প্রকাশ : ০৭ জুলাই ২০২১, ০০:০০
লকডাউনে লঞ্চঘাটের শতাধিক শ্রমিকের মানবেতর জীবনযাপন
‘এতো নেতাদের সেবা করি, আমাদের দেখার কেউ নেই!’
বৈশ্বিক মহামারী করোনা মোকেবেলায় দেশব্যাপী লকডাউন চলছে। সড়কে জরুরি প্রয়োজনে ছোটবড় যানবাহন চলাচল করলেও নৌপথে যাত্রীবাহী সকল লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে চাঁদপুর লঞ্চঘাটে কর্মরত প্রায় শতাধিক শ্রমিক কর্মহীন হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
|আরো খবর
শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, দেশের দক্ষিণাঞ্চল, খুলনা, হাতিয়া, ভোলা এবং পার্শ্ববর্তী জেলা ফরিদপুর, শরীয়তপুরসহ প্রায় ৩০টি মতো নৌপথের ট্রানজিট হিসেবে চাঁদপুর লঞ্চঘাট ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ফলে শতাধিক লঞ্চ চাঁদপুর লঞ্চঘাটে ভিড়ায় হাজার হাজার যাত্রীর আনাগোনায় ২৪ ঘন্টাই থাকে সরগরম। শুধু যাত্রী পরিবহনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, রয়েছে যাত্রীর পাশাপাশি বিভিন্ন মালামাল পরিবহনের ব্যবস্থাও। প্রায় শতাধিক শ্রমিক তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকার অবলম্বন হিসেবে বেঁচে নিয়েছেন চাঁদপুর লঞ্চঘাটকে। অর্থাৎ এই খেটে খাওয়া মানুষগুলো দিন মজুর হিসেবে প্রতি দিন যা আয় করেন, তা দিয়ে কোনো রকম পরিবার পরিজন নিয়ে দু মুঠো ভাত খেয়ে বেঁচে থাকার চেষ্টা করেন।
লকডাউনে এই শ্রমিকদের কাজ দীর্ঘ ১ সপ্তাহ বন্ধে তারা এখন অসহায় ও মানবেতর জীবনযাপন করছেন। ক’জন শ্রমিকের সাথে কথা বললে তারা অনেকটা আক্ষেপ করে বলেন, গত বছর দীর্ঘ দিন লকডাউন ছিলো। কেউ ১ পয়সা দিয়ে আমাদের সাহায্য করে নি। আমাদের দেখার কেউ নেই।
তারা সমস্বরে বলেন, ১ দিন কাজ না করলে বা অসুস্থ হয়ে পড়ে থাকলে পরের দিন সংসার চালাতে পারি না। ৭ দিন লকডাউন দিয়ে আবারো ৭দিনের লকডাউন ঘোষণা করা হলো। আমরা ঘাটের শ্রমিকরা বাইচা আছি, না মইরা গেছি কেউ খবর নেয় না। এতো সরকারি সাহায্য আসে আমরা চোখে দেখি না।
তারা আরো বলেন, আমরা লেবার হওয়ার কারণে ঘাট দিয়া কত নেতারা আসা যাওয়া করে, তাদের সেবা করি। এখন কাউকে চোখে দেখি না। নিজেরা মরে গেলে তো সমস্যা নাই। কিন্তু মা, বাবা, ছেলেমেয়ে নিয়া কতটা কষ্টে আছি, তা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না ।