী দুঃসাহসী বিএলএফ কমান্ডার ওয়াহিদুর রহমানের নেতৃত্বে তখনও কচুয়ার মুক্তাঞ্চলে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ চলতে থাকে।
প্রশিক্ষণ পরিচালনা করেন দক্ষ প্রশিক্ষক জাবের মিয়া। কচুয়া মুক্তির পর-কচুয়া মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার আঃ মবিন, ডেপুটি কমান্ডার জাবের মিয়া, মুক্তিযোদ্ধা আবুল মাস্টার, ওসমান গণি পাটওয়ারী, শাহআলম পাটওয়ারী, দেওয়ান সিরাজুল ইসলাম, হেদায়েত উল্যাহ, মরহুম আঃ হালিম, মরহুম একেএম মফিজুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা আবু তাহের আবিদ, আঃ বারী, আঃ রহিম, গাজী ইউসুফ, সালাহউদ্দিন মানিক, মোঃ হাফিজ পাটওয়ারী, মোঃ হানিফ, জুনাব আলী, চারু মিয়া, গাজী শফিক, আঃ মতিন, আনোয়ার সিকদার, খায়ের মাস্টার, মরহুম আলী আহম্মদ, আলী আশ্রাফ, দেলোয়ার হোসেন, শফিকুর রহমান এবং হাজীগঞ্জ, শাহরাস্তি, বরুড়াসহ বিভিন্ন রণাঙ্গনে বেশ কিছু সংখ্যক মুক্তিযোদ্ধা মরনপণ লড়াইয়ে সাহসীকতার পরিচয় দিয়েছিলেন।
দিবসটি পালনে বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সামাজিক সংগঠন আলোর মশাল। সংগঠনের যুগ্ম আহবায়ক মেহেদী হাসান রিয়ান জানান, কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পন, আলোচনা সভা, দোয়া-মিলাদ ও আনন্দ র্যালী।