প্রকাশ : ০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০১:৩৪
চলচ্চিত্র অঙ্গনে শোকের ছায়া: চলে গেলেন অভিনয়ের জাদুকর প্রবীর মিত্র
আবেগঘন বিদায়
ঢাকাই চলচ্চিত্রের স্বর্ণযুগের প্রখ্যাত অভিনেতা প্রবীর মিত্র আর আমাদের মাঝে নেই। দীর্ঘ ৮১ বছরের জীবন শেষে রবিবার (৫ জানুয়ারি) রাত ১০টায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর এই খবর নিশ্চিত করেন। প্রবীর মিত্রের মৃত্যুতে বাংলা চলচ্চিত্রে আরেকটি বেদনার অধ্যায় যোগ হলো।
|আরো খবর
১৯৪১ সালের ১৮ আগস্ট চাঁদপুরের নতুন বাজারে জন্মগ্রহণ করেন প্রবীর মিত্র। ছোটবেলাতেই ঢাকা শহরে চলে আসেন এবং এখানেই বেড়ে ওঠেন। সেন্ট গ্রেগরি ও পোগজ স্কুলে শিক্ষাজীবন কাটানোর পর জগন্নাথ কলেজ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন। তবে তাঁর স্বপ্ন ছিল অভিনয়। সেই স্বপ্ন পূরণের পথ ধরেই বাংলা চলচ্চিত্রে তাঁর আবির্ভাব।
অভিনয়ের স্বর্ণযুগের এক অবিচ্ছেদ্য অংশপ্রবীর মিত্রের ক্যারিয়ার শুরু হয় ১৯৭০-এর দশকে। প্রথমদিকে নায়ক চরিত্রে অভিনয় করলেও খুব দ্রুতই চরিত্রাভিনেতা হিসেবে জনপ্রিয়তা লাভ করেন। তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে: ‘তিতাস একটি নদীর নাম,’ ‘মধুমিতা,’ ‘অঙ্গার,’ ‘ফকির মজনু শাহ,’ ‘অলংকার,’ ‘জালিয়াত,’ ও ‘প্রতিজ্ঞা।’ চার শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করে তিনি অমর হয়ে আছেন দর্শকের হৃদয়ে।
শেষ সময়ে লড়াই জীবনধারণেগত ২২ ডিসেম্বর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয় প্রবীর মিত্রকে। ব্লাড লস, প্লাটিলেট কমে যাওয়া এবং অক্সিজেন সংকটের কারণে তাঁকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। দীর্ঘ ১২ দিনের লড়াইয়ের পর ৫ জানুয়ারি পৃথিবীকে বিদায় জানান এই কিংবদন্তি।
চলচ্চিত্র অঙ্গনে শোকের ছায়াঅভিনেত্রীর অঞ্জনার মৃত্যুর একদিন পরই প্রবীর মিত্রের প্রয়াণে চলচ্চিত্রাঙ্গন যেন আরও শোকাহত। প্রবীর মিত্রের মরদেহ শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য সোমবার (৬ জানুয়ারি) এফডিসিতে নেওয়া হবে। তাঁর মৃত্যুতে অভিনেতা-অভিনেত্রী থেকে শুরু করে কলাকুশলীরা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
একজন অমর শিল্পীপ্রবীর মিত্র শুধু একজন অভিনেতা নন, ছিলেন বাংলা চলচ্চিত্রের একটি অধ্যায়। তাঁর অভিনয়ের সরলতা, আন্তরিকতা ও দক্ষতায় তিনি দর্শকের হৃদয়ে স্থায়ী জায়গা করে নিয়েছেন। তিনি চলে গেলেও তাঁর অভিনীত চরিত্রগুলো এবং চলচ্চিত্রে তাঁর অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
শেষ কথা:প্রবীর মিত্রের মতো বহুমুখী প্রতিভাবান অভিনেতার বিদায় শুধু চলচ্চিত্র জগতের জন্য নয়, গোটা সাংস্কৃতিক অঙ্গনের জন্যই এক অপূরণীয় ক্ষতি। তাঁর আত্মার চিরশান্তি কামনা করি।