প্রকাশ : ০৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৪:৩১
মহাকাশ থেকে ইন্টারনেট: বাংলাদেশে স্টারলিংকের ঐতিহাসিক যাত্রা শুরু!

ঢাকা, ৯ এপ্রিল ২০২৫: অবশেষে বাংলাদেশে প্রবেশ করলো মহাকাশ থেকে ইন্টারনেট সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান স্টারলিংক। আজ রাজধানী ঢাকার ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে পরীক্ষামূলকভাবে এই অত্যাধুনিক ইন্টারনেট সেবার উদ্বোধন করা হয়েছে। স্পেসএক্স (SpaceX) কোম্পানির এই স্যাটেলাইট-ভিত্তিক ইন্টারনেট পরিষেবা এদিন হোটেলের অনুষ্ঠানে উপস্থিত অংশগ্রহণকারীদের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে স্টারলিংকের প্রতিনিধিরা জানান, এই পরীক্ষামূলক কার্যক্রমের মূল উদ্দেশ্য হলো বাংলাদেশে তাদের ইন্টারনেট সেবার গতি ও স্থিতিশীলতা যাচাই করা। একইসাথে, দেশের ভৌগোলিক এবং আবহাওয়ার প্রেক্ষাপটে এই প্রযুক্তি কতটা কার্যকর, তা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, স্টারলিংকের এই পদক্ষেপ বাংলাদেশের ইন্টারনেট জগতে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে। পরীক্ষামূলক সেবার প্রধান লক্ষ্যগুলো হলো:
* গতি ও স্থিতিশীলতা যাচাই: স্টারলিংকের ইন্টারনেট সেবা ১০০ এমবিপিএস বা তার চেয়ে বেশি গতিতে এবং ২০-৪০ মিলিসেকেন্ডের কম ল্যাটেন্সিতে কতটা স্থিতিশীল থাকে, তা পর্যবেক্ষণ করা।
* কার্যকারিতা মূল্যায়ন: বাংলাদেশের ভূ-প্রকৃতি ও আবহাওয়ায় এই প্রযুক্তি কীভাবে কাজ করে, তা বিস্তারিতভাবে বিশ্লেষণ করা।
* দূরবর্তী অঞ্চলে সম্ভাবনা: শহর ছাড়িয়ে দেশের দুর্গম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইন্টারনেট সংযোগ পৌঁছে দেওয়ার সক্ষমতা পরীক্ষা করা।
পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহারের সুযোগ পাওয়া অংশগ্রহণকারীরা উচ্চগতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট এবং কম ল্যাটেন্সির অভিজ্ঞতা লাভ করছেন। স্টারলিংকের অন্যতম সুবিধা হলো এটি ক্যাবল ছাড়াই যেকোনো স্থানে সংযোগ স্থাপন করতে পারে। এছাড়াও, দুর্যোগ বা জরুরি পরিস্থিতিতেও এই পরিষেবা ১০০% কার্যকর থাকার সম্ভাবনা রয়েছে, যা দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন হতে পারে।
উল্লেখ্য, স্টারলিংক হলো ইলন মাস্কের নেতৃত্বাধীন স্পেসএক্স কোম্পানির একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ। পৃথিবীর কক্ষপথে স্থাপিত কয়েক হাজার ছোট স্যাটেলাইটের মাধ্যমে এই পরিষেবা বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেট সংযোগ স্থাপন করে।
বাংলাদেশে স্টারলিংকের এই পরীক্ষামূলক কার্যক্রম ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইন্টারনেট সংযোগের অভাব পূরণ এবং উচ্চগতির ইন্টারনেট সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে এটি দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে বলে আশা করা যাচ্ছে। এখন দেখার বিষয়, পরীক্ষামূলক এই যাত্রা সফলভাবে শেষ করে স্টারলিংক কবে নাগাদ দেশব্যাপী তাদের সেবা বিস্তৃত করতে সক্ষম হয়।ডিসিকে/এমজেডএইচ